জাতীয় জাদুঘরে তৈরি হচ্ছে জামদানি শাড়ি

লেখা ও ছবি: শেখ সাইফ
| আপডেট : ০২ জুন ২০১৭, ১০:০৫ | প্রকাশিত : ০২ জুন ২০১৭, ০৮:২৭

যেন একখণ্ড কুটির শিল্পের বাংলাদেশ। তৈরি হচ্ছে বাহারি জামদানি শাড়ি, শীতল পাটি, শখের হাঁড়িসহ নানা লোকজ পণ্য। ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ির জৌলুশ ছড়িয়ে দিতে আর কারু ও মৃৎশিল্পকে মানুষের মাঝে তুলে ধরতে রাজধানী ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে বসেছে এ রকমই এক ব্যতিক্রমী মেলা।

বাংলাদেশের এক গৌরবজনক ঐতিহ্য জামদানি। প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী মসলিন বিলুপ্ত হলেও জামদানি এখনো স্বমহিমায় ভাস্বর। ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ জেলায় একসময় প্রায় চার হাজার জামদানি কারিগর ছিলেন। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এখন তা এক হাজারে নেমে এসেছে।

সম্প্রতি শুরু হওয়া প্রায় দেড় মাসের এই মেলা দেখতে গতকাল জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে চমৎকৃত হতে হই। প্রধান ফটক পেরোতেই হাতের ডানে চোখ পড়ল নানা রঙের সুতার ঝুঁটি। পাশে দুজন কারিগর হাতের নিপুণ কুশলতায় বুনে চলেছেন জামদানি শাড়ি।

কাছে গিয়ে দেখা গেল খুব সূক্ষ্মভাবে ফুল তুলছেন সুতার বুননে। টান টান সুতায় একের পর এক নানা ডিজাইনের কারুকাজ করা হচ্ছে। কথা বলে জানা গেল, শাড়ি, থ্রি-পিস, টু-পিস ও পাঞ্জাবির জন্য জামদানি কাপড় বোনা হচ্ছে।

একজন কারিগর জানান, তাদের এখানে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা দামের জামদানি শাড়ি রয়েছে। একটি শাড়ি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এটির দাম ৬০ হাজার টাকা।’

ওই কারিগর আরো জানান, ‘জামদানি শাড়ি যারা পরবেন তারা এটা ধুতে পারবেন না। আমরাই ধুয়ে দেব।’ দূরের কেউ শাড়ি কিনলে তাদের ক্ষেত্রে কুরিয়ারের মাধ্যমে শাড়ি নারায়ণগঞ্জে পাঠাতে হবে। পরে ধুয়ে আবার কুরিয়ারের মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হবে।’

জামদানি শাড়ি তৈরি ও প্রদর্শনী চলতে থাকবে ঈদুল ফিতরের পরের দিন পর্যন্ত। এখান থেকে যে কেউ ইচ্ছা করলে তার পছন্দের পোশাক বা শাড়ি কিনতে পারবেন।

জাদুঘরে আরো যা কেনা যাবে

জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি তৈরি, বিক্রি ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে নিচের গ্যালারিতে। সুদূর সিলেট থেকে ঢাকার জাদুঘরে এসেছেন শীতল পাটির কারিগররা। তারা এখানে তৈরি করছেন বাহারি সব শীতল পাটি।

হরিপদ নামের একজন কারিগরের কাছ থেকে জানা যায়, একটি শীতল পাটি তৈরি করতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। এক-একটি শীতল পাটির দাম আকার অনুপাতে তিন হাজার টাকা থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

হরিপদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মূলত বেতগাছ দিয়ে তৈরি করা হয় শীতল পাটি। বেতগাছ পাতলা করে ফালি তাতে বিভিন্ন রঙ দেয়া হয়। পরে বোনা হয় শীতল পাটি। শীতল পাটি ছাড়াও জায়নামাজ, বসার আসন, বিছানায় পাতার পাটি তৈরি করেন তারা।

নিচের গ্যালারির আর এক পাশে তৈরি হচ্ছে শখের হাঁড়ি। ছোট, বড়, মাঝারি বিভিন্ন আকার-আকৃতির মাটির হাঁড়ি তৈরি করা হচ্ছে। তাতে আবার দেওয়া হচ্ছে বাহারি রঙের আঁচড়।

পাশাপাশি ছোট ছোট হাতি-ঘোড়া, পুতুল-পাখি প্রভৃতিও আনা হয়েছে এই মেলায়।

(ঢাকাটাইমস/২জুন/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :