মাছের বরফে লাচ্ছি-ফালুদা

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ জুন ২০১৭, ১৪:১০ | প্রকাশিত : ০৪ জুন ২০১৭, ১০:৩৭

খাবারের দোকানের কমতি নেই পুরো রাজধানী জুড়ে। আর যখন প্রশ্নটা গরমকে টেক্কা দেয়ার, তখন তো ফালুদা এবং কোল্ড কফিই ভরসা। সামান্য তৃপ্তি পেতে রাজধানীবাসী ভিড় জমায় নামজাদা লাচ্ছি, ফালুদা আর কোল্ড কফির দোকান গুলোতে। আবার নিম্নবিত্তরা পছন্দ করে, রাস্তার পাশের কুলফি আইসক্রিম কিংবা শরবত। কিন্তু গরমে তৃপ্তি পেলেও অনেকেই পরতে হচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।

লাচ্ছি, ফালুদা আর কোল্ড কফির দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, সবারই বাড়তি চাহিদা রয়েছে বরফের। এ চাহিদা মেটাতে অনেকেই প্রয়োজন অনুপাতে ডিপ ফ্রিজে বরফ তৈরি করছেন নিজেরা নিজেরাই। আবার এটাও সত্যি নিজস্ব ডিপ ফ্রিজের তৈরি বরফ এবারের গরমের বাড়তি চাহিদা মেটানোর চিন্তা করাও বোকামি। তাই ঠান্ডা পানীয়ের ব্যাবসায়ীদের একটি বিশাল সংখ্যা বরফের জন্য ভরসা করে স্থানীয় বরফকলের উপর। সেখান থেকেই তারা কিনে আনেন খাওয়ার বরফ।

কিন্তু সেটা কি সাস্থ্য সম্মত। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বরফকল গুলোতে বরফ তৈরি হয় মাছ সংরক্ষণকে মাথায় রেখে। তাই এখানে বরফটাই মূখ্য, বরফ কোন পানি দিয়ে বানানো হলো তা নিয়ে মাথা ঘামায় না কেউই। তারমানে বরফ বানানোর পানিতে কোনরকম পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ধার না ধেরেই মাছের বরফেই হয়তো তৈরি হচ্ছে আপনার প্রিয় দোকানের লাচ্ছিটা। যে কোল্ড কফি খাচ্ছেন, তার বরফের উৎস হয়তো উন্মুক্ত কল থেকে নোংরা পাত্রে সংগ্রহ করে নেয়া জীবাণুভরা পানি।

ধারনাটা ঠিক বলেই মেনে নিলেন বরফকল মালিক টাইসন মাসুম। তবে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা খাওয়ার জন্য বা মাছের জন্য আলাদা ভাবে কোন বরফ তৈরি করি না। আমারা যা তৈরি করি তা কেবল মাছ বাজার ও সুপারশপের হিমাগারের জন্য। কিন্তু আমাদের থেকে

মাছের জন্য বরফ নিয়ে তা যদি কেউ খাওয়ার জন্য ব্যবহার করে, সে দ্বায়ভার তো আমাদের না।’

যারা খাওয়ার জন্য বরফ তৈরি করেন তারাই বা কতটা মানসম্মত পানি থেকে বরফ বানাচ্ছেন? মোহাম্মাদপুর সুনিবিড় হাউজিং, বসিলা, টাউনহাল বাজারের কয়েকটি বরফকলের ঘুরে দেখা গেছে, উৎপাদক ও উৎপাদনে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের করুন অবস্থা। বরফ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে মরিচা ধরা টিনের ছাচ। কারখানার মেঝে নোংরা। বরফ তৈরি করে যেখানে রাখা হচ্ছে, ঠিক তার উপরেই কর্মচারীদের ভেজা কাপড় শুকাতে দেয়া হয়েছে।

সুনিবিড় হাউজিং বরফকলের কর্মচারী মাসুদ বললেন, ‘এখানে খাওয়ার জন্য আর মাছের জন্য দুই রকম বরফই বানাই। কিন্তু খাওয়ার বরফের দাম একটু বেশি, তাই পয়সা বাঁচাতে সবাই মাছের বরফই কিনে নেয়।’

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বরফকল কর্মচারী বলেন, ‘যারা আমগো থেকে সবসময় বরফ নেয় তাগো তো চিনি, হেরা মাছের বরফ নিয়াই আইসক্রিম, লাচ্ছি বানায় আর রেস্টুরেন্টে খাওয়ায়।’

বিষয়টা নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্কিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ড. সাগরময় বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদিত বরফ খাওয়াটা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক। এতে পানিবাহীত সব ধরনের রোগ হতে পারে। ডাইরিয়া, জন্ডিসসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগ সংক্রামণের সম্ভাবনা রয়েছে এধরনের বরফে তৈরি পানীয় খেলে।’

এ পুষ্টিবিজ্ঞানির পরামর্শ, ‘বাহিরের বরফ এবং বরফে তৈরি খাবার ও পাণীয় সম্পূর্ণ পরিহার করা করুন। ব্যক্তিগত তত্বাবধানে ফ্রিজে বরফ তৈরি করে খান, এতে স্বাস্থ্যঝুকির কোনো সুযোগই নেই।’

ঢাকাটাইমস/৪এপ্রিল/কারই/কেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :