আপনের সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ, রেইনট্রির মদের ব্যাখ্যা আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ মে ২০১৭, ০৯:২৬ | প্রকাশিত : ২৩ মে ২০১৭, ০৮:৫৪

আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণের ব্যাখ্যা দিতে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম। এছাড়া বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার পর হোটেলটি তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা ১০ বোতল মদের ব্যাখ্যা দিতে যাবেন হোটেলটির মালিক শাহ মোহাম্মদ আদনান হারুন।

মঙ্গলবার কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাদের।

গত ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই তরুণী। ঘটনার ৪০ দিন পর গত ৬ মে বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন এক তরুণী।

মামলার আসামিরা হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তাঁর দেহরক্ষী রহমত আলী। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এরপর গত ১৪ ও ১৫ মে রাজধানীতে আপন জুয়েলার্সের ছয়টি বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ এবং ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করে শুল্প গোয়েন্দারা। এর মধ্যে প্রথম দিনের অভিযানে চারটি বিক্রয়কেন্দ্রে জব্দ করা হয় ২৮৬ কেজি স্বর্ণালঙ্কার এবং ৬১ গ্রাম হীরা। আর দ্বিতীয় দিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় ২১২ কেজি স্বর্ণালঙ্কার। সব মিলিয়ে জব্দ করা স্বর্ণের পরিমাণ ১৩ মণ ৩৫ কেজি।

এসব স্বর্ণের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গত ১৭ মে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে যান আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম। সেদিন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে হাজির হলেও আটক হওয়া সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরার ব্যাপারে কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি। এরপর তাকে আবারও তলব করা হয়।

আপন জুয়েলার্সের মালিক ছাড়াও আজ তলব করা হয়েছে রেইন ট্রি হোটেলের মালিক শাহ মোহাম্মদ আদনান হারুনকে। শুল্ক গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট নিবন্ধন হলেও কোনো অর্থ পরিশোধ না করে আট লাখ ১৫ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে রেইন ট্রি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া হোটেলটি থেকে ১০ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও তাদের মদ বিক্রির অনুমোদন নেই।

গত ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রেইনট্রি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদনান হারুনকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে হাজির হয়ে হোটেলে পাওয়া মদের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হলেও শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে তিনি সেদিন হাজির হননি। পরে তার করা সময় আবেদন বিবেচনা করে ২৩ মে হাজির থাকতে বলা হয়।

শুল্ক গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ ঠেকাতে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করেও ব্যর্থ হন আদনান হারুন। এজন্য হাজিরার আগের দিন শুল্ক গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। তবে আবেদনের পর বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের নোটিশ এক মাসের জন্য স্থগিত করে দেন। আবার এই নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, নেই বিষয়ে রুলও জারি করা হয়।

হাইকোর্ট বেঞ্চের এই আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি নিয়ে যায় চেম্বার বিচারপতির কাছে। আর শুনানি শেষে তিনি হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেন।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত আশা করছি ওনারা আজ শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে আসবেন। এবং ওনাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেবেন। ওনারা যদি না আসেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আমরা আশবাদী ওনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই অধিদপ্তরে আসবেন।’

ঢাকাটাইমস/২২মে/এএ/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :