‘আ.লীগের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেই মহাসচিবের ওপর হামলা’
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ দাবি করেন।
রবিবার চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ি ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে যাওয়ার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে।
বিএনপির পক্ষ থেকে এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দায়ী করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হাছান মাহমুদ তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার দুইজনকে ধাক্কা দেয়ায় ‘উত্তেজিত জনতা’মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা করেছে।
এই হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পুনরুজ্জীবিত ও বহুব্যাপী সন্ত্রাসের আরেকটি বিপজ্জনক মাত্রা দৃশ্যমান হলো। গুন্ডামির এই নবসংস্করণ জনসমর্থন ছাড়া দুঃশাসন টিকিয়ে রাখারই ইঙ্গিতবহ। গণতন্ত্রের সর্বশেষ অস্তিত্বকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়ার জন্যই এটি একটি সহিংস আগ্রাসী পদক্ষেপ। এরা বিরোধী দলের মানবকল্যানধর্মী সমাজসেবামূলক কর্মসূচিকেও বানচাল করতে হিংস্র আক্রমণ চালায়।’
সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘গণবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এক অজানা ভয় থেকে আওয়ামী লীগের মনস্তাত্বিক আবহাওয়া বদলে গেছে। সেখানে পতনের আশঙ্কায় তারা গুন্ডামিতে নেমে পড়েছে। এখন সবকিছু হারিয়ে আওয়ামী লীগ শেষ ভরসা হিসেবে গুন্ডা রাজত্ব কায়েম করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। সেজন্যই গণতন্ত্র ও উন্নয়নের তকমাধারী আওয়ামী লীগ নিরপরাধ, নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষের ওপর চড়াও হচ্ছে এবং লুট আর দখলবাজী অব্যাহত রাখতে সাধারণ মানুষকে পিটিয়ে মারছে।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার দুঃশাসনের প্রকোপ এখন বিপজ্জনক রূপ ধারণ করেছে। প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহ, বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ, নাগরিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিবর্গ, মুক্তচিন্তার লেখক, বিবেকবান সাংবাদিক সবাই শেখ হাসিনার চরম রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার।’
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসার আগেই গুন্ডামি ও সন্ত্রাসকে যেভাবে প্রজনন করা হচ্ছে তাতে আগামী জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হলে অবাধ-সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কী শোচনীয় বিপর্যয় ঘটবে তা সহজেই অনুমেয়। সেই নির্বাচন হবে একতরফা, সন্ত্রাসকবলিত। ভোটের দিন ও এর পূর্বাপর অবস্থা চরম অরাজকতায় ঢেকে থাকবে। তাই আমরা দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে চাই-শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না।’
বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে দলটির এই নেতা বলেন, ‘যারা প্রাকৃতিক মহাদুর্যোগে নিপতিত উপদ্রুত অসহায় মানুষকে ফেলে নির্বিঘ্নে বিদেশ সফর করতে পারে তারা সবকিছুই করতে পারে।’
এসময় মহাসচিববের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন রিজভী।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/বিইউ/জেবি)