ব্যস্ত হয়ে উঠছে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুট

ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর (মাদারীপুর) থেকে
| আপডেট : ২১ জুন ২০১৭, ১৪:০৭ | প্রকাশিত : ২১ জুন ২০১৭, ১৪:০৪

সরকারিভাবে ঈদের ছুটি এখনো শুরু না হলেও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষ ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরে ফেরা শুরু করেছেন। সরকারি ছুটি শুরু হয়ে গেলে প্রচণ্ড ভিড় বাড়ার আশঙ্কা থাকায় আগেভাগেই ঝামেলা এড়াতে বেশির ভাগ পরিবারের নারী ও শিশুদের আগাম পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে।

বুধবার ভোর থেকেই ঘরে ফেরা মানুষগুলোর মধ্যে নারী ও শিশুদের দেখা গেছে। ফলে সাধারণ সময়ের চেয়ে ব্যস্ততা বাড়ছে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগের জন্য দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম নৌপথ শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ঘাটে। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল ও শুক্রবার থেকে ঘরে ফেরা যাত্রীদের চাপ পুরোপুরিভাবে বাড়বে বলে জানান ঘাট কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে বুধবার ভোরে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, লঞ্চ-স্পিডবোটে করে আসতে শুরু করেছে সাধারণ যাত্রীরা। সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠছে এই নৌরুট। তবে ঢাকাগামী যাত্রীদের সংখ্যা খুবই কম। লঞ্চগুলো অল্প পরিমাণ যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে কাঁঠালবাড়ী ঘাট।

বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা গেছে,কাওড়াকান্দি থেকে কাঁঠালবাড়ীতে ঘাট স্থানান্তরের পর এই প্রথম ঈদের চাপ যাবে নতুন এই কাঁঠালবাড়ী ঘাট দিয়ে। যাত্রীদের দূর্ভোগ এড়াতে ঘাট এলাকায় নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। প্রস্তুত রয়েছে রোরোসহ সকল ফেরি, প্রায় ৮৬টি লঞ্চ ও দুই শতাধিক স্পিডবোট।

এদিকে ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়ক থেকে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে পৌঁছাতে এবং ঘাট থেকে বের হতে আলাদা দুটি সড়ক রয়েছে। অর্থাৎ এক সড়ক দিয়ে গাড়ি ঘাটে প্রবেশ করবে আর অন্য সড়ক দিয়ে ঘাট থেকে বের হবে। ঘাট কর্তৃপক্ষ এতে যানজটের আশঙ্কা না করলেও ছোট ছোট গাড়ি প্রবেশের ফলে যানজট সৃষ্টি হতে পারে বলে যাত্রীরা ধারণা করছে। মূল সড়ক থেকে ঘাটে প্রবেশের সড়কটির প্রশস্ততা তুলনামূলকভাবে বেশ কম। আর স্থানীয় একটি বাজারের মধ্য দিয়ে আসতে হয় বিধায় এই সড়কে যানজট লেগে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না যাত্রীরা। ইতোপূর্বে এই সড়কটিতে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল বেশ কয়েকবার। আর ঈদের সময় গাড়ির চাপ বাড়ল যানজট সৃষ্টিও হতে পারে। সাধারণ যাত্রীদের ধারণা, যদি এই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয় তবে বেশ ভোগান্তিতে পড়বে ঘরে ফেরা মানুষেরা।

বিআইডব্লিউটিএ’এর কাঁঠালবাড়ী ঘাটের টার্মিনাল পরিদর্শক এবিএস মাহমুদ বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে এই নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো প্রস্তুত রয়েছে। যেহেতু বর্ষা মৌসুম, তাই সতর্কতার সাথেই লঞ্চ চলাচল করবে। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কোন সুযোগ নেই লঞ্চে।’

বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ী ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘নৌরুটে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে সব ফেরি প্রস্তুত রয়েছে। বৈরী আবহাওয়া দেখা দিলে ফেরিতে করেও যাত্রী পার করা হবে। তাছাড়া ফেরি সার্ভিস সচল থাকায় আশা করা যায় ঘাট এলাকায় তেমন কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতর সৃষ্টি হবে না।’

এদিকে আসন্ন ঈদে ঘাট এলাকায় যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে প্রায় ৭০টি সিদ্ধান্ত।

গত রবিবার এ বিষয়ে প্রশাসন ঘাট এলাকায় এক প্রস্তুতিসভাও করেছে।

সভায় কাঁঠালবাড়ি ঘাটে সিসি টিভি স্থাপন, স্টিকারবিহীন লোকাল যানবাহন কাওরাকান্দি ঘাটে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, লঞ্চের কাটা সার্ভিস কাওড়াকান্দি ঘাটে স্থানান্তর, যাত্রীর চাপ হলে ফেরিতে পারাপার, পদ্মায় পুলিশের টহল, যাত্রীদের সেনেটারি নিশ্চিতকরণ, ধারণক্ষমতার বাইরে যাত্রী বহনে নিষেধাজ্ঞা, স্পিডবোটের ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর পারাপারে নিষেধাজ্ঞা, সড়ক পরিবহনের ক্ষেত্রে ভাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রী উঠানোতে নিষেধাজ্ঞা, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিষয়ে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, ঈদের আগে-পরের আট দিন ঘাট প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করাসহ প্রয়োজনীয় একাধিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে ঘাট ব্যবস্থাপনা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ জানান, ঘাটে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা নির্বিঘেœ ঘরে ফিরতে পারবে।’

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :