টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ঠাঁই হবে না: আইজিপি

আবদুর রহমান, টেকনাফ থেকে
| আপডেট : ২৪ মে ২০১৭, ২১:৫১ | প্রকাশিত : ২৪ মে ২০১৭, ২১:৩২

‘ইয়াবার স্বর্গরাজ্য’ কক্সবাজারের টেকনাফে গিয়ে মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। টেকনাফে কোনো ইয়াবা ব্যবসায়ীর ঠাঁই হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন পুলিশ প্রধান। ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা যত প্রভাবশালীই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেন আইজিপি।

বুধবার বিকালে টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘জঙ্গি ও মাদক’ প্রতিরোধ জনসভায় এসব কথা বলেন পুলিশপ্রধান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা পুলিশ সার্কেল সমিত্র চাকমা।

আইজিপি বলেন, ‘মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পুলিশের একার পক্ষে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদককে নির্মূল করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে এসব অপরাধ রুখে দিতে হবে।’ তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মাদক ও জঙ্গিবাদ বিস্তার রোধে কঠোর অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

শহীদুল হক বলেন, ‘জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটি কোনো একক দেশের সমস্যা নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গি দমনে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। দেশে এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশে আর যেন জঙ্গি কার্যক্রম মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেদিকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হবে। জঙ্গি ও মাদক কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।’

আইজিপি বলেন, ‘জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কমিউনিটি পুলিশিং কাজে লাগাতে হবে। জঙ্গিদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তাদের আত্মীয়-স্বজনদেরও হালনাগাদ তথ্য রাখতে হবে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সে দেশে ইয়াবা তৈরি হয়। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে একত্রিত করে মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে।’

পুলিশপ্রধান বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে সমাজ থেকে মাদক ও জঙ্গি নির্মূল করতে হবে।’ পাশাপশি মাদক ও জঙ্গিবাদ বিস্তার রোধে কঠোর অবস্থান নেয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন আইজিপি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘মিয়ানামর থেকে আমাদের দেশে ইয়াবা আসে আর আমার দেশে থেকে মানুষের জীবন বাঁচানোর ওষুধ যায়। আমরা সবাই মিলে টেকনাফ থেকে ইয়াবামুক্ত করতে হবে। কেননা জনগণ সহযোগিতা না করলে ইয়াবামুক্ত করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়।’

ডিসি বলেন, ‘মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত মাদক বহনকারীকে আটক করলেই হবে না, মাদকের পেছনের গডফাদারকে খুঁজতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাদকসংক্রান্ত মামলাগুলো নিবিড়ভাবে তদন্ত করতে হবে।’ তিনি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে মাদকবিরোধী প্রচার আরও জোরদার করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

সভায় আরও বক্তব্য দেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনির-উজ-জামান, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, জেলা পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন, টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম আরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল, কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধ কমান্ডার মো. শাহাজান, টেকনাফ উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম।

এর আগে পুলিশের আইজিপি দুপুর ১২টার দিকে দেড় কোটি টাকার বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও বিকাল ৪টার দিকে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট টেকনাফ মডেল থানার নমনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৪মে/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :