কক্সবাজারে প্রস্তুত ৫৩৮ আশ্রয়কেন্দ্র, ৮৮টি মেডিকেল টিম
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে খোলা হয়েছে ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র আর প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন।
জেলা প্রশাসক জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দেন। সন্ধ্যার আগে পাহাড়ের পাদদেশে থাকা ও উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে সরিয়ে আনার নির্দেশ প্রদান, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা রাখা,শুকনো খাবার মজুদ ও সংরক্ষণ, স্বাস্থ্য সেবা, রেসক্যু টিম, ফায়ার ব্রিগেড, রেডক্রিসেন্ট সদস্যদের সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া উপকূলীয় এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আগত জনসাধারণের জানমাল ও সম্পদ রক্ষার্থে আনসার-ভিডিপি সদস্যদেরকে নিয়োজিত রাখা, সমুদ্রে যাওয়া মাঝধরা ট্রলার ফেরত আনা, জনসাধারণসহ সকল উপজেলায় উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সদস্যকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজি মো. আবদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আনোয়ারুল নাসের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার, সিভিল সার্জন ডা. পু চ নু, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, জাসদ সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, র্যাব, কোস্টগার্ড কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, আবহাওয়া কর্মকর্তা, রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার ব্রিগেড, সংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
এরই মধ্যে কক্সবাজার পৌর এলাকা, মহেশখালীর মাতারবাড়ি, ধলঘাটা, কুতুবজোম, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়ার সমস্ত ইউনিয়ন, টেকনাফের বাহারছড়া, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়াসহ আরও কয়েকটি উপকূলীয় এলাকা, চকরিয়া ও সদরের পোকখালী, খুরুশকুল এবং সমিতিপাড়ায় বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। তাছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের নাম্বার ০১৭১৭-০৯৪২১৩ ও ০৩৪১-৬৪২৫৪। কন্ট্রোল রুম থেকে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সবধরনের খবরা-খবর পাওয়া যাবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। জরুরি মুহূর্তে বিতরণের জন্য প্রস্তুত রাখা পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী। স্থানীয় পর্যায়ে সব স্তরের জনপ্রতিনিধিকে ঝুঁকি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে জেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কক্সবাজারের আটটি উপজেলার সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ মেডিকেল টিম গঠনসহ সর্বাত্মক আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সব চিকিৎসকেরও ছুটি বাতিল করেছে প্রশাসন। খোলা হয়েছে উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম। পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি চার হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৯মে/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন