ঈদ বাজার: নড়াইলে চাহিদা বেড়েছে জুতা-স্বর্ণালঙ্কারেরও

ফরহাদ খান, নড়াইল
 | প্রকাশিত : ২১ জুন ২০১৭, ১৬:১০

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদের আগে নতুন পোশাক কেনার আনন্দ। তাই ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপণীবিতানগুলোতে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। নতুন পোশাকের পাশাপাশি জুতা-স্যান্ডেল, স্বর্ণালঙ্কার, মোটরসাইকেল ও টেলিভিশনের বেচাকেনাও চলছে। সকাল থেকে রাত অবধি নড়াইলের বিভিন্ন বিপণীবিতানগুলোতে ছুটছেন ক্রেতারা। সর্বত্রই উপচেপড়া ভিড়।

বিক্রেতারা জানান, এবার বেশ আগে থেকেই বেচাকেনা জমে উঠেছে। মাঝে-মধ্যে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করলেও ঈদ বাজারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি।

তাই নড়াইল সদরসহ লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার সকল বিপণীবিতানগুলোতে সকাল থেকে রাত অবধি ভিড় করছেন সব বয়সের মানুষ।

নড়াইল রূপগঞ্জ বাজারের শিলামনি গার্মেন্টসের স্বত্ত্বাধিকারী অনিমেষ দত্ত বলেন, ১০ রোজার পর থেকে এবার বেচাকেনা জমে উঠেছে। আশা করছি, ক্রেতার চাপ আরো বাড়বে। তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন রকমের পোশাকের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের পোশাকও চলছে।

কালিয়ার মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মেয়েদের লং ও সর্টস্কাট, ডাউন ও স্ক্রিন ফ্রগসহ লেহাঙ্গার চাহিদা রয়েছে। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকার মধ্যে এসব পোশাক বিক্রি করছেন। নারীরা শাড়িও কিনছেন বেশ।

রূপগঞ্জের সমীর কুমার রায় বলেন, বিভিন্ন নকশা ও কারুচার্যের পোশাক রয়েছে আমাদের দোকানে। সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতারা আসছেন। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। তবে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সমস্যা হচ্ছে।

কালিয়া উপজেলার বেন্দা এলাকার সাদিয়া বলেন, ঈদের পোশাক কিনতে এবারই প্রথম জেলা শহরে এসেছি। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করে ভালো লাগছে।

রূপগঞ্জের শেখ গামের্ন্টস অ্যান্ড পাঞ্জাবি ঘরের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক জানান, ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৩ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর পাঞ্জাবির দাম একটু বেশি। ভ্যাটের কারণে দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

লোহাগড়া উপজেলার কাশেম সুপার মার্কেটে কারিমা লেডিস কর্ণারের ক্রেতা মাহিমা ও শারমিন জানান, লং ও সর্টস্কাট এবং লেহাঙ্গা কিনতে পেরে আনন্দিত তারা।

হৃদয়সহ তার বন্ধুরা এসেছেন জিন্স প্যান্ট ও পাঞ্জাবি কিনতে। বিভিন্ন দোকান ঘুরে পছন্দের পোশাক খুঁজছেন তারা। নড়াইলের ‘পায়ে পায়ে সু’ বিক্রেতা কাজী নূরুন্নবী বলেন, এ বছর বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ঈদ যত এগিয়ে আসছে, ক্রেতা সমাগম তত বাড়ছে। দেশি জুতার পাশাপাশি ভারতীয় ও চায়না জুতা, স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে।

রেক্স টেইলার্সের দর্জিরা জানান, রোজার প্রথম থেকেই পোশাক তৈরির অর্ডার পেয়েছেন তারা। প্রচণ্ড কাজের চাপে ২০ রোজার পর থেকে পোশাক তৈরির অর্ডার বন্ধ রেখেছেন। কারিগরি খরচ বেড়ে যাওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার মজুরি খরচ কিছুটা বেড়েছে বলেও জানান তারা।

অন্যান্য পোশাক কারিগররাও অর্ডার নেয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। বিশেষ প্রয়োজনে দু-একটা অর্ডার নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

দর্জি একরাম হোসেন বলেন, প্রথম রোজা থেকে কাজ শুরু করেছি; চাঁদ রাত পর্যন্ত কাজ চলবে। অর্ডার নেয়া কাজগুলো ভালোভাবে শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য। আর যতগুলো পোশাক তৈরি করব, সেই হিসেবে মজুরি পাব।

শিল্পী জুয়েলার্সের মালিক বলেন, ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাকের পাশাপাশি স্বর্ণালংকার তৈরির কাজ মোটামুটি চলছে। বিয়েশাদি উপলক্ষে ঈদের পরে চাপ আরেকটু বাড়বে বলে আশা করছি। এছাড়া নতুন পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন রঙের চুঁড়ি, ফিতা, লিপস্টিক, নেইলপলিসসহ সাজ-সজ্জার সামগ্রী কিনে নিচ্ছেন তরুণীরা।

এদিকে, ঈদ উপলক্ষে তরুণদের পছন্দ হিসেবে মোটরসাইকেল বেচাকেনাও বেড়েছে।

রূপগঞ্জের ভেনাস অটোর ব্যবস্থাপক নাজমুল আলম বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন ব্রান্ডের দুই থেকে তিনটি মোটরসাইকেল বিক্রি করছি। বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতেও অন্য সময়ের তুলনায় মোটরসাইকেল বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া ঈদে টেলিভিশন বেচাকেনাও চলছে। সবমিলে জমজমাট নড়াইলের ঈদ বাজার।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :