জাবি ছাত্রকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে চিকিৎসা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আটক হওয়া সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানকে হাসপাতালের বেডে হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। অসুস্থ সেই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান।
হাসপাতালের বেডে হাতে হ্যান্ডকাফ পরা নাজমুলের সেই ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ছবিটি শেয়ার করে তীব্র সমালোচনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেছেন।
জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে নাজমুলসহ প্রায় ৪২ জনকে আটক করে পুলিশ। অসুস্থ থাকায় আশুলিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নাজমুলকে।
হ্যান্ডকাফ পরা নাজমুলের ছবি শেয়ার করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মোহাম্মদ আলী রতন লিখেছেন, ‘কোথায় জাবির সেন্টিমেন্ট? কোথায় সিনেট? কোথায় সিন্ডিকেট? কোথায় অ্যালামনাই এর কর্তা ব্যক্তিরা! লজ্জা করে না আপনাদের এই দৃশ্য দেখে! খুনি সন্ত্রাসীদের মত আমার সন্তানতুল্য ছোটভাইদের হাসপাতালের বেডে হাতকরা পরিয়ে রাখা হয়েছে! ধিক্কার জানাই তীব্র প্রতিবাদ জানাই কোন কথা শুতে চাই না! অবিলম্বে ছাত্রদের নামে দয়েককৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তি দেয়া হোক!’
মিনহাজ আহমেদ ভূইয়ান নামের ১৬তম ব্যাচের আরেক প্রাক্তন ছাত্র লিখেছেন, ‘দুঃখিত মানবতা... হাসপাতালেও হাতকড়া...।’
গত শুক্রবার ভোরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন সিঅ্যান্ডবি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নাজমুল হাসান ও মেহেদি হাসান নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি, নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, গতিরোধক ও পদচারী-সেতু (ফুটওভারব্রিজ) নির্মাণসহ আরও কয়েকটি দাবিতে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে মহাসড়কে পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে পুলিশ। এতে সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
পরে পুলিশি হামলার জের ধরে শনিবার বিকালে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে একপর্যায়ে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর চালান। পরে শিক্ষক লাঞ্ছনা, ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় ৩১ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখসহ আর অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৮মে/প্রতিনিধি/জেবি)