আশ্রয় দিতে দুয়ার খুলে অপেক্ষা ম্যানচেস্টারবাসীর
ম্যানচেস্টার এরিনাতে হামলার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল কনসার্ট দেখতে আসা ২১ হাজার দর্শকের মধ্যে। বিশেষ করে দূর থেকে আসা দর্শকরা পড়ে বিপাকে। সড়ক-মেট্রো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকা পড়ে তারা।
তাদের পাশে দাঁড়ায় ম্যাঞ্চেস্টারবাসী। ফেসবুক-টু্ইটারসহ সামাজিক মাধ্যমে সহমর্মিতা জানিয়ে তারা জানায় ম্যানচেস্টারবাসী তাদের পাশে রয়েছে। তারা এসব আটকা পড়া মানুষকে আশ্রয় দিতে নিজের বেডরুম খুলে দেয়। তারা দরজা খুলে অপেক্ষা করেন যদি কেউ আশ্রয় নেয় রাতটি কাটানোর জন্য।
স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। মার্কিন গায়িকা আরিয়ান গ্রান্দে ম্যানচেস্টার এরিনাতে তার কনসার্ট কেবল শেষ করেছেন। দর্শক উঠে বের হতে শুরু করেছেন। ঠিক তখনই বিস্ফোরণ। এতে প্রাণ হারায় ২২ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ৫৯ জন, নিখোঁজ ১২ জন।
হান্নাহ আল-অথম্যান নামে এক নারী টুইটারে লিখেন, ‘অনেকেই আতঙ্কিত। ম্যানচেস্টার থেকে বের হবার কোনো ট্রেন নেই। ফলে অনেকেই বাড়ি যেতে পারছেন না।’ জেসি নামে আরেক নারী লেখেন, ‘আমাদের একটি দুই বেডের রুম আছে। দুটি সোফাও আছে। কারও থাকার প্রয়োজন হলে চলে আসবেন। এরিনা থেকে আমার বাড়ি ৫ মিনিটের ট্যাক্সি দূরত্বে।’
রুম ফর ম্যানচেস্টার হ্যাশট্যাগে একটি ট্রেন্ডও শুরু হয়ে যায় টুইটারে। নিক কিউ নামে একজন এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে বলেন, ‘আমার বাসা এরিনা থেকে ৫ মিনিটের দূরত্বে। কারও থাকার প্রয়োজন কিংবা খাবার ও মোবাইল চার্জের প্রয়োজনে চলে আসুন।’
অন্যান্য মেসেজে দেখা গেছে, ট্যাক্সিচালক ও ম্যানচেস্টারের বাসিন্দারাও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। যারা শহর ছাড়তে চান তাদের বিনামূল্যে পৌঁছে দেওয়ার অফার দেওয়া হয়েছে। আর শহরে আটকা পড়াদের বিনামূল্যে বেডরুম ও সোফায় থাকার সুযোগ দিয়ে চলছে #রুমফরম্যানচেস্টার হ্যাশট্যাগটি।
#রুমফরম্যানচেস্টার হ্যাশট্যাগে ড্যানি হাচ নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আমি ম্যানচেস্টার শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ১০ মিনিট দূরত্বে আছি। যেকোনো জায়গা থেকে এবং যেকোনো জায়গায় আমি সাহায্যপ্রার্থীদের নিয়ে যেতে পারব। কারও সহায়তার প্রয়োজন পড়লে শুধু আমাকে জানালেই হবে।’
এ ছাড়া বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাসিমাখা মুখের কিশোরদের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। আর তার সঙ্গে হ্যাশট্যাগে বলা হয়েছে, #প্রেফরম্যানচেস্টার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলো উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, প্রিমিয়ার ইন এবং ম্যানচেস্টারের অন্য হোটেলগুলোও ভুক্তভোগীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তাদের দুয়ার খুলে দিয়েছে। হলিডে ইনের আশ্রয়ে ৬০ শিশু থাকার খবরও দেওয়া হয়। বিনামূল্যে ট্যাক্সিসেবারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দ্য ভেন্যু ম্যানচেস্টারের পক্ষ থেকে।
ঢাকাটাইমস/২৩ম/মোআ