ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্বোধনের আগেই সেতুতে ফাটল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০১৭, ০৮:২৮

এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পর নির্মিত হয়েছিল সেতুটি। কিন্তু দীর্ঘপ্রতীক্ষার সেতুটি দিয়ে ঝুঁকিহীন পারপার করা যাবে কি না এ নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। কারণ উদ্বোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতুটিতে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বৈকণ্ঠপুর গ্রামের ভাতগাঁও কান্দরপাড়ায় একটি খালের ওপর নির্মিত সেতুর এ অবস্থায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কার্লভাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভাতগাঁও কান্দরপাড়া থেকে পশ্চিম বৈকণ্ঠপুর যাওয়ার রাস্তায় খালের উপর সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর আগে দরপত্র বাছাইয়ের পর চলতি বছরের গত ৫ জানুয়ারি লটারির মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকার কাজটি পায় রংপুরের স্টার কন্সট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ মাসেই সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা।

কিন্তু উদ্বোধনের আগেই ইতিমধ্যে সেতুটিতে দেখা দিয়েছে ফাটল। খসে পড়তে শুরু করেছে পলেস্তারা। সেতুটি নির্মাণে অনিয়মের নানান অভিযোগ তুলছেন এলাকার লোকজন।

স্থানীয ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সেতুটি নির্মাণের নামে মোটা অঙ্কের মুনাফা হাতানোর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে এবং দরপত্রে বর্ণিত নির্দেশনার কোনো তোয়াক্কা করেনি বলে মনে হয়েছে।

ইউপি সদস্য আরো জানান, সেতুটি নির্মাণের সময় ঢালাই ও অন্যান্য কাজে কমদামি, পুরনো ও টুকরো রড এবং নি¤œ মানের খোয়া-পাথর, বালু ব্যবহার করা হয়। আর রাতের আঁধারে সেতুর ঢালাই কাজ করতে দেখেছেন এলাকার লোকজন। এ ছাড়া সেতুর বাইরের অংশে সিমেন্টের পলেস্তারার কাজ না করেই রং দিয়ে অনেক ফাটল ঢেকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সেতুর খুঁটির একাংশে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং অনেক অংশে খসে পড়তে শুরু করেছে ঢালাই।

সাইদুর রহমান নামের স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, সেতুর সঙ্গে সড়কের সংযোগস্থলে পাশের খাল থেকে কাদামাটি তুলে ভরাট করায় ইতোমধ্যে তা দেবে গেছে। ফলে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

দরপত্র অনুযায়ী নির্মাণের কাজ বুঝে না নিলে সেতুটি ব্যবহারে ঝুঁকির আশঙ্কা করছেন একই গ্রামের ওবায়দুর রহমান।

সেতুতে ফাটলের কথা অস্বীকার করছে না স্টার কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান আলী। তবে এ জন্য বৃষ্টি আর এলাকাবাসীকে দায় দিচ্ছেন তিনি।

দরপত্র অনুযায়ী সেতু নির্মাণ হয়েছে দাবি করে শাহজাহান আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তবে নির্মাণকালে বৃষ্টি হওয়ায় সামান্য ত্রুটি হয়েছিল। এ ছাড়া সেতুটি ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগেই এলাকার লোকজন সেতুর ওপর দিয়ে পাওয়ার ট্রলি নিয়ে চলাচল করেছিল। এ জন্য সেতুর একাংশে সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছে।’ তবে তা সেতুর জন্য ক্ষতির কারণ হবে না বলে দাবি করেন তিনি।

শাহজাহান আলীর ভাষ্য, স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেতুটি উদ্বোধনের জন্য বুঝে নিয়েছে। খুব শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মাধ্যমে সবার ব্যবহারের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা বলতে তার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

নির্মাণকাজ নিয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেতুটি পরিদর্শনে গিয়ে ফাটলসহ কিছু ত্রুটি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তিনি জানান, অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর মাধ্যমে দরপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সেতুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেতু হস্তান্তর করা হবে। এর আগে কোনো বিল পাস হবে না।

(ঢাকাটাইমস/৮জুন/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :