‘ম্যাচিং ম্যান’ ‘বনবন্ধু’

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ মে ২০১৭, ০৮:২২

ম্যাচিং করে পোশাক কেবল নারীরাই পড়বেন? সমঅধিকারের এই যুগে পুরুষই বা পিছিয়ে থাকবে কেন? আর সে পুরুষ যদি হন বনবন্ধু? তার পুরো নাম জাহেদুর রহমান ইকবাল। বনবন্ধু নামটা কীভাবে এল তা জানা যায়নি, তবে এই নামটা আছে তার জাতীয় পরিচয়পত্রেও।

হঠাৎ দেখা বনবন্ধুর সঙ্গে। ঘটনাস্থল জাতীয় প্রেসক্লাব। বিএনপি সমর্থিত একটি সংগঠনের স্মরণসভায় এসেছিলেন তিনি। পোশাকের কারণে সহজেই সবার নজর কেড়েছেন বনবন্ধু। তার জুতা থেকে শুরু করে গায়ের পোশাক, এমনটি টুপিও রঙের আছে মিল। জানা গেল, কেবল এই কর্মসূচিতে নয়, তিনি যেখানেই যান পোশাক পড়েন ম্যাচিং করে। এ কারণে একজন তার নাম দিয়ে দিলেন ‘ম্যাচিং ম্যান’।

ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথাও হলো ম্যাচিং ম্যান এর। জানালেন, দিনে অন্তত তিনবার পোশাক পাল্টান তিনি। আর প্রতিটি পোশাক মানে একেকটি সেট। জুতা থেকে শুরু করে টুপি এমনকি কলমও পাল্টান তিনি। বাদ যায় না, মোবাইল ফোনের কভারও।

ম্যাচিং ম্যানের বাড়ি রাজশাহীতে। রাজনীতিতে জড়িত তিনি। আছে বিএনপির প্রতি ভালবাসা। প্রায়ই জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় দেখা মেলে তার। বিশেষ করে যেদিন বিএনপি বা বিএনপিমনা কোনো সংগঠনের আলোচনা থাকে। ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে ম্যাচিং করে পোশাক পড়ে শ্রোতার কাতারে বসে থাকতে দেখা যায়।

বুধবার দুপুরে প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত শফিউল আলম প্রধানের স্মরণসভায় দেখা মিললো বনবন্ধুর। শোকসভা বলে তার পোশাকের রঙ সাদা ও কালোর মিশ্রণে।

মাথার কিস্তি টুপি,চোখের চশমা, শার্ট, ব্লেজার, টাই, হাত ঘড়ি, আংটি, জুতা, এমনকি মোবাইল এবং কভার তাতেও সাদা কালোর মিশ্রণ ছিল বনবন্ধুর। প্যান্টটিতে কেবল রঙ এর মিশ্রণ ছিল না, সেটি শুধু কালো রঙের ছিলো।

প্রেসক্লাব চত্বরেই কথা বলার সময় জানালেন, শোকদিবস তাই সাদাকালোতে নিজেকে ঢেঁকে দিয়েছেন।

এমন ম্যাচিং করে পোশাক পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘বনবন্ধু’ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যে কোনো দিবস বা উপলক্ষের সঙ্গে মিল রেখে আমি পোশাক পরি। আজকে যেমন শোকদিবসের আলোচনা তাই সাদা কালো পড়লাম। কালকে মিছিল আছে মিছিলের জন্য আলাদা পোশাক পরব।’

জানালেন, শোক দিবসের আলোচনা সেরেই গিয়েই পোশাক পাল্টে ফেলবেন তিনি। আর গাড়িতে ম্যাচিং করে আরও এক সেট পোশাক রাখাও আছে। এই প্রস্তুতি কেবল এই এক দিনের জন্য নয়। গাড়িতে সব সময়ই এক বা দুই সেট পোশাক তার সব সময়ই থাকে।

পরিচয় জানতে চাইলে নিজের ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিলেন ম্যাচিং ম্যান। বললেন, ‘রাজনীতি করি রাজশাহী জেলা বিএনপির সঙ্গে আছি। পাশাপাশি ঢাকাতে কনসালটেন্সির কাজ করি।’

পরে বিস্তারিত কথা বলার যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার ঢাকার বাইরে থেকে কয়েকজন গেস্ট আসছে তাদের নিয়ে একটু ব্যস্ত আছি।’

বনবন্ধুর ফেসবুক পেজে গিয়ে ম্যাচিং করে পোশাক পড়ার আরও নমুনা দেখা গেছে। পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণ উৎসবে লাল-সাদার পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে জুতা, আটিং, এমনকি লাল-সাদা ছাতা নিয়ে বের হয়েছেন।

স্বাধীনতা দিবসে বিএনপির মিছিলে ম্যাচিং ম্যান অংশ নিয়েছেন জাতীয় পতাকার দুই রঙ সবুজ এবং লালের মিশেলে পোশাক করে। তিনি সেদিন শার্ট পড়েন সবুজ রঙ এর। সেই শার্টের কলারের রঙ আবার লাল। টাইয়ের রঙও টকটকে লাল মাথার টুপিতেও সবুজ আর লালের মিশেল। চশমাটাও আবার বাদ যাবে কেন। সেটাও লাল রঙ এর।

এই ম্যাচিং ম্যান পেশায় একজন পরামর্শক। তার ভিজিটিং কার্ডে সেসব বর্ণনাও দেখা আছে। নতুন কোম্পানি, গ্রুপ অব কোম্পানিজ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিও, ট্রাস্ট, দাতব্য প্রতিষ্ঠা, টিআইএন নম্বর, ভ্যাট নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পরামর্শক হিসেবে তিনি কাজ করেন।

এছাড়া স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য কাগজপত্র তৈরিতে সহায়তা, এনজিও জন্য ঋণ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাইয়ে দিতে তিনি সহায়তা করার কথা জানিয়েছেন ‘ম্যাচিং ম্যান’।

আরও নানা কাজ করেন বলে ভিজিটিং কার্ডে তথ্য দিয়েছেন ম্যাচিং ম্যান। তার দাবি তিনি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠাতেও কাজগপত্র তৈরিতে সহায়তা করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/বিইউ/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :