লংগদু আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের স্থায়ী পুনর্বাসন হবে: নাসিম
রাঙ্গামাটির লংগদুর তিন গ্রামের পুড়ে যাওয়া ঘরে ধংসস্তুপ দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ ১৪ দলের নেতারা। তারা বলেছেন, যারা এমন কাজ করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার। ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তারা।
বুধবার রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী গ্রামগুলো পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন ১৪ দল নেতারা।
সকাল ১১ টার দিকে ১৪ দলের নেতারা প্রথমে যান বাট্ট্যা পাড়ায়। পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘যারা লংগদুর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে।’
নাসিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। পাহাড়ি ভাইরা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের চিরস্থায়ী পুনর্বাসন করা হবে।’
১৪ দলের নেতারা নিহত যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকেও সান্তনা দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খুনিদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।
আদিবাসী বিষয়ক সংসদী কমিটি ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘যা দেখলাম তাতে বলার ত ভাষা আমার নেই। সব শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এই এলাকা বসবাস করা আদিবাসীদের আর কিছু নেই। সব ছাই করে দেওয়া হয়েছে। তাদের এখন পথে বসার মত অবস্থা তৈরি করা হয়েছে।’
বাদশাহ বলেন, একজনের লাশ পাওয়াকে কেন্দ্র করে একের পর এক গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হবে এটা কোনমতে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এখানে অরাজকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যারা এই ষড়যন্ত্র করেছে তাদের বিরুদ্ধে পাহাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাড়াতে হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ যারা এই কাজ করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। খুব শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে। না হলে বর্ষা আসছে এদের কষ্ট হবে।’
ত্রাণ নিতে আগ্রহ দেখায়নি ক্ষতিগ্রস্তরা
বুধবারও সরকারের কোন ত্রাণ নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি ক্ষতিগ্রস্তরা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা বলেন, তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া দ্রুত পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তারা সরকারের কোন ত্রাণ গ্রহণ করবে না। প্রশাসনের মুখের কথায় ক্ষতিগ্রস্থরা বিশ্বাসী নয়।
আওয়ামী লীগ নেতা বীর বাহাদুর বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা হয়ত তাদের মনের কষ্ট দুঃখ বেদনা থেকে ত্রাণ নিচ্ছেন না। কিন্তু আগে খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে। তারপর আন্দোলন করতে হবে। না খেয়ে দুর্বল হয়ে থাকলে দুষ্টরা আরো সাহস পাবে। দুষ্টরা লাভবান হবে।
খাগড়াছড়ির সংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, জাসদের আহ্বায়ক রেজাউল রশীদ খান, জাতীয় পার্টির সভাপতিম-লীর সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার দিঘীনালা- খাগড়াছড়ি সড়কের খাগড়াছড়ি সদর থানার চার মাইল এলাকার মুল সড়কের পাশে যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। এই লাশ শুক্রবার সকালে লংগদুর বাট্ট্যাপাড়ায় আনা হলে মরদেহ নিয়ে মিছিল বের করে স্থানীয়রা। পরে তিনটিলা পাড়ায় আসলে গুজব ছড়িয়ে বাড়িঘওে আগুন দেয়া হয়। এই ঘটনায় চার গ্রামের দুই শতাধিক ঘর পুড়ে যায়। ইউপি চেয়ারম্যানের ঘরে পুড়ে মারা যায় গুণাবালা নামে এক বৃদ্ধা।
ঢাকাটাইমস/০৭জুন/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন