‘গরিব মেরে ধনীকে সম্পদশালী করার বাজেট’
প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘গণবিরোধী’ আখ্যায়িত করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘এই সরকার গরিব মারার সরকার। গরিবকে শোষণ করে ধনী শ্রেণিকে আরও সম্পদশালী করার জন্যেই এই বাজেট দেয়া হয়েছে।’
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন দলগুলোর নেতা-কর্মীরা। এরপর মিছিল নিয়ে কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন দিয়ে নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবসংলগ্ন সচিবালয়মুখী সড়কের দিকে যান তারা। সেখানে পুলিশ তাদের বাধা দেয়, এসময় রাস্তায় অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সেখানে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, গ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, গণবিরোধী বাজেট দেয়ার প্রতিবাদে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাকি বলেন, ‘হাওরের দুর্গত এলাকার মানুষের প্রতি সরকারের কোনো নজর নেই। নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা চাপাচ্ছে সরকার। হাওরে এক কোটি মানুষ ঠিক মতো সেহরি ও ইফতার করতে পারছে না।’ এ সময় তিনি হাওরের জলমহালগুলি ইজারা না দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘এই বাজেটকে অর্থমন্ত্রী তার শ্রেষ্ঠ বাজেট বলছেন। এক লাখ টাকা থাকলেই নাকি তিনি ধনী, তাহলে যারা তিন বেলা খেতে পারে তাদেরকেও ভ্যাটের আওতায় আনুন।’
সরকার এখন বেপরোয়া উল্লেখ করে সাকি বলেন, ‘পাবলিকের কাছ থেকে ট্যাক্স নেয়া, লুণ্ঠন ও দুর্নীতিবাজদের তোষণ করা বাংলাদেশে এর আগে হয়নি। জনগণের সমস্ত খাত কমিয়ে দেয়া হয়েছে বাজেটে। সরকার জনগণের কাছ থেকে টাকা লুটে নিচ্ছে, আর বিদেশে পাচার করছে। এই রকম একটি সরকার আজ ক্ষমতায় বসে আছে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কাস পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকার নিজেদেরকে কৃষক, শ্রমিকবান্ধব বলছে, অথচ বাজেটে তাদের কোনো আলোচনা নাই। কৃষি খাতে বাজেট কমেছে, হাওরের দুর্যোগকবলিত এলাকার জন্যে কোনো থোক বরাদ্দ নেই বাজেটে।’
প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে সাইফুল হক বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এখন লুটপাট হচ্ছে, লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আবগারি শুল্ক আরোপ করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নতুন করে লুণ্ঠনের পথ পরিষ্কার করবে। বাজেটে ভ্যাট নামে কষ্ট চাপিয়ে দেয়া অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারন সম্পাদক শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘সরকার এবং অর্থমন্ত্রী পাগল না, তাদের শ্রেণি স্বার্থ রক্ষার জন্যেই এই বাজেট দিয়েছে তারা। শিক্ষায় বাজেট কমেছে, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযুদ্ধের ভাতা নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে।’ এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে এসেছে বলেও জনান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/জিএম/জেবি)