স্বাধীনতাবিরোধী ত্রিদিব রায়ের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ মে ২০১৭, ১৫:০৫ | প্রকাশিত : ২২ মে ২০১৭, ১৪:৫০
ছবিতে মাঝখানে ত্রিদিব

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তানকে সহায়তাকারী প্রয়াত চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়ের নাম পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলের সব স্থাপনা থেকে মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পার্বত্য চট্রগ্রামের বাসিন্দা বদিউজ্জামান সওদাগর ও হেলাল উদ্দিনের এক রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়া হয়।

সোমবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। রবিবার এই বেঞ্চে ত্রিদিব রায়ের বিষয়ে আবেদনটি হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানির করেন আইনজীবী শরীফ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

স্বাধীনতাবিরোধী এই নেতার নামে পার্বত্য এলাকায় এখনও নানা স্থাপনা রয়ে গেছে। ত্রিদিবের ছেলে দেবাশীষ রায় বর্তমানে চাকমা রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ত্রিদিব রায় বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা জনগোষ্ঠীর ৫০তম রাজা ছিলেন। ১৯৫৩ সালের ২ মে থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে মে মাসে তিনি রিজার্ভ বাজার এবং তবলছড়ি বাজারে জনসভায় ভাষণ দেন। এসব জনসভায় তিনি পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। সে বছর মুক্তিবাহিনীর সম্ভাব্য হামলা এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাল্টা হামলার আশঙ্কায় ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল বিজু উৎসব অনুষ্ঠিত হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে পাকিস্তানের পরাজয় যখন নিশ্চিত প্রায়, তখন বাংলাদেশ ছেড়ে পাকিস্তান চলে যান ত্রিদিব। পাকিস্তান সরকার তাকে আজীবন মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।

১৯৭২ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের যোগদানের আবেদনের বিরোধিতা করার জন্য প্রেরিত প্রতিনিধি দলে ত্রিদিব রায় প্রধান ছিলেন। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব প্রতিনিধিদলের প্রধান ছিলেন ত্রিদিব রায়ের মা বিনিতা রায়। অধিবেশনের পূর্বে নিউইয়র্কে তাদের দুইজনের সাক্ষাত হয়।

১৯৭০ এর দশকে জুলফিকার আলী ভুট্টোর মন্ত্রিসভায় ত্রিদিব রায় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভুট্টো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আবেদন করেছিলেন। তবে ত্রিদিব রায় তা ফিরিয়ে দেন। কারণ, পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী একজন মুসলিম শুধু রাষ্ট্রপতি হতে পারবে। তিনি ইসলাম গ্রহণে ইচ্ছুক ছিলেন না।

১৯৮১ সালে ত্রিদিব রায় আর্জেন্টিনায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। একইসাথে তিনি চিলি, ইকুয়েডর, পেরু ও উরুগুয়ের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৪ সালে তিনি পাকিস্তান ফিরে আসেন। ১৯৯৫ সালে তাকে শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানের হাই কমিশনার নিয়োগ করা হয়। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করার পর তিনি চূড়ান্তভাবে পাকিস্তান ফিরে আসেন। এরপর থেকে তিনি এম্বেসেডর এট লার্জ‌ ছিলেন।

ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একজন প্রধান ব্যক্তি ছিলেন। ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান বুড্ডিস্ট সোসাইটির প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২২ মে/এমএবি/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আদালত এর সর্বশেষ

সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমারকে কারাগারে পাঠালেন আদালত

৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম

বিচারপতির আসনে ছাদ বেয়ে পানি, বিচারকাজ বন্ধ ১৮ মিনিট

আগাম জামিন পেলেন অ্যাডভোকেট যুথিসহ চার আইনজীবী

জামিন নিতে এসে রায় শুনে পালিয়ে গেলেন হলমার্ক কেলেঙ্কারির আসামি

তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদীকে গুলশানের বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ

হলমার্ক কেলেঙ্কারি: তানভীর ও তার স্ত্রীসহ নয়জনের যাবজ্জীবন

সুপ্রিম কোর্ট বারে মারামারি: নাহিদ সুলতানা যুথীর জামিন শুনতে নতুন বেঞ্চ নির্ধারণ

পি কে হালদারের ১৩ সহযোগীর সাজা বাড়ানোর আবেদন দুদকের

ড. ইউনূসের সাজা ও দণ্ড স্থগিতের আদেশ হাইকোর্টে বাতিল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :