জনগণ ভালোবাসে তাই স্যার প্রার্থী করেছেন: দিলারা

মোসাদ্দেক বশির
| আপডেট : ২১ জুন ২০১৭, ১৫:৪৬ | প্রকাশিত : ২১ জুন ২০১৭, ০৮:৪০

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো বছর দেড়েক বাকি থাকলেও দলগুলোর ভেতরে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বেশ কয়েক জায়গায় দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যে। এ রকমই একটি আসন গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ি), যেখানে দলের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার শিল্পীকে। তার সঙ্গে এরশাদের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ গুঞ্জন তুলেছিল। নিজের রাজনীতি, প্রার্থিতা, এরশাদের সঙ্গে তার ছবি এবং পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় পার্টির এ তরুণ নেত্রী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকাটাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মোসাদ্দেক বশির।

ঢাকাটাইমস: কেমন আছেন?

দিলারা: ভালো আছি। রমজান মাস তো, একটু ব্যস্ততার মধ্যে যাচ্ছে সময়। পার্টির ইফতার মাহফিলগুলোতে যেতে হচ্ছে। গত ১৪ জুন পলাশবাড়িতে জাতীয় পার্টির আয়োজিত ইফতার মাহফিলে পার্টির চেয়ারম্যান এসেছিলেন। সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ততায় আছি।

ঢাকাটাইমস: চেয়ারম্যান তো আপনাকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন...

দিলারা: হ্যাঁ, আমি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলাম। পরে পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করি। গত কয়েক বছরে তিনি এখানে তিনবার এসেছেন। তিনবারই আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। যেহেতু তার নির্দেশে আমি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি, তাই তিনি বারবার এখানে ছুটে আসেন।

ঢাকাটাইমস: নির্বাচনের এত আগে প্রার্থী ঘোষণাকে কীভাবে দেখছেন?

দিলারা: চেয়ারম্যান আমাকে স্নেহ করেন, ভালোবাসেন। আমিও তাকে শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। চেয়ারম্যানের প্রতি আমি অনেক অনুগত। জনগণের প্রতিও আমি দায়বদ্ধ। জনগণও আমাকে ভালোবাসে। তাই স্যার আমাকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমিও ইতিমধ্যে আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছি।

ঢাকাটাইমস: নির্বাচনের জন্য এখন কী কাজ করছেন?

দিলারা: ইতিমধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছি। নিয়মিত এলাকায় থাকছি। ঢাকা থেকে রোজার আগে এসেছি, যাব ঈদের এক সপ্তাহ পরে। আমার নির্বাচনী আসনে দুই উপজেলায় ২০টি ইউনিয়ন ও ১৮০টা ওয়ার্ড। এগুলোতে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় ১০টি ইউনিয়নে গণসংযোগ শেষ করেছি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ইউনিয়নগুলো শেষ করতে পারব।

ঢাকাটাইমস: এই আসন থেকে তো বরাবরই জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হন।

দিলারা: হ্যাঁ, গত ৩০ বছর ধরে এ আসনটি থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হচ্ছে। আগামী দিনেও এ আসন জাতীয় পার্টিরই থাকবে ইনশাল্লাহ।

ঢাকাটাইমস: রাজনীতিতে এলেন কীভাবে?

দিলারা: আমার বাবা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছোট সময় থেকেই বিষয়টি দেখে আসছি। তবে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে জড়িত হয় ব্যারিস্টারি পড়া শেষ করে দেশে ফেরার পর।

ঢাকাটাইমস: এরশাদ সাহেবের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে?

দিলারা: ব্যারিস্টারি পড়া শেষ করার পর চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরিচয় হয়।

ঢাকাটাইমস: আপনি স্বতঃপ্রাণোদিত হয়ে এরশাদের কাছে গিয়েছিলেন, নাকি এরশাদ সাহেব আপনাকে ডেকেছিলেন?

দিলারা: ব্যারিস্টারি শেষে দেশে ফিরে চেয়ারম্যানের দোয়া নিতে গিয়েছিলাম। তবে আমিই গিয়েছিলাম, নাকি স্যার আমাকে ডেকেছিলেন সেটা এখন মনে নেই। উত্তরবঙ্গের ১১টি জেলার মধ্যে আমিই প্রথম নারী ব্যারিস্টার। গাইবান্ধা জেলায় একমাত্র আমিই নারী ব্যারিস্টার। ব্যারিস্টার হওয়ার কারণে উনি আমাকে রাজনীতিতে আসতে বললেন।

ঢাকাটাইমস: এরপর...

দিলারা: আমি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে। তিন বছর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলাম। এরপর যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করি। এরপর স্যার আমাকে তার রাজনিতিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। গত সম্মেলনের পর আমাকে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়।

ঢাকাটাইমস: নারীদের রাজনীতির ক্ষেত্রে কি কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে?

দিলারা: অনেক অনেক। নারীদের অনেক প্রতিবন্ধকতা। অনেক যন্ত্রণা। একজন ছেলের সেটা নেই।

ঢাকাটাইমস: কেমন...

দিলারা: আমাদের অনেক কিছু শুনতে হয়, যেটা একজন ছেলের ক্ষেত্রে নেই।

ঢাকাটাইমস: পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আপনার একটা সম্পর্কের বিষয়ে কিছু কথা উঠেছিল...

দিলারা: দেখেন, একটা মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠানের ছবি দিয়ে কীভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রাচার করা হলো। স্যার এসেছিলেন আমাদের পার্টি অফিসের একটা হল রুম উদ্বোধনের জন্য। সেখানে একটা মিলাদ মাহফিল হয়। আমি কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে তার পাশে থাকব সেটাই স্বাভাবিক। স্যার ছিলেন টুপি পরা, আর আমার মাথায় ছিল কাপড়। সেটা নিয়ে কত কথাই না হলো। এটাই একজন নারীর জন্য প্রতিবন্ধকতা। একটা ছেলের ক্ষেত্রে কি এটা হতো? হতো না।

ঢাকাটাইমস: আপনি আইন পেশায় কি নিয়মিত?

দিলারা: আমি ২০০৭ সালে ব্যারিস্টারি পড়া শেষ করে দেশে আসি। ব্যারিস্টার রফিকুল হক আমার সিনিয়র। ২০০৯ সালে আমি আইনজীবী হিসেবে বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত হই। ২০১১ সালে হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হই। তবে রাজনীতি করার কারণে এলাকায় থাকতে হয় বেশি। ঢাকায় এক-দুই মাস থাকলে এলাকায় থাকি এক-দুই মাস। এই জন্য আইন পেশায় ব্যঘাত ঘটছে।

ঢাকাটাইমস: এলাকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হলে কীভাবে সহযোগিতা করেন?

দিলারা: সেটা করি। আমার সহযোগী আইনজীবী বন্ধুদের মাধ্যমে করি।

ঢাকাটাইমস: আপনার পরিবারের বিষয়ে বলুন।

দিলারা: আমি এখনো অবিবাহিত। বাবা-মা বেঁচে আছেন। বাবা ব্যবসায়ী। আমরা দুই ভাইবোন। আমি বড়। ভাই ছোট। ভাই ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ, এমবিএ পাস করার পর বাবার ব্যবসা দেখছে।

ঢাকাটাইমস: পড়ালেখা কোথায় করেছেন?

দিলারা: এসএসসি পলাশ বাড়ি পেয়ারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এইচএসসি পলাশ বাড়ি সরকারি কলেজ থেকে। এরপর লন্ডনে গিয়ে এ লেভেল সম্পন্ন এবং ল-এর ওপর ডিপ্লোমা করেছি। এরপর এলএলবি ও স্নাতকোত্তর। লিংকনস ইন থেকে বার অ্যাট ল শেষ করেছি।

ঢাকাটাইমস: আপনাকে ধন্যবাদ।

দিলারা: আপনাকেও ধন্যবাদ।

(ঢাকাটাইমস/২০জুন/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

ভারতীয় পণ্য বর্জন চলবে: ফারুক

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :