আমরা একা আন্দোলন করলে হবে না: রাকায়েত

প্রকাশ | ০৬ জুন ২০১৭, ০৮:২৭

শেখ সাইফ, ঢাকাটাইমস

গাজী রাকায়েত- দেশের একজন খ্যাতিমান অভিনেতা ও নির্মাতা। ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) এর সদস্য সচিব ও ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি তিনি। সম্প্রতি টেলিভিশনে বিদেশি সিরিয়াল বন্ধের দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছে তার অন্যতম নেতা তিনি। সেই দাবি অবশ্য পূরণ হয়নি। তবু থেমে আছে আন্দোলন। কেন? এসব নিয়ে    ঢাকাটাইমসকে বলেছেন গাজী রাকায়েত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শেখ সাইফ।

বিদেশি সিরিয়াল বন্ধে আপনারা আন্দোলনে ছিলেনতা কী থেমে গেলো?  

আমরা সরকারকে লিখিত আকারে কিছু সুপারিশমালা দিয়েছি। গভরমেন্ট থেকে এখন পর্যন্ত কোন সাড়াশব্দ করছে না। আমরা আর একটু সময় সরকারকে দিচ্ছি। দেখি কি করে। যদি কোনো সাড়া না পাই তাহলে আন্দোলনে যাবো।  আমরা এখন তিনটি সংগঠন এক হয়ে কাজে নেমেছি। আমাদের সংগঠনগুলোর গোছানোর ক্ষেত্রেও কিছু কাজ আছে, সেগুলো গুছিয়ে নিচ্ছি তারপর জোরেশোরে ঈদের পরপরই আন্দোলনে যাব। ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) এর মাধ্যমে। শুধু এফটিপিও নয় আরো যে সংগঠনগুলো আছে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে আন্দোলন করা হবে।

ডিরেক্টরস গিল্ড এবং এফটিপিও এখন কী করছে ?  

ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) শুধুমাত্র একটি সংগঠন নয়। এটি একটি প্লাটফর্ম। এটি একক কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এটি আমরা এখন আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। আমাদের যে দিকগুলি নিয়ে বেশি জোর দেওয়া দরকার সেগুলির বিষয়ে নজর দিচ্ছি। আমাদের ৯ তারিখে ইফতার পার্টি আছে। সেখানে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতির নেতৃবৃন্দ, নৃত্য পরিচালক সমিতি, এডিটরস গিল্ডস অ্যাসেসিয়েশন, মেক্যাপম্যান অ্যাসোসিয়েশন, প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশন, সিনে ডিরেক্টরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিডাব) ও ফাইট ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশনসহ আরো যারা আছে তাদের নিয়ে ইফতার পার্টি এবং গুণীজন সম্মাননা দেওয়া হবে। যারা সিনিয়র শিল্পী বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রেখেছেন তাদেরকে গুণীজন হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হবে। এছাড়া আমাদের সাধারণ সভা আছে। এটি নিয়মিত করা হচ্ছে।

টেলিভিশনে বিদেশি যেসব সিরিয়াল চলছে সে বিষয় নিয়ে কিছু বলুন।

আসলে আমরা একা আন্দোলন করলে কিছু হবে না। যদি সরকার এগিয়ে না আসে। সরকার এবং আমরা সবাই মিলে যদি সচেষ্ট হই তাহলে এটি বন্ধ করা সম্ভব হবে। আগে তো শুধুমাত্র দীপ্ত টেলিভিশন প্রচার করছিলো। এখন তো অনেক টেলিভিশনই প্রচার করছে। আর আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই এটা বন্ধ করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশের পেক্ষাগৃহে ভারতের একক ছবি ও যৌথ প্রযোজনার ছবি এখন অনেক চলছে সেটা কিভাবে দেখছেন?

যৌথ প্রযোজনার যে ছবি চলছে সেটার ক্ষেত্রে আমাদের দেশের কিছু দর্শক ঘাটতি আছে। শুধু আমাদের দেশেই নয় কলকাতায়ও দর্শক ঘাটতি আছে। সেটা পূরণের জন্য যৌথ প্রযোজনার ছবি কাজ করছে। সেই দর্শক হলমুখী হচ্ছে যৌথ প্রযোজনার ছবির জন্য। তবে আমাদের দেশে মেইন স্ট্রিমের ছবি যে হচ্ছে না তা নয়। কিছু হচ্ছে। তবে আমাদের ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি আছে। আমাদের গল্প, লোকেশন, চরিত্র নির্মাণ, কলাকুশলী, ডিজাইনার সব ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন দরকার। সরকার যদি আগামী পাঁচ, দশ বছরের মধ্যে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে এগিয়ে না আসে তাহলে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে। আমাদের চলচ্চিত্রের হাল আরো খারাপ হয়ে যাবে। এজন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

বর্তমানে কী কী কাজ নিয়ে ব্যাস্ত আছেন ?

আমি কিছু কিছু অভিনয় করছি। আর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ট্রেনিং ইন্সটিটিউট আছে যেটা সরকারিভাবে পরিচালিত সেটাতে ক্লাস নিচ্ছি। আর চারুনীড়মের ক্লাস আছে। চারুনীড়ম নিয়ে আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা প্রতিটি জেলায়, শুধু প্রতিটি জেলায় নয় গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াস নিয়ে কাজ করছি। প্রায় দুবছর ধরে কাজ করছি। এটি আমরা ব্যাপক আকারে সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে চারুনীড়মের কার্যক্রম নিয়ে যেতে চাই। এইতো এসব নিয়েই ব্যস্ততা।   

ঢাকাটাইমস/৬জুন/এসএস/এমইউ