এডিসির বদান্যতায় কামরুলের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণ
দারিদ্র্যকে জয় করে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে কামরুল ইসলাম। ইটনা মহেশ চন্দ্র মডেল শিক্ষা নিকেতন থেকে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হিসেবে এই কৃতিত্বপূর্ণ ফল করে সে।
অদম্য এই মেধাবী ভালো ফলাফল করে আঁধার ঘরে আলো ছড়ালেও পরিবারের দারিদ্র্যের কারণে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসে তার। অর্থাভাবে কামরুলের কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে দেখা দেয় চরম অনিশ্চয়তা।
তবে কামরুলের স্বপ্ন পূরণে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামিল। তিনি কামরুলের কলেজে ভর্তি এবং বইপত্র কিনে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন।
সম্প্রতি উপ-সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন খুব অল্প সময়ে কিশোরগঞ্জবাসীর মন জয় করা জনবান্ধব এই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন সহযোগিতায় কামরুলও অভিভূত। নতুন উদ্যমে লেখাপড়া শুরু করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে কামরুল।
সোমবার সকালে আক্তার জামিলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নগদ টাকা ও বইপত্র বুঝে নেয় কামরুল ইসলাম। এ সময় অন্যান্য খরচ ও থাকা-খাওয়ার ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তরফদার মো. আক্তার জামিল। কামরুলকে তিনি আরও ভালোভাবে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার উপদেশও দেন।
এমন আশ্বাসে পুলকিত কামরুল ঢাকাটাইমসকে জানায় ‘ভালো রেজাল্ট করলেও কলেজে ভর্তি করার মতো সামর্থ্য ছিল না আমার পরিবারের। ভেবেছিলাম, আমার হয়তো আর লেখাপড়া করা হবে না। কিন্তু পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর জামিল স্যারের উৎসাহ ও সহায়তায় আমি এখন আবার নতুন করে লেখাপড়া করার স্বপ্ন দেখছি।’
কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত ইটনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সড়কহাটির বাসিন্দা দিনমজুর মো. নায়েব আলীর তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় কামরুল ইসলাম। পরিবারের পাঁচ সদস্যের মুখে দুই বেলা আহার তুলে দিতে নিজ এলাকা ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বিক্রি করেন নায়েব আলী। সংসারে অভাব-অনটনের কারণে দিনমজুর বাবার সঙ্গে কামরুলকেও এলাকায় কৃষি শ্রমিকের কাজ করতে হয়। অভাবকে সঙ্গী করেই সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/প্রতিনিধি/জেবি)