রাঙামাটিতে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবের শঙ্কা

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি থেকে
| আপডেট : ১৯ জুন ২০১৭, ২২:৫২ | প্রকাশিত : ১৯ জুন ২০১৭, ২০:২০

পাহাড় ধসের দুর্যোগের পর এবার আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মাঝে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশুদ্ধ পানি ও সচেতনতার অভাবে এই রোগ ছড়াতে পারে বলছেন চিকিৎসকরা।

এই আশঙ্কায় রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খুলেছে চিকিৎসা কেন্দ্র। স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে চিকিৎসা কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে সোমবার রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

জেলা সিভিল সার্জন শহীদ তালুকদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, আবহাওয়া ঠান্ডা হওয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি দুর্যোগপরবর্তী সময়ে ডায়রিয়া আমাশয় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সেসব রোগের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত ওষুধ আনা হয়েছে।

রবিবার রাঙামাটি এক লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ৫০ হাজার ওরস্যালাইন আনা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য ওষুধ আনা হয়েছে।

সিভিল সার্জন বলেন, এই সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়াদের খাওয়ার আগে এবং খাওয়ার পরে হাত পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

খাদ্য সরবরাহ করছে পুলিশ-বিজিবি-সেনাবাহিনী

পাহাড় ধসের দুর্যোগের পর জেলা প্রশাসনের খোলা ১৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য সরবরাহ করছেন জেলা পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। কেন্দ্রভিত্তিক দায়িত্ব নিয়ে সকাল-বিকাল খাদ্য সরবরাহ করছেন তারা।

রাঙামাটি পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, এই দুর্যোগ মোকাবেলা সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করা প্রয়োজন তা তারা করে যাচ্ছেন। পুলিশ হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ক্যাম্প খোলা হয়েছে। এখান থেকে সম্পূর্ণ বিনা খরচে ওষুধ ও চিকিৎসা পাবেন রোগীরা।

আশ্রয়কেন্দ্রের মানবেতর জীবন

সোমবার আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, মানবেতর জীবন পার করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। রাঙামাটি সরকারি কলেজের আশ্রয়কেন্দ্রের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন সকাল ও বিকাল বেলা খাবার ছাড়া তাদের আর কোনো সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে না। মশারী না থাকায় রাতভর মশার কামড় খেতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া পরিধেয় কাপড় ঠান্ডা থেকে পরিত্রাণ পেতে কম্বল কিছুই দেয়া হয়নি তাদের।

এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক, যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি

সোমবার রাঙামাটি শহরে দ্রব্যমূল্য পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে। অকটেন সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে কোনো কিছুর সংকট নেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

রাঙামাটি সাথে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ সোমবার পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি। দিনভর বৃষ্টি হওয়ায় সড়ক সংস্কারের কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। খাগড়াছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আবু মুছা ঢাকাটাইমসকে বলেন, মঙ্গলবার বৃষ্টি না হলে ভারী যানবাহন ছাড়া হালকা যানবাহন রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যেতে পারবে। তবে অন্যান্যগুলো সময় লাগবে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ভোর ও সকালে রাঙামাটি জেলা বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে সেনাবাহিনীর চার সদস্যসহ ১১৫ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে রাঙামাটি শহর এলাকায় মারা যায় ৬৭ জন, কাউখালী উপজেলায় ২৩ জন, কাপ্তাই উপজেলায় ১৮ জন, বিলাইছড়ি তিনজন এবং জুরাছড়ি উপজেলায় মারা গেছে চারজন।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :