তওবার মাস রমজান

প্রকাশ | ০৯ জুন ২০১৭, ১৫:৫৭

ইসলাম ডেস্ক

জীবনে কোনো পাপ করেননি এমন মানুষ খোঁজে পাওয়া যাবে না। মানুষের বৈশিষ্ট্যই হলো পাপ করা। তবে পাপের ওপর অবিচল থাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। মানুষ যত পাপই করুক একদিন না একদিন তাকে সঠিক পথে ফিরে আসতে হবেই। পাপমুক্ত জীবনের পথ তাকে ধরতে হবেই। মানুষের পরম কাক্সিক্ষত পাপমুক্ত জীবন গঠনের জন্য মাহে রমজানের কোনো বিকল্প নেই। কারণ বছরের যেকোনো সময়ের চেয়ে এ মাসে নিজেকে পাপমুক্ত রাখা সহজ। রমজানে বান্দা যখন বিগত দিনে কৃত পাপ থেকে তওবা করেন তখন তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। বান্দার বিনীত প্রার্থনা ছাড়া আল্লাহ সাধারণত ক্ষমা করেন না। এজন্য রমজানে চাই বেশি বেশি তওবা এবং আল্লাহর কাছে নিজেকে পুরোপুরি সোপর্দ।

তওবা কবুল হওয়ার জন্য সাধারণত তিনটি শর্ত-অন্যায় পরিত্যাগ করতে হবে, পাপের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে এবং পুনরায় সেই কাজ না করার অঙ্গীকার করতে হবে। তবে বান্দার হক নষ্ট হয়ে থাকলে প্রথমে সে ব্যক্তির সঙ্গে বিষয়টি সুরাহা করার পর এ তিনটি শর্ত পালন করতে হবে। সেই ব্যক্তির হক পরিশোধ করে কিংবা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পরই তওবার তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। বান্দার হক আদায় না করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেও তা কবুল করা হবে না।

বস্তুত বান্দার দুর্বলতা সম্পর্কে আল্লাহর জানা আছে বলে তিনি চান বান্দার সামান্য অনুভূতি। নিজের অন্যায়কে স্মরণ করে মানুষ যখন অনুতপ্ত হয় এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তখন তিনি ক্ষমা না করে পারেন না। এমনকি তওবাকারী বান্দার প্রতি আল্লাহ সবচেয়ে আনন্দিত। মানুষ যতবারই অন্যায় করুক, পাপে লিপ্ত হোক আল্লাহর তার অসীম দয়া ও করুণায় প্রতিবারই বান্দাকে মাফ করতে প্রস্তুত। তবে বান্দাকে চাইতে হবে; তওবা করতে হবে। রমজান হলো তওবা কবুলের মাস। রমজানের প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। অন্য মাসগুলোর তুলনায় রমজানে আরও সহজে বান্দার তওবা কবুল হয়। এ মাসে যে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন তাকে ক্ষমা করা হবে বলে আল্লাহর নবী (সা.) ঘোষণা করেছেন।

এজন্য রমজানে প্রত্যেকেই নিজেকে পরিচ্ছন্ন ও পাপমুক্ত করার সংকল্প করতে হবে। তওবা ও ইস্তেগফারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো মানুষের ক্ষতি করে থাকলে, কারও জীবন, সম্পদ বা সম্মানে আঘাত করে থাকলে প্রথমে তার কাছেই ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। কোনো অন্যায় কাজে লিপ্ত থাকলে এখনই তা পরিত্যাগ করতে হবে। কারও সম্পদ অন্যায়ভাবে দখল করে রাখলে অবিলম্বে তা ফেরত দিতে হবে। এরপর নিজের মধ্যে অনুশোচনাবোধ সৃষ্টি হলে আল্লাহ তায়ালা বিগত দিনের গোনাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন। অতীতে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হয়ে থাকলে আবার তওবা করতে হবে। তওবা ভঙ্গ হয়ে গেলেও আবার তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন। বান্দার বারবার গোনাহ এবং তওবার দ্বারাও আল্লাহ বিরক্ত হন না। আল্লাহ চান বান্দা যত অবাধ্যই হোক এক সময় তার দরবারে ফিরে আসুক।

(ঢাকাটাইমস/০৯জুন/জেবি)