তীব্র গরম, নেই বিদ্যুৎ, শ্রেণিকক্ষে টিকে থাকা দায়

ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর (মাদারীপুর) থেকে
| আপডেট : ২৩ মে ২০১৭, ১২:৫৮ | প্রকাশিত : ২৩ মে ২০১৭, ১২:১৯

একদিকে গরমের তীব্রতা, অন্যদিকে বিদ্যুৎ ঠিকমত না থাকা। এই দুইয়ের সমস্যায় জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মাদারীপুরের শিবচরে। গরমের তীব্রতায় এবং বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রেণিকক্ষে বসে ক্লাস করা অসহনীয় হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীদের। ফলে বিদ্যালয়গুলোতে উপস্থিতির পরিমাণও কিছুটা কমে গেছে।

এদিকে প্রায় নিয়ম করেই সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা অবধি বিদ্যুৎ না থাকায় যেমন লেখাপড়ার বিঘ্ন ঘটছে আবার মধ্যরাতের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় রাতের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটছে সাধারণ মানুষের। ফলে শারীরিকভাবেও কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ছে কেউ কেউ।

তবে অসুস্থ ব্যক্তি, বৃদ্ধ এবং শিশুদের অবস্থা আরও শোচনীয় বলে জানা গেছে। শিশুরা ডায়েরিয়া ও জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

উপজেলা শহরের বাইরে বেশ কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎ না থাকায় এবং গরমের তীব্রতায় শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো স্কুল পূর্ণ ক্লাসের পরিবর্তে অর্ধদিবস ক্লাস নিচ্ছে বিদ্যুৎ না থাকা এবং গরমের কারণে।

উৎরাইল এমএল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, প্রচণ্ড গরম। স্কুলের আশেপাশে তেমন বড় গাছও নেই। আর এতে গরম আরও বেশি লাগে। বিদ্যুৎ থাকে না ক্লাস চলাকালীন বেশিরভাগ সময়। শ্রেণিকক্ষে বসে থাকা অনেক কষ্টের হয়ে গেছে।

শিক্ষকদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দুই দিকে কয়েক কিলোমিটার চাষযোগ্য জমি। তেমন কোনো বড় গাছ নেই। আর প্রচণ্ড গরম, সেই সাথে বিদ্যুৎ থাকে না। শ্রেণিকক্ষে ভীষণ কষ্ট হয় ক্লাস নিতে। এ কারণে অর্ধদিবস ক্লাস নেয়া হচ্ছে।

উৎরাইল এমএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশ্রাফুল আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তীব্র গরমের মাঝে বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে কষ্ট হয় খুব। তাছাড়া আমাদের প্রতিষ্ঠানটি প্রায় খোলা জায়গায় হওয়ায় গরমের মাত্রা একটু বেশি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলায় যেখানে দিনে বিদ্যুৎ অফিসের প্রয়োজন ৩৮ মেঘা ওয়াট। সেখানে বিদ্যুৎ পাচ্ছে ১৬ মেঘা ওয়াট। আর রাতে বিদ্যুৎ অফিসের প্রয়োজন ৫৫ মেঘা ওয়াট সেখানে বিদ্যুৎ পাচ্ছে ১৮ মেঘা ওয়াট। জেলা রয়েছে ছয়টি সাব স্টেশন। সেখানে প্রতিটি সাব স্টেশনে পাচ্ছে তিন মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ। যে কারণে মাদারীপুর জেলায় লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ ব্যপারে কয়েকদিন যাবত গ্রাহকদের অবগতির জন্য মাইকিং করে বিদ্যুৎ সমস্যার কথা জানিয়েও দিচ্ছে বিদ্যুৎ অফিস।

মাদারীপুর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির ডি.জি.এম. মো. আলতাফ হোসেন ঢাকাটাইমসকে জানান, জাতীয় গ্রিডের আশুগঞ্জ ২৩০ কেভি মেঘনা রিভারক্রসিং টাওয়ার ভেঙে যায়; আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও একটি টাওয়ার। এতে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে বিকল্প হিসেবে ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়। তা থেকেই আমরা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ পাচ্ছি। তবে নতুন একটি গ্রিড থেকে আমাদের বিদ্যুৎ দেয়া শুরু করেছে। যদি সেখানে কোনো সমস্যা না হয় তাহলে লোডশেডিং দুই এক দিনের মধ্যেই কমে আসবে বলে আশা রাখি।

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :