প্রেমিকের বাড়িতে অনশন: সিঁথির সিঁদুর জয় সুরবালার
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে পুরো এক সপ্তাহ্ অনশন পালনের পর সিঁথির সিঁদুর জয় করলেন সুরবালা রায় শিল্পী। তিনি একজন এনজিও কর্মী। সুরবালার অনড় অবস্থান দেখে পলাতক প্রেমিক অমল চন্দ্র বর্মন বাধ্য হয় ফিরে আসতে। পরে বুধবার রাতে তাদের পরিবার, এলাকাবাসী, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মহা ধুমধামে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। এতে সুরবালা খুশি হলেও মন বেজার অমল চন্দ্র বর্মনের। তবুও সুখের সংসার গড়ার প্রত্যয় এ প্রেমিকযুগলের।
এলাকাবাসী জানায়, কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের বানছারাম গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন সুরবালা রায় শিল্পী। ২৪ মে রাত ১০টার দিকে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক অমল চন্দ্র বর্মনের বাড়িতে এলে প্রেমিক কৌশলে পালিয়ে যায়।
এরপর থেকে অমল চন্দ্রের পরিবারের লোকজন নানা কৌশল করেও ওই নারীকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে ব্যর্থ হন।
অন্যদিকে বিয়ে না হলে ছেলের পরিবারকে আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকেন সুরবালা রায় শিল্পী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে প্রতিদিনই প্রেমিকার অনশনস্থলে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর ভিড়।
ঘটনাটি নিয়ে শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে উপায়ন্তর না পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছালাম, সবুজ ও মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বাবলু প্রেমিককে হাজির করে তড়িঘড়ি করে বিয়ের ব্যবস্থা করেন। পরে বুধবার রাতে পারিবারিকভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের বানছারাম গ্রামের নিবারণ চৌধুরীর ডিগ্রি পাস বেকার পুত্র অমল চন্দ্র রায়ের সাথে দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই মণ্ডলপাড়া গ্রামের সম্বারু চন্দ্র বর্মনের মেয়ে সুরবালা রায়ের সাথে দীর্ঘ চার বছর ধরে প্রেম চলে আসছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রেমিকার পারিবারের পক্ষ থেকে ছেলের পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ছেলের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। এ অবস্থায় প্রেমিক অমল চন্দ্র নানা টালবাহানার পাশাপাশি অন্যত্র বিয়ে করার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে উপায়ন্ত না পেয়ে বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেন সুরবালা রায় শিল্পী।
সুরবালা রায় বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের পর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পেরে খুশি হয়েছি। আমি সকলের আশীর্বাদ চাই- যেন আমি আমার মনের মানুষকে নিয়ে সুখী হতে পারি।
প্রেমিক অমল চন্দ্র বর্মনের কাছে তার অনুভূতি জানতে চাইলে কোন কথা না বলে মাথা নেড়ে তার সম্মতির কথা জানান।
অমল চন্দ্রের পিতা নিবারণ চৌধুরী ছেলের বিয়ের ব্যাপারে কোন অনুভূতি প্রকাশ না করলেও প্রেমিকা সুরবালা রায় শিল্পীর পিতা সম্মারু চন্দ্র বর্মন মেয়ের বিয়েতে খুব খুশি বলে জানান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুস ছালাম বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে তাদের বিয়ে দেয়া হয়েছে।
মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বাবলু জানান, বিয়ে দিয়ে দিয়েছি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, ছেলের বাড়িতে প্রেমিকার অনশনের ঘটনাটি শোনার পর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১জুন/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন