রাস্তার পাশের শরবতে স্বস্তি খোঁজার চেষ্টায় উপেক্ষা স্বাস্থ্যঝুঁকি

তাজরিন জাহান তারিন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ মে ২০১৭, ১৪:০১ | প্রকাশিত : ২৪ মে ২০১৭, ১১:৩৪

কদিনের তীব্র গরমে ঘর থেকে বের হওয়াই দায়।বের হওয়ার পরে শরীরকে একটু স্বস্তি দিতে যখন এদিক সেদিক তাকান।তখনই হয়ত চোখ যায় রাস্তার পাশের খোলা শরবতের দিকে।আম, পেঁপে, আনারস, তরমুজের শরবত বা আখের রস খেয়ে হয়ত প্রাণ জুড়িয়ে নিলেন। এতে সাময়িক স্বস্তি হয়ত মিলল, কিন্তু স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা কি বিবেচনায় ছিল?

ধুলাবালি মাখা পরিবেশ,একই পাত্র বারবার ব্যবহার করা, নোংরা পানি দিয়ে গ্লাস ধোয়া এক সাধারণ চিত্র। এর বাইরে শরবতকে ঠান্ডা করতে যে বরফ ব্যবহার হয়, সেটা নিয়েও আছে প্রশ্ন। ওয়াসার সরবরাহ করা যে পানি ফুটিয়ে ছাড়া পান করা যায় না, সেই পানি দিয়েই তৈরি করা হয় এই বরফ। আর তাই এই শরবতগুলো জীবাণু ছড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা।

মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ,পথচারী এবং শিক্ষার্থীরাই সড়কের ধারে বিক্রি হওয়া এসব শরবতের ক্রেতা। বিক্রেতারাও পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন না। ১০ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি গ্লাস। গরম বাড়ার সাথে সাথে বিক্রেতাদের বিক্রিও বেড়ে গেছে অনেক।

তেমনই এক বিক্রেতা রনি। তিনি আখের শরবত বিক্রি করেন চার বছর ধরে। আগে রিকশা চালাতেন। তবে পরিশ্রম কম এবং লাভ বেশি হওায়ার তিনি এই ব্যবসায় নেমেছেন। গরম বাড়ায় তার সব খরচ বাড় দিয়ে দৈনিক আয় দুই হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

আখের শরবতকে ঠান্ডা করতে বরফ কোত্থেকে আনেন রনি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারখানা আছে’। কারখানার নাম কী?- জানতে চাইলে রনি নিশ্চুপ।

একেকজনকে আখের শরবত দেয়ার পর গ্লাসটা রনি ধুয়ে দেন। তবে যে পানিতে এই গ্লাস ধোয়া হচ্ছে, সেটির রঙ পাল্টে গেলে এর আগেও বগুবার গ্লাস ধোয়ার জন্য।

আরেক শরবত বিক্রেতা জয়নুল। তিনিও আজিমপুর এলাকায় শরবত বিক্রি করেন। তিন বছর ধরে তিনি এ ব্যবসায় আছেন। গরম যত বেশি, তার আয়ও তত বেশি। জানালেন, প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে ঘরে ফেরেন তিনি। জানান, কারওরান বাজার থেকে ফল আনেন এবং নিউমার্কেট থেকে কেনেন বরফ।

জয়নুলের দাবি, তিনি গ্লাস বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে দেন। কিন্তু ঢাকাটাইম্‌সের সাথে কথা বলার সময়ই দেখা মিলল তিনি একটি খোলা বালতি থেকে বরফ তুলে তা শরবতে মেশাচ্ছেন। যখন এ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হল তিনি রেগে গিয়ে ছবি তুলতে বাধা দেন।

জয়নুলের মত চিত্র সব জায়গায়। এদিকে ক্রেতারাও নির্বিকার। ‘স্বস্তি পাই তাই খাই’ এই চিন্তায় বিশ্বাসী তারা। কথা হয় ভ্যান চালক রহিমের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘যেই না গরম পড়ছে, শরবতটা খাইলে একটু শান্তি লাগে।’

রাস্তার পাশের এসব শরবত খাওয়া কতটা নিরাপদ? এসব নিয়ে কথা হয় গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক পুষ্টিবিদ মুনমুন খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোন অবস্থায় এই গরমে রাস্তার পাশের এসব শরবত খাওয়া উচিত না। কারণ এদের পানির ফিল্টার, বরফ, পানি কোনটাই পরিচ্ছন্ন না। তার ওপরে রাস্তার ধুলো মাখা পরিবেশ। এতে জন্ডিস, টাইফয়েড মত পানিবাহিত রোগ হতে পারে। গরমে বের হওয়ার সময় সাথে পানির বোতল রাখা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

ঢাকাটাইম্‌স/২৪মে/টিজেটি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :