বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে: রিজভী
ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে এমন দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ নিয়ে সবসময় ডাহা মিথ্যা কথা বলে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের তথ্য নিয়ে তারা জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে শুধু বিপর্যয় বললে ভুল হবে মানুষের জীবন বিপন্ন হতে চলছে।’
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘গরমজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে। গ্রামাঞ্চল ও মফস্বল শহরে লোডশেডিং হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহীর মতো বড় বড় শহর-নগরেও লোডশেডিং হচ্ছে দফায় দফায়।’
বিএপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংকটে সারা দেশের মানুষের মধ্যে যখন ত্রাহি দশা, তখন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ওয়েবসাইট দিচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। পিডিবির ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, গতকাল ও এর আগের কয়েকদিন দেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন ছিল, উৎপাদিত হয়েছে তার চেয়ে বেশি।’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনসংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়- ২১ মে বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল আট হাজার ৮০০ মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল আট হাজার ৮৩০ মেগাওয়াট। ২০ মে চাহিদা ছিল আট হাজার ৭০০ মেগাওয়াট; উৎপাদন আট হাজার ৮১৯ মেগাওয়াট। ১৯ মে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল আট হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল আট হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। অর্থাৎ দেশের কোথাও কোনো লোডশেডিং নেই বরং চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি। অন্যদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এ মুহূর্তে আমরা দিতে পারব না। এটা হতে আমাদের আরও ৩-৪ বছর লেগে যাবে। আরইবির কর্তকর্তারা বলেছেন, রাজধানীর চাহিদা মেটাতে গিয়ে তাদের সরবরাহ অনেকাংশে কাটছাঁট করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।’
রিজভী বলেন, ‘এ কারণে ঢাকার বাইরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোতে গড়ে ৬-৭ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়েছে। কোথাও কোথাও আরও বেশি। ঢাকাকে আলোকিত রাখতে রাতে বেশিরভাগ গ্রামকে রাখা হচ্ছে অন্ধকারে।’
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলে জনগণের পকেট থেকে টাকা নিয়ে জনগণকে দুর্বিষহ লোডশেডিং উপহার দেয়া হয়েছে এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘জৈষ্ঠ্যের খরতাপে মানুষের যখন স্বস্তি দরকার তখন এই দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং সরকারের উন্নয়নের জলজ্যান্ত উদাহরণ।’
দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির ঘটনা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘পুলিশি তল্লাশির ঘটনা দেশ-বিদেশে মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সর্বত্র সরকারের প্রতি চারদিক থেকে ধিক্কার উঠেছে। কার্যালয়ে আকস্মিকভাবে পুলিশি হানা সরকারের একটি অশুভ নীলনকশারই অংশ।’
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তল্লাশির প্রতিবাদে বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা হতে যাচ্ছে। জনসভা উপলক্ষে বিএনপি ঢাকা মহানগরি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে অনুমতির জন্য আমরা গণপূর্ত বিভাগ ও পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছি। আজকের মধ্যেই তারা অনুমতি দেবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
(ঢাকাটাইমস/২৩মে/বিইউ/জেবি)