এইচএসসির খাতা কেলেঙ্কারি, পরীক্ষক ওএসডি

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ মে ২০১৭, ১৮:০২ | প্রকাশিত : ২৩ মে ২০১৭, ১৮:০০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রী হল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ১০০ অমূল্যায়িত খাতা (উত্তরপত্র) উদ্ধারের ঘটনায় খাতাগুলোর পরীক্ষককে ওএসডি করা হয়েছে। ওই পরীক্ষকের নাম ড. আবুল কালাম। তিনি রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক।

এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ এই কমিটি গঠন করে দেয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তরুণ কুমার সরকার।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমানকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মফিজুদ্দিন মোল্লা ও শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আকবর হোসেন।

তরুণ কুমার সরকার বলেন, খাতাগুলোর পরীক্ষক ড. আবুল কালামকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত নিজ বেতনে ও বেতনক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ-১ এর সিনিয়র সহকারী সচিব আবু কায়সার খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেয়া হয়।

এছাড়া শাহমখদুম কলেজের প্রভাষক মাসুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বোর্ড অবহিত করেছে বলেও জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তরুণ কুমার সরকার।

সোমবার সন্ধ্যায় রাবির মুন্নুজান হলের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় পড়ে থাকা একটি ব্যাগ থেকে ১০০ উত্তরপত্র উদ্ধার করে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। এই খাতার কোড নম্বর ২৬৮। ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষার খাতাগুলো মূল্যায়নের জন্য রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. আবুল কালামকে দিয়েছিল শিক্ষাবোর্ড।

বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, ড. কালাম খাতাগুলো নিজে না দেখে শাহমখুদম কলেজের প্রভাষক মাসুদুল হাসানকে দিয়েছিলেন। মাসুদুল হাসান একটি কোচিং সেন্টারের রাবি শাখার পরিচালক। তিনি তার কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও রাবির বাংলা বিভাগের এক ছাত্রকে খাতাগুলো পরীক্ষণের জন্য দেন। কিন্তু ওই ছাত্রও নিজে খাতাগুলো না দেখে তার প্রেমিকাকে দেন। ওই মেয়েটি রাবির মন্নুজান হলে থাকেন। সেখান থেকেই খাতাগুলো জব্দ করা হয়।

জানতে চাইলে মন্নুজান হলের প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর জিন্নাত ফেরদৌসী বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, হল থেকেই বোর্ডে খাতার খবর গেছে। কিন্তু একটা খাতাও দেখা হয়েছিল না। পরীক্ষা কেন্দ্রে জমা নেয়ার পর যেভাবে থাকে, খাতাগুলো সেভাবেই ছিল। আর খাতাগুলো ছিল বারান্দার গণরুমে, যেখানে অনেক ছাত্রীর জিনিসপত্র থাকে। তাই বুঝতে পারিনি খাতাগুলো কার কাছে এসেছিল। তবে আমরা কয়েকজন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি জানতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু মেয়েরা কান্নাকাটি শুরু করে অস্বীকার করেছে।’

প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘একজন মেয়ের জন্য আমরা সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি না। তাই আমরা বোর্ডকে বলেছি শেকড়ে হাত দিতে। মূল পরীক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেই জানা যাবে, কয় হাত বদল হয়ে খাতা আমাদের হলে এসেছে। এরই মধ্যে বোর্ড ড. কালাম ও মাসুদুল হাসানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বোর্ড হয়তো জানতেও পেরেছে। কিন্তু আমাদের এখনো কিছু জানায়নি। খাতা কেলেঙ্কারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে যে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/আরআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :