বগুড়া-৪: এবার জাসদকে ছাড়তে নারাজ আ.লীগ

প্রকাশ | ১১ জুন ২০১৭, ১০:৪১ | আপডেট: ১১ জুন ২০১৭, ১৬:৩৩

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে

দশম সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ সংসদীয় আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। জোটের শরিক জাসদকে আসনটি ছেড়ে দেয় তারা। আর আসনটি তিনি নিজের করে নেন দলটির নির্বাচন বর্জনের সুযোগে। তখন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল আমীন বাচ্চু। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে তৎপর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। সেই সঙ্গে গত নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এবার নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পুরোপুরি। 

জেলার কাহালু উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা ও নন্দীগ্রাম উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বগুড়া-৪ আসন। এটি জামায়াতের সহিংসতাপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় এই নন্দীগ্রাম বারবার আলোচনায় এসেছে সহিংসতা-নাশকতার কারণে।

আসনটিতে বিএনপির অবস্থান খুবই শক্তিশালী। জামায়াতের প্রভাবও রয়েছে। তবে এবার জামায়াতের পক্ষে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়া সম্ভব নয় নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়ায়।

এবার এখানে বিভিন্ন দলের একাধিক নেতা নিজের নির্বাচনী ইচ্ছার কথা জানান দিচ্ছেন নানা কর্মসূচিতে। আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনসহ একাধিক নেতা। জাতীয় পার্টি এবং গত নির্বাচনে জয়ী জাসদও স্বপ্ন দেখছে আসনটিকে ঘিরে।  

আওয়ামী লীগের যেসব নেতা সক্রিয়

ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে শুরুতেই নাম আসে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের। তিনি নিয়মিত গণসংযোগ,নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন তিনি। মমতাজের ঘনিষ্ঠ একজন নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই আসনে বিএনপির অবস্থান যাই হোক না কেন মমতাজ ভাই গত কয়েক বছরে নিজের অবস্থান সংহত করেছেন। তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা আর নৌকার গ্রহণযোগ্যতায় তিনিই হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।’

এই আসনে কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরাজও নির্বাচনে আগ্রহী। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘দলের বিবেচনায় আমি মনোনয়ন পেলে এই এলাকার মানুষের ভালোবাসায় আমি   জয়ী হব।’ তিনি বলেন,‘জনগণ উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতেই নৌকায় আবারো ভোট দেবে।’

বিএনপিতে যাদের নাম

এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে আলোচিত হচ্ছে রাফী পান্নার নাম। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। তিনি নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার লক্ষ্যে মাঠে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীও।  

বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ফজলে রাব্বী তোহাও নির্বাচনে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন নেতারা। আরও আছেন জিয়া শিশু কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মোশারফ হোসেন। তবে তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন, তাই এলাকায় বেশি সময় দিতে পারছেন না।

নন্দীগ্রাম বিএনপির নেতা রাফী পান্না ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সারাজীবন বিএনপির জন্য কাজ করেছি। আসছে নির্বাচনে বেগম জিয়ার আর্শীবাদ পেলে অংশগ্রহণ করব। আমি আশাবাদী ধানের শীষ প্রতীকে জয়ী হয়ে জনগণের জন্য আরো বেশি কাজ করতে পারব।’

জামায়াত নেতার নামও আলোচনায়

নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল হলেও নির্বাচনী জোটের শরিক দলের প্রতীকে জামায়াতের অংশ নেয়ার সুযোগ আছে। তাই কাহালু উপজেলার চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির তায়েব আলীর পক্ষে দলের নেতা-কর্মীরা মাঠ তৈরির চেষ্টা করছেন।

নাশকতার মামলার আসামি তায়েব আলী নাশকতার একাধিক মামলার আসামি। তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত।  

জাসদ-জাতীয় পার্টির প্রস্তুতি

এই আসনে শক্তিশালী কোনো অবস্থান না থাকলেও জাসদ ২০১৪ সালে আসনটিতে পেয়ে যায় আওয়ামী লীগ তাদেরকে ছেড়ে দেয়ায়। সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন আশা করছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য হিসেবে তিনিই আগামীতে জোটের মনোনয়ন পাবেন। আর নৌকা প্রতীক তাকে এবারও নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে সাহায্য করবে।

দশম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল আমীন বাচ্চু, দলের যুব সংগঠন যুব সংহতির বগুড়া শাখার সভাপতি মোস্তফা কামাল ফারুক। তিনি নিয়মিত এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান এবং গণসংযোগে মাঠে রয়েছেন।

লাঙ্গল প্রতীক পাওয়ার আশায় মাঠে সক্রিয় জাতীয় তরুণ পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আছির উদ্দিন কবিরাজও।

জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতি মানুষ হয়ে তাদের প্রার্থীকেই বেছে নেবে।

ঢাকাটাইমস/১১জুন/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি