লন্ডন সাবওয়েতে এক ভারতীয় যুবকের রুঢ় আচরণ

দেলোয়ার হোসেন, লন্ডন থেকে
| আপডেট : ২৯ মে ২০১৭, ১৬:৫৯ | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০১৭, ১৬:৪৯

লন্ডন সিটির যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই উন্নত যে, বলে পুরোপুরি বোঝানো যাবে না। টোকিও সিটির রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম। তবে লন্ডনের রেল ব্যবস্থা আরও বেশি উন্নত মনে হচ্ছে আমার কাছে। বিশাল লন্ডন সিটির যে কোনও প্রান্তে আপনি যেতে পারবেন রেলে করে। এখানে আছে অসংখ্য লাইন। যেগুলোর একটার সঙ্গে আরেকটা সংযুক্ত। দূরে যেতে হলে অনেকগুলো লাইন পরিবর্তন করতে হয়। একজন আগন্তুকের জন্য যা সহজ নয়।

আপাতত ওঠেছি লন্ডনের একটু সাইডে হেইজ অ্যান্ড হার্লিংটনে।রবিবার ওভাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রওনা হলাম দুপুর ১২টার দিকে। বেশ লম্বা পথ। ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগবে। গোটা তিনেক ট্রেন লাইন পরিবর্তন করতে হবে। কোথায় কোথায় নামতে হবে এবং কোনা কোন ধরতে হবে তা লিখে নিয়ে গেছি। কিন্তু তার পরেও শেষ দিকে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেললাম।

ওভাল স্টেডিয়াম কেনিংটনে অবস্থিত। আমাকে কেনিংটন স্টেশনে নামতে হবে। ওখান থেকে হেটে ১০ মিনিটের পথ। আবার ওভাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশেও সাবওয়ে আছে। কিন্তু আমি এই পথে আসিনি। আমি যে পথে এসেছি তাতে আমাকে নামতে হবে কেনিংটন সাবওয়ে স্টেশনেই।

ভিক্টোরিয়ায় আসার পর আমি তালগোল পাকিয়ে ফেললাম। দেখা হলো ভারতীয় এক যুবকের সঙ্গে, সেও ওভালে যাবে, ভারত নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দেখতে। গায়ে তার ভারত দলের জার্সি। ব্যস, ভালোই হলো। তাকে অনুরোধ করে বললাম, ‘প্লিজ আমাকে একটু আপনার সঙ্গে নিয়ে যাবেন। কোথায় নামতে হবে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।’

আমরা একই বোগিতে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আসছি। আমি নির্ভার। কোথায় নামতে হবে, নেমে কোন দিকে যেতে হবে-এনিয়ে আমার আর কোনো চিন্তা নেই। কিন্তু কেনিংটনের আগের স্টেশনে যুবকটা আমাকে কোনো কিছু না বলে নেমে পিছনের বোগিতে চলে গেল। আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম, ভাই এখানে নামতে হবে? সে কোনো উত্তর দিল না।

আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। আমি তার আশাতেই থাকলাম। গন্তব্যে আসলে সে নিশ্চয়ই আমাকে ডেকে নিবে। সে কখন নামে সে দিকে আমার দৃষ্টি। কিন্তু কেনিংটনে ট্রেন থামা মাত্রই সে আমাকে না বলে দ্রুত নেমে ধেই ধেই করে ছুটা শুরু করলো। ব্যাপারটা ততোক্ষণে আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে হয়ে গেল। সে তো ফাঁকি দিচ্ছে। সে তো আমাকে পথ চেনাবে না!

আমিও দ্রুত নেমে পড়লাম এবং তাকে অনুসরণ করতে লাগলাম। দ্রুত তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস কলাম,‘ ভাই, কৈ আমাকে তো ডাকলেন না। আপনি কি ওভালেই যাবেন? আমি চিনি না, আমি কি আপনাকে অনুসরণ করব? কিন্তু তার মুখ থেকে একটা কথাও বেরুলো না।সে আরও দ্রুত ছুটতে লাগলো। আমিও তাকে অনুসরণ করতে লাগলাম।

ওভাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পৌঁছলাম। সে দ্রুত গ্যালারিতে ঢুকে পড়লো। সে একবারও পিছনে তাকাল না। সম্ভবত সে মর্মাহত হলো না। কিন্তু আমি মর্মাহত, বিস্মিত, হতভম্ব। অনেকবার বিদেশে গেছি, কয়েকবার ভারতেও গেছি। কিন্তু এমন আচরণের শিকার এই প্রথম।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/ডিএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :