ভোজনরসিক রোজাদারদের ঠিকানা চকবাজার

পরিতোষ আচার্য, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ মে ২০১৭, ১৮:২৩ | প্রকাশিত : ২৮ মে ২০১৭, ১৭:৩০

ভোজনরসিক বাঙালির কাছে রোজার অন্যতম আকর্ষণ ইফতার। একেক এলাকার ইফতারের ধরন একেক রকম। তবে সারাদেশে সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত ইফতার রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের।

নানান ধরনের ইফতার আইটেমের সমাহার বসে এই চকবাজারে। মোগল ও নবাবদের আমল থেকেই চকবাজারের ইফতারির বাজার সমৃদ্ধ ছিল। ইতিহাসবিদদের মতে চকবাজারের শাহী মসজিদের সামনে একটি কূপ ছিল। এর চারপাশেই চেয়ার-টেবিল বিছিয়ে বিক্রি করা হতো ইফতারের বিভিন্ন উপকরণ। কালের বিবর্তনে পুরান ঢাকার চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার বর্তমান চেহারা পেয়েছে।

রাজধানীর প্রত্যেক এলাকার মানুষ ইফতার কিনতে একবার হলেও আসে এই চকবাজারে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রোজার শুরুর দিন থেকেই জমে ওঠেছে চকবাজারের ইফতার বাজার। এখানে এবার ৫০ থেকে ৭০ ধরনের বাহারি আয়োজন রয়েছে ইফতারের।

চকবাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইফতার আইটেম ‘বড় লোকের পোলায় খায়’। বিখ্যাত ও জনপ্রিয় এই ইফতার আইটেমটির দিকে নজর থাকে সবার। ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই আইটেমটি।

চকবাজারের অন্যান্য আইটেমগুলোর মধ্যে, প্রতিকেজি সুতি কাবাব ৪০০ থেকে ৫০০, শাহি জিলাপি ১২০, খাসির হালিম ৫০ থেকে ৩৫০, খাসির রোস্ট ১৮০ থেকে ২২০, কোয়েলের রোস্ট ৬৫, খাসির কাবাব ৫০ টাকা এবং দইবড়া ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ডিম চপ ১৫, মুরগি ভাজা ১৮০, মুরগির ফ্রাই ৫০-৭০, মাঠা ৫০ টাকা লিটার, লাবাং ৮০-১২০, চিকেন ছাসনি ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হতে দেখা যায়। চকবাজারে ব্যাপক হারে পাওয়া যাচ্ছে মালপোয়া ও গজা। একটি মালপোয়ার দাম ২৫ টাকা ও গজা দুটি ২৫ টাকা।

এছাড়াও এখানে মেলে অন্যান্য সাধারণ ইফতার সামগ্রীও। তবে উপাদান ও তৈরিতে কিছু ভিন্নতা রয়েছে এখানেও। পাওয়া যাচ্ছে বুটের ডাল ও মাংসের কিমা দিয়ে তৈরি টিক্কা কাবাব, ডিম চপ ১৫ টাকা, দুই টাকার ফুলুরি, আলুর চপ, পিঁয়াজু ও ১২ টাকার সবজি বড়া।

দইবড়া কেজি ২০০-২৫০ টাকা, দুধের শরবত লিটার ২৬০ টাকা, বোরহানী লিটার ১২০ টাকা, চিকেন স্টিক পিস ৭০ টাকা, চিকেন নার্গেট ৫০ টাকা, বিফ জালি কাবাব ২০ টাকা, বিফ স্টিক ৪০ টাকা, কিমা পরোটা ৩০ টাকা, টানা পরোটা ২০ টাকা, চিকেন উইন্স ৩০ টাকা, মোরগ পোলাওয়ের মূল্য ১,৩০০ টাকা, আস্তা মুরগি কাবাব ৪৫০ টাকা, চিকন জিলাপি ১২০ টাকা এবং বিশেষ জিলাপি ২০০ টাকা।

এছাড়া রয়েছে আরও অনেক ধরনের ইফতারের আয়োজন।

তবে এসব ইফতার আইটেমের পাশাপাশি ক্ষুদ্র পরিসরে রয়েছে ফলমূলের আয়োজন। আনারস, নাশপাতি, সফেদা, খেজুর, আপেল, কমলা, আঙ্গুর, কলাসহ নানান ধরনের ফলমূল বিক্রি হচ্ছে চকবাজারে।

মোহাম্মদ নাসিম ধানমন্ডি থেকে চকবাজারে এসেছেন ইফতার কিনতে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি প্রতি বছরই প্রথম রোজায় ইফতার কিনতে আসি, চকবাজারে কারণ আমার কাছে এখানকার ইফতার অনেক প্রিয়।’

দামের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দামটা আসলে অন্যান্য জায়গার তুলনায় একটু বেশি। তবে এখানকার আইটেমগুলো বেশ মজার। আর আমি তো প্রতিদিন আসি না তাই এক-দুই দিন দাম বেশি দিয়ে কেনা যায়।’

কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছেন আব্দুল মান্নান। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার নানিবাড়ি এই পুরান ঢাকায়, ছোটবেলা থেকেই আমি চকবাজারের ইফতারের সাথে পরিচিত। আমার আম্মাসহ পরিবারের সবারই চকবাজারের ইফতার অনেক পছন্দের। তবে প্রতিদিন আসতে পারি না, পুরো রমজানে ৫-৭ দিন আসা হয়।’

তবে সুবিধা ও পছন্দের পাশাপাশি কিছুটা দুর্ভোগও পোহাতে হয় চকবাজারে ইফতার কিনতে আসা ক্রেতাদের। এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া একই সময়ে সবাই এখানে ভিড় জমানোর কারণে সৃষ্টি হয় যানজটের।

(ঢাকাটাইমস/২৮মে/পিএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :