বনানী ‘ধর্ষণ’: বিচার শুরুর শুনানি ৯ জুলাই

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৭, ১২:১৬ | আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭, ১৬:৪৪

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার দুই বন্ধুসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি হবে ৯ জুলাই। আর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়েই শুরু হবে বিচারের আনুষ্ঠানিকতা।

সোমবার এই মামলায় পুলিশের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ঢাকার দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সফিউল আজম এই আদেশ দেন। সেই সঙ্গে তিনি পাঁচ আসামির পক্ষে জামিন আবেদনও নাকচ করেছেন।

আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ছাড়া এই মামলার আসামিরা হলেন তার বন্ধু নাঈম আশরাফ, রেগনাম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ এবং সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।

গত ২৮ মার্চ হোটেল রেইনট্রিতে দুই তরুণীকে সাফাতের জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে বনানী থানায় মামলা হয় ৬ মে। এতে বলা হয়, সাফাত ও নাঈম আশরাফ তাদেরকে ধর্ষণ করেছেন, আর বিল্লাল এর ভিডিও ধারণ করেছেন। আর রহমত আলী দুই জনের বাসায় গিয়ে তাদেরকে হুমকি দিয়েছেন। এ ছাড়া সাদমানই দুই তরুণীকে সাফাতের হয়ে দাওয়াত করেন।

মামলার এক মাস পর ৮ জুন আদালতে এই অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এতে সাফাত ও নাঈমের বিরুদ্ধে ধর্ষণে অংশ নেয়া এবং বাকি তিন জনকে সহযোগী বলা হয়। এই মামলায় মোট ৪৭ জনকে সাক্ষী করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

গ্রেপ্তারের পর পাঁচ আসামির মধ্যে চার জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এই মামলায়। হবে এক মাসেরও বেশি সময় পর মেডিকেল পরীক্ষা হওয়ায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা।

দেশজুড়ে আলোড়ন তোলা এই মামলার তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয় পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) মিজানুর রহমানকে এই কমিটির প্রধান করা হয়। সদস্য হিসাবে ছিলেন ডিএমপির গোয়েন্দা (নর্থ) বিভাগের উপ কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ এবং উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন।

গত ১১ মে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার হন প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফ। ১৫ মে সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনকে রাজধানীর পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডের ইব্রাহিম হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০ এর একটি দল। একই দিন সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ওরফে আবুল কালাম আযাদকে পুরান ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারও দুই দিন পর ১৭ মে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে নাঈম আশরাফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ১২ মে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সংবাদ সম্মেলনে জানান, তাদের প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এই মামলায় সাফাতের নাম আসার পর আপন জুয়েলার্সের ছয়টি বিক্রয়কেন্দ্রে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বৈধ কাগজপত্রহীন সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ এবং ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করে। পরে সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা পড়ে।

হোটেল রেইনট্রির বিরুদ্ধেও মামলার কথা জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে অনুমোদন ছাড়া মদ বিক্রি, ভ্যাট ফাঁকি এবং আবাসিক এলাকায় রাজউকের অনুমতি ছাড়া হোটেল পরিচালনার অভিযোগ এসেছে।

ঢাকাটাইমস/১৯জুন/আরজেড/ডব্লিউবি