মাগুরার ২০ গ্রামে লিচু সংগ্রহে ব্যস্ত চাষিরা
মাগুরার লিচুগ্রাম খ্যাত সদর উপজেলার হাজরাপুর, ইছাখাদা, খালিমপুর, মিঠাপুর, হাজিপুরসহ অন্তত ২০ গ্রামে এবারো লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া আগাম ফলন হওয়ায় ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক। এসব গ্রামের দেড় হাজার বাগানে এবার ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার লিচুর কেনাবেচা হবে বলে চাষিরা জানান।
সদর উপজেলার হাজরাপুর, হাজীপুর ও রাঘবদাইড় ইউনিয়নের ইছাখাদা, মিঠাপুর, গাঙ্গুলিয়া, খালিমপুর, মির্জাপুর, পাকাকাঞ্চনপুর, বীরপুর, রাউতড়া, বামনপুর, আলমখালী, বেরইল, লক্ষ্মীপুর, আলাইপুর, নড়িহাটিসহ ২০টি গ্রামের চাষিরা গত দুই দশক ধরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে এই লিচু চাষ করে আসছেন।
লিচু বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারীরা চাষিদের কাছ থেকে অগ্রিম কিনে নেয়া বাগানে লিচু সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন। বাগানে বাগানে চলছে লিচু সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের কাজ।
ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লিচু ব্যাপারীরা জানান, হাজিপুর, হাজরাপুরের লিচু স্বাদে সুমিষ্ট ও রসালো হওয়ায় সারাদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া এখানকার লিচু একটু আগে পাকায় লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি সুবিধা পান।
হাজরাপুর ইউপি মেম্বার ও লিচু বাগান মালিক আবু জাফর জানান, লিচুর বাগান করতে প্রথম বছর একটু খরচ হয়। পরে তেমন আর উল্লেখযোগ্য খরচ নেই বললেই চলে। প্রতিবছর লিচুর ফুল আসলে শুধু গাছে স্প্রে ও সামান্য পরিচর্যা করতে হয়। এলাকার মাটি লিচু চাষের জন্য উপযোগী। এখানে বোম্বায়, চায়না থ্রী, মোজাফ্ফর ও স্থানীয় হাজরাপুরী জাতের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। মৌসুমের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারী ফড়িয়া ও আড়তদারা এসে লিচুর বাগান কিনে তা গাছ থেকে ভেঙে ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ ট্রাক লিচু এ এলাকা থেকে চালান হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিটি বাগান লক্ষাধিক টাকা দিয়ে কিনে তারা দেড় থেকে দুইগুণ মুনাফা অর্জন করেন। বর্তমানে প্রতি এক হাজার লিচুর পাইকারি দর পড়ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, যা স্থানীয় বাজারে হাজার প্রতি ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা খুচরা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আরিচা-পাটুরিয়া-দৌলদিয়া ঘাটের জ্যামের কারণে তারা সমস্যায় পড়ছেন বলে জানান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সোহরাব হোসন জানান, মাগুরার লিচু একটি ভৌগোলিক পণ্যে (ব্র্যান্ডিং) পরিণত হয়েছে। গোটা জেলায় প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার লিচু বাগান রয়েছে। যেখানে বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ করে এসব গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক কৃষক পরিবার আত্মনির্ভরতার পথ খুঁজে পেয়েছে। এবছর ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে। কৃষি বিভাগ নিয়মিত খোঁজ-খবর নেয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সুবিধা চাষিদের দিচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/২জুন/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন