পাবনায় অ্যানথ্রাক্সে শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত ১৩

পাবনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৪ জুন ২০১৭, ২১:৪৭| আপডেট : ০৪ জুন ২০১৭, ২২:০০
অ- অ+

পাবনায় অ্যানথ্রাক্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। জেলার ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলায় নারী-শিশুসহ ১৩ জন অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আলাউদ্দিন (১৩) নামের এক শিশু মারা গেছে।

চিকিৎসকরা জানান, সম্প্রতি দুটি গরুর মাংস খেয়ে পশুর অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন তারা। রোগের সংক্রমণ এড়াতে এলাকাবাসীকে নানাভাবে পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসের ১ তারিখ রোগাক্রান্ত দুটি গরু জবাই করে কমদামে গ্রামবাসীর মাঝে মাংস বিক্রি করেন পাবনার ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের আব্দুল কাদের ও সাইফুল ইসলাম। এ মাংস কিনেন গ্রামের শতাধিক পরিবার। এ মাংস খেয়ে জন্তিহার ও পাশের ভাঙ্গুড়া উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের এসব মানুষের মধ্যে শিশু-নারীসহ ১৩ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে জুন্তিহার গ্রামের মোস্তার ছেলে আলাউদ্দিন (১৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বিএলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত শুক্রবার সকালে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের রহিম আলীর একটি ষাঁড় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় তড়িঘড়ি করে তিনি ষাঁড়টি জবাই করে দুপুরে ওই ষাঁড়ের মাংস কাটা এবং ধোয়ার কাজে অংশ নেন। তারা কাজ শেষে ওই মাংস দিয়ে ইফতার করেন। এর দুই তিন ঘণ্টা পরে ইফতারে অংশগ্রহণকারী বারজনের হাতে-পায়ে ফোসকা ওঠে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ক্রমেই ফোসকার স্থানে প্রচুর চুলকানি এবং ব্যথা শুরু হয়। পরে রাতেই তাদেরকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

আক্রান্তরা হলেন- ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে বিপ্লব (২০), ওমর ফারুকের ছেলে সাহিম (১১), হাজী আব্দুল কাদেরের ছেলে ওমর ফারুক সবুজ (২২), মৃত রিয়াজ মন্ডলের ছেলে মন্টু (৫০), সেরাজুল ইসলামের মেয়ে সুমি খাতুন (২৮), সুরাপ প্রামাণিকের স্ত্রী রমেসা খাতুন (৫০), সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে বকুল (৩৮) ও ভঙ্গুড়া উপজেলার চৌবাড়িয়া মহল্লার মোজাম্মেলের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৪), আদর্শ গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে শাহজাহান সিরাজ বাবু (৩৫) এবং পার্শবর্তী উল্লাপাড়া উপজেলার কালিয়াকোর গ্রামের দুলাল সরকারের মেয়ে জোসনা খাতুন (৪৫)।

অপরদিকে ফরিদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত দুজন হলেন- উপজেলার জন্তিহার গ্রামের সোবাহান আলীর ছেলে ওমর ফারুক (৩৮), কাশিপুর গ্রামের হিরা সরকারের ছেলে জাহাগীর (৩৫)।

হাতে গভীর ক্ষত নিয়ে বাবু জানান, গরুর মাংস ধরার পর তার হাতে ফোসকা উঠতে থাকে। তারপর শুরু হয় প্রচণ্ড ব্যাথা। এরপর ফোসকা গলে দগদগে ঘা হয়ে যায়।

এব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ইকরামুন্নাহার ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রোগীরা অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনা ক্ষতিয়ে দেখতে ঢাকা থেকে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম আসছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গরুর মাধ্যমে যাতে এ রোগ না ছড়ায় এ জন্য তার দপ্তর থেকে ভাঙ্গুড়ায় সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সংক্রমণ এড়াতে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

(ঢাকাটাইমস/০৪জুন/প্রতিনিধি/ইএস/জেবি)

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিজয় দিবসে ঢাকা মহানগর ছাড়া সারা দেশে বিএনপির র‌্যালি
১৬ বছরের দুঃশাসন শেষ হতে ১৬ দিন লাগেনি: অসীম
মঈন খানের বাসভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মধ্যাহ্ন ভোজ
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর করা হবে: তারেক রহমান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা