পুরস্কৃত হলেন যুবককে ‘মানবঢাল’ বানানো সেনা
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের ফারুক আহমেদ ডার নামের এক যুবককে জিপ গাড়ির সামনে বেঁধে মানবঢাল বানানো সেনা কর্মকর্তা মেজর গগৈকে প্রশংসাপত্র দিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
সংবাদসংস্থা পিটিআই জানায়, ‘কাউন্টার-ইন্সারজেন্সি' অপারেশনগুলোতে মেজর গগৈয়ের ধারাবাহিক অবদানের জন্য তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মানব ঢাল বানিয়ে সারাদিন গাড়ির সামনে বেঁধে ঘোরানোর ওই ছবি ভাইরাল হয়ে গেলে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। গত ৯ এপ্রিল কাশ্মিরের লোকসভা আসনের উপনির্বাচনের দিন এই ঘটনা ঘটে।
সেনাবাহিনীর পক্ষে বলা হয়েছিল, ভোটের দিন স্থানীয় যুবকরা যাতে সেনা জিপের দিকে পাথর ছুঁড়তে না পারে, সেজন্যই ডারকে জিপের সামনে বসিয়ে রাখা হয়েছিল।
সেনাবাহিনীর ৫৩ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ব্যাটালিয়নের ওই সিদ্ধান্তর বিরুদ্ধে জম্মু-কাশ্মির পুলিশ যেমন আলাদা মামলা করে, তেমনই সেনাবাহিনীও তাদের নিজস্ব তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্ত চলাকালীন ওই সেনা কর্মকর্তাকে সেনাপ্রধানের পুরস্কৃত করার কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি।
ওই ঘটনার পর এক সাক্ষাতকারে কাশ্মিরি যুবক, ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, তাকে সকাল ১১টা নাগাদ আটক করা হয়। সারাদিন জিপের সামনে বেঁধে রাখার পরে সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ছাড়া হয়।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এর লোকেরা বলেছিল যে আমি নাকি পাথর ছুঁড়েছি। অথচ জীবনে একটা পাথরও ছুঁড়িনি আমি। ভোট দিতে বেরিয়েছিলাম। ভোটার পরিচয়পত্র, আধার কার্ড সব দেখিয়েছিলাম, তবুও তারা মানতে চায়নি।’
মেজর গগৈকে সেনাপ্রধানের প্রশংসাপত্র দেওয়ার খবর প্রচারিত হতেই তা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত আসছে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। এর মধ্যে বিতর্ক আরও বাড়িয়েছেন বিজেপির সংসদ সদস্য ও অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। তিনি মন্তব্য করেন, ‘পাথর ছুঁড়ছিল যারা, সেরকম কাউকে জিপের সামনে বেঁধে না রেখে অরুন্ধতী রায়কে বেঁধে রাখা হোক।’
অরুন্ধতী প্রখ্যাত লেখিকা ও ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে অত্যন্ত সরব। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছে, মানবঢাল হিসাবে কোনও ব্যক্তিকে ব্যবহার করা ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ।
(ঢাকাটাইমস/২৩মে/জেএস)