উত্তরবঙ্গে ট্রাক-লরি ধর্মঘট বাড়ল আরও একদিন

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ মে ২০১৭, ১৩:০১ | প্রকাশিত : ২২ মে ২০১৭, ১২:৫৫

কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে সড়ক-মহাসড়কে পুলিশের ‘হয়রানি’ বন্ধসহ সাত দফা দাবিতে উত্তরবঙ্গে ডাকা ট্রাক-লরি ধর্মঘট আরও এক দিন বাড়ানো হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ছয়টা থেকে উত্তরবঙ্গে এই ধর্মঘট শুরু হয়।

ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ অধিকার আদায় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান সোমবার সকালে জানান, চলমান এই ধর্মঘট আরও ২০ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সে হিসেবে বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত উত্তরের ১৬ জেলায় ডাকা তাদের ধর্মঘট চলবে।

কাগজপত্র ও ড্রাইভিং চেকিংয়ের নামে সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ সাত দফা দাবিতে রবিবার সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ ধর্মঘট ডাকা হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো- কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে মহাসড়কে ‘পুলিশের হয়রানি’ বন্ধ, অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে ‘হয়রানি’বন্ধ, নতুন ড্রাইভিং ও হেভি লাইসেন্স প্রদানের শর্ত সহজকরণ, যান চলাচল বিষয়ক নতুন খসড়া আইন প্রত্যাহার, পথেঘাটে ‘চাঁদাবাজি’বন্ধ এবং পণ্যবাহনের বাম্পার খোলার সরকারি আদেশ প্রত্যাহার।

সোমবার সকালে বগুড়ার বেশ কয়েকটি স্পটে গিয়ে ট্রাক, ট্যাংকলরি, কভার্ডভ্যান ও পিকআপ চলাচল বন্ধ অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে। তবে বাসসহ যাত্রীবাহী যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধের কারণে বগুড়াসহ উত্তর জনপদ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বগুড়ার প্রান্তিক সবজি চাষিরা। তারা তাদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ট্রাক ধর্মঘটের কারণে বাইরের পাইকাররা সবজি না কেনায় মাঠে অথবা তোলার পরে বাজারেই এসব সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মহাস্থান বাজারে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার সবজি নষ্ট হচ্ছে। খুচরা গ্রাহকরা স্বল্প পরিমাণ সবজি কিনলেও ট্রাক না থাকায় ঢাকার পাইকাররা সবজি কিনছেন না। এতে প্রান্তিক চাষিরা বাজার থেকে সবজি ফেতর নিয়ে যাচ্ছেন।

উত্তরাঞ্চলের অন্যতম সবজি বাজার মহাস্থানগড়। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সবজি চলে যায়। দেশের সবজি চাহিদার বড় একটা চহিদা এই বাজার থেকেই পুরণ হয়।

ট্রাক ধর্মঘটের কারণে বর্তমানে মহাস্থানবাজারে প্রতিকেজি ঢেঁড়স এক টাকা করে বিক্রি করছেন কৃষকরা। এছাড়া ডাটার কেজি ৫০ পয়সা, বেগুন ৮ টাকা, করলা ১০, বরবটি বিক্রি হচ্ছে তিন টাকা কেজি দরে। অপরদিকে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে না অনেকে বাড়িতে ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন।

মহাস্থানের সংসারদীঘি এলাকার সবজি চাষি রায়হানুল হক বলেন, মহাস্থানগড়ের সবজি বাজারের মূল ক্রেতা কুষ্টিয়া, যশোর, ঢাকা, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা। তারা এ বাজার থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের সবজি পাইকারি দরে কেনেন। বর্তমানে ট্রাক ধর্মঘটের ফলে পাইকাররা তাদের সবজি কিনছেন না। ফলে তারা সবজি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

ঢেঁড়স নিয়ে এসেছেন চন্ডিহারা এলাকার কৃষক আজগর আলী। ঢাকাটাইমসকে তিনি জানান, ‘প্রতিদিন জমি থাকি ৫ মণ করে ঢেঁড়স তুলি। প্রতিদিন না তুললি জমিতেই এগুলো নষ্ট হয়। ট্রাক না চলায় ঢেঁড়স তুলতি পারছি না। বাজারে কেনার কেউ না। তাই লস গুনবার লাগছি।’

মহাস্থান সবজি বাজার ইজারাদার আজমল হাজী জানান, ট্রাক ধর্মঘটের ফলে এখানকার সাধারণ কৃষক চরম আর্থিক লোকসানের শিকার হচ্ছে। এই ধর্মঘট চলমান থাকলে উত্তরাঞ্চলের এই এলাকার সবজি চাষিরা পথে বসে যাবে।

ঢাকাটাইমস/২২মে/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :