বৃষ্টিতে থই-থই বন্দরনগরী, বিদ্যুৎ নেই ১৬ ঘণ্টা

প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৭, ১৭:৩৮ | আপডেট: ১২ জুন ২০১৭, ২১:৩৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান, ঢাকাটাইমস

বৃষ্টির পানিতে থই-থই করছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। সেই সঙ্গে টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ নেই নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। বিশেষ করে ঈদের কেনাকাটা ব্যাহত হচ্ছে। এতে হতাশা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামজুড়ে রবিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয় মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত। বিকাল পাঁচটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টির যেন থামার কোনো লক্ষ্মণ নেই।

মাঝে মাঝে একটু কমে বৃষ্টির তীব্রতা, পরক্ষণেই শক্তি সঞ্চয় করে আবার টিনের চাল ফাঁটা বৃষ্টি। এতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় থই-থই করছে বৃষ্টির পানি। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও কোমর সমান। ফলে সড়কে যানবাহন চলাচলে যেমন ভোগান্তি পোহাচ্ছে। পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরাও পড়েছে নানা দুর্ভোগে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতে নগরীর নিম্নাঞ্চল বিশেষ করে আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক, শান্তিবাগ, হালিশহর, ছোটপুল, চকবাজার, বাকলিয়া, কাতালগঞ্জ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, বাকলিয়া, চকবাজার, মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেটসহ বিভিন্ন এলাকার কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমে গেছে।

এই জলাবদ্ধতার কারণে সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। খানাখন্দে ভরা বেশিরভাগ রাস্তা ডুবে থাকায় পথে পথে বিকল হয়েছে গাড়ি। বেশ কয়েকটি স্থানে রিকশা উল্টে আহত হয়েছেন যাত্রীরা।

এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের সাথে সমানতালে চলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ফলে নগরীর সবকটি বড় বড় মার্কেটসহ অলিগলি অন্ধকারে ডুবে থাকে দিনভর। বৃষ্টির কারণে ক্রেতা যেমন ছিল না; তেমনি লোডশেডিংয়ে বেচাকেনাও করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শুধু তাই নয়, টানা লোডশেডিংয়ে নগরবাসীর ফ্রিজ, এসি থেকে পানি ঝরতে শুরু করে। নগরীর মোহাম্মদপুর আবাসিক এলাকার গৃহিনী তারিন সুলতানা ঢাকাটাইমসকে জানান, রবিবার রাত ১২টা ৫০ মিনিটে বিদ্যুৎ গেছে, এখনো পর্যন্ত আসার খবর নেই। বৃষ্টির সাথে টানা ১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন এই আবাসিকের বাসিন্দারা। একইভাবে টানা বিদ্যুৎ না থাকার কথা জানান চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দারাও।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আঞ্চলিক সহকারী ব্যবস্থাপক হুমায়ুন আজাদ জানান, টানা ১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার কারণ লোডশেডিং নয়। চান্দগাঁও, মোহাম্মদপুর, মুরাদপুর, বাকলিয়াসহ নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে ত্রুটি, ট্রান্সফরমার বিকল বা ফিউজ পুড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ পায়নি। তবে বিকালে দিকে এসব ত্রুটি নিরসনে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

এদিকে আজ বিকাল ৩টা পর্যন্ত পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস ২৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার কথা জানিয়েছে। এর আগে সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড হয় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে কর্তব্যরত আবহাওয়াবিদ মাহমুদুল আলম ঢাকাটাইমসকে জানান, মৌসুমি নিম্নচাপের কারণে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দুপুর থেকে চট্টগ্রামে টানা ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরপর থেমে থেমে রাতভর ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পানিবন্দি মানুষদের দুর্ভোগ দেখতে যান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি আগ্রাবাদ এক্সেক সড়কের ব্যাপারি পাড়া অংশ পরিদর্শনে গিয়ে জমে থাকা পানিতে নামেন।

স্থানীয়রা জানান, মহেশখালের বাঁধ, সড়কের দুই পাশে নালা না থাকা এবং খাল-নালা পরিষ্কার না করাই জলাবদ্ধতার কারণ।

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/আইকে/জেবি)