খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনে পরের শুনানি ১৫ জুন

প্রকাশ | ০৮ জুন ২০১৭, ১৫:২৯ | আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭, ১৭:২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশিদকে পুনরায় জেরা শুরু করেছেন আইনজীবীরা।

অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা পুনঃ তদন্তের আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর আত্মপক্ষ শুনানির দিন পিছিয়ে ১৫ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

পুরান ঢাকার বকশিবাজারের কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার উভয় মামলায় আত্মপক্ষ শুনানির ধার্য দিনে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ক্রিম আর ব্রাউন কালারের শাড়ি পরা খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হন। বেলা ১১টা ২২ মিনিটে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।

শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় এর আগে সাক্ষ্য দেওয়া ৬, ১২, ১৩, ১৫, ১৬ এবং ১৭ নম্বর সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করেন। তারা ওই সাক্ষীদের খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরা না করে ভুল করেছেন মর্মে উল্লেখ করে পুনরায় জেরার আবেদন করেন।

দুদকের পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ওই সব সাক্ষী খালেদা জিয়া সম্পর্কে সাক্ষ্যে কোনো বক্তব্য না দেয়ায় পুনরায় তাদের ডাকার প্রয়োজনীয়তা নেই বলে বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি নামঞ্জুর করে দেন।

এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে পুনরায়  জেরা করার আবেদন করেন। আবেদনে আইনজীবীরা যেসব প্রশ্ন তদন্ত কর্মকর্তাকে করা হবে সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন, যা আদালতের কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হওয়ায় শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।

ওই সময় তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত তাৎক্ষণিকভাবে তাকে জেরা করতে বলেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম তাকে জেরা শুরু করেন। জেরায় কয়েকটি প্রশ্ন করার পর তা পেছানোর আবেদন করলে বিচারক ১৫ জুন অবশিষ্ট জেরার দিন ধার্য করেন।

চ্যারিটেবল মামলার শুনানির শেষ হওয়ার পর বেলা সোয়া একটার দিকে অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সময় আবেদন করেন আইনজীবীরা। আবেদনে হাইকোর্টের দেওয়া পুনরায় তদন্তের আবেদন খারিজ করার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিলের শুনানি আগামী ৩ জুলাই ধার্য রয়েছে জানিয়ে আত্মপক্ষ শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করা হয়।

শুনানি শেষে আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৫ জুন ঠিক করেন। এরপর দুপুর ১টা ২২ মিনিটে খালেদা জিয়া আদালত ছেড়ে যান।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ মামলাটি করে দুদক।

২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

অন্যদিকে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ মামলায় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।

মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/বিইউ/জেডএ/মোআ)