পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য: চীন
পাকিস্তান এখন সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য বলে মন্তব্য করেছে চীন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে পাকিস্তানে বাড়তে থাকা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সম্পর্কে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে চীন। তা যেকোনো সময় নাশকতার কবলে পড়তে পারে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
বেলুচিস্তানে এক সপ্তাহ আগেই ঘটেছে অপ্রীতিকর ঘটনাটা। দুই চীনা নাগরিককে সন্ত্রাসবাদীরা অপহরণ করে হত্যা করে। ইসলামিক স্টেট(আইএস)’র তাদের হত্যা করতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে চীন। কর্মসূত্রে পাকিস্তানে গিয়েছেন এমন চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে ইসলামাবাদকে— বেশ কড়াভাবেই এই বার্তা দেয়া হয় বেইজিং-এর তরফ থেকে। এ বার গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে ফের পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিতে চাইল চীন।
ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড(ওবিওআর) নীতির বাস্তবায়নে চীন এখন অত্যন্ত উৎসাহী। চীনের এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় এ যাবৎ যেসব প্রকল্প গৃহীত হয়েছে, তারমধ্যে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরই (সিপিইসি) সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
এই প্রকল্পের জন্য চীন ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। আবার এই করিডরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে নানা প্রকল্প। সেসব প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য চীনা প্রকৌশলী, শ্রমিক এবং অন্যান্য পেশার নাগরিকদের প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে পাকিস্তানে। এই চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে বেইজিং কোনো রকম আপোসের পক্ষপাতী নয় বলে গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ যত এগোবে চীনের প্রকৌশলী, শ্রমিক ও নাগরিকরা ততই বেশি সংখ্যায় সেই সব দেশে কাজ করতে যাবেন, যে সব দেশ এই প্রকল্পের পথে পড়বে। এতে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।’
পাকিস্তানে কাজ করতে গিয়ে চীনা নাগরিকরা যে ধরনের বিপদের মুখে পড়ছেন, তার প্রেক্ষিতেই যে চীন সংবাদপত্রে এ কথা লেখা হয়েছে, তা নিয়ে কোনো মহলেরই সংশয় নেই।চীন অবশ্য নিজেকে সন্ত্রাসবাদীদের অন্যতম বড় নিশানা হিসেবে এখনও মনে করছে না।
গ্লোবাল টাইমসে লেখা হয়েছে, ‘এমন নয় যে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি এখন চীনকেই তাদের নিশানা বানিয়েছে।’
চীনের অনেকগুলি সংস্থা এখন বহুজাতিক হয়ে গিয়েছে। সেই সূত্রে আগের চেয়ে অনেক বেশি চীনা নাগরিক এখন কর্মসূত্রে বিদেশে থাকছেন। এই প্রসারের কারণেই চীনারা এখন আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় সন্ত্রাসের কবলে পড়ছেন।
পাকিস্তানে কর্মরত চীনা নাগরিকদের বিপদ অদূর ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে বেইজিং। পৃথিবীর যে দেশগুলিতে সন্ত্রাসের বিপদ সবচেয়ে বেশি, সেই দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল বলে গ্লোবাল টাইমস দাবি করেছে।
পাকিস্তানকে ‘চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘বেইজিং যে ইসলামাবাদে বিপুল বিনিয়োগ করবে, সেটাই কাঙ্ক্ষিত। ফলে সহজেই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।’
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এসআই)