ভারতীয় শাড়িতে রূপগঞ্জ সয়লাব, হুমকিতে জামদানি পল্লী

আতাউর রহমান, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
 | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০১৭, ১৭:২৭

‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে আছি এখন পর্যন্ত কোন শাড়ি বিক্রি করতে পারিনি।’ দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে জানালেন জামদানি শাড়ি হাউজের শিউলি।

এ ঈদকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া জামদানি পল্লীতে যেখানে ক্রেতার উপচেপড়া ভিড় থাকার কথা, সেখানে সকালে গড়িয়ে দুপুর হয়ে যাওয়ার পরও কোন ক্রেতার দেখা নেই। পশের দেশ ভারত থেকে নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়ি আমদানি হওয়ায় তাদের জামদানি শাড়ি কম বিক্রি হচ্ছে বলে ধারণা এখানকার ব্যবসায়ীদের।

ভাই ভাই জামদানি হাউজের মালিক রমজান হোসেন জানান, রোজার ঈদকে সামনে রেখে তাঁতীরা বাহারি রঙের জামদানি তৈরি করে রেখেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ফুলতেরছি, ছিটার তেরছি, ছিটার জাল, সুই জাল, হাটু ভাঙ্গা, তেরছি, ডালম তেরছি, পাটির জাল, পান তেরছি, গোলাপ ফুল, জুই ফুল, পোনা ফুল, শাপলা ফুল, গুটি ফুল, মদন পাইর, খান্ডা, ঢেউ, প্ল্যাইন, বেলপাতাসহ প্রায় শতাধিক নামের জামদানি। এগুলোর মধ্যে ছিটার জাল, সুই জাল ও পাট্রির জাল জামদানির মূল্য সবচেয়ে বেশি। তবে এবারের জামদানি শাড়ি বিক্রির পরিমাণ খুবই কম। এর মূল কারণ হচ্ছে জামাদানি শাড়ির তুলনায় ভারতীয় শাড়ির মূল্য অনেক কম। জামদানি শাড়ি কিনতে হলে ক্রেতাদের গুনতে হয় ১০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর এসব শাড়ি বুনতে সময় লাগে প্রায় এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে ১ মাস পর্যন্ত।

সিল্ক জামদানি হাউজের মালিক হৃদয় মিয়া, নোয়াপাড়া জামদানি শাড়ি হাউজের মালিক কবির হোসেনসহ আরো অনেকেই জানান, ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন নকশা দিয়ে পর্যাপ্ত শাড়ি তৈরি করে রাখলেও ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। এছাড়া গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণে জামদানি শাড়ি বিক্রির সংখ্যা আরো কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

নোয়াপাড়া জামদানি পল্লীর বেশির ভাগ মানুষই জামদানি তৈরি করে তাদের সংসার চালায়। এবারের ঈদে পর্যাপ্ত শাড়ি বিক্রি করতে না করতে পারলে তাদের ঈদ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে বলে জানান জামদানি ব্যবসায়ী ও তাঁতীরা।

মা জামদানি হাউজের মালিক মুমিন জানান, তিনি প্রত্যেক মাসে ৮০ হাজার টাকার জামদানি শাড়ি বিক্রি করে থাকেন। জামদানি শাড়ির পাশাপাশি তিনি ওড়না, পাঞ্জাবিসহ হরেক রকমের কাপড় বানিয়ে থাকে। প্রতিবারের মতো এবারও তিনি কারখানাতে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি তৈরি করে রেখেছে। কিন্ত পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকার কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। শাড়ি বিক্রি করতে না পারলে তাঁতীদের মজুরি দিতে পারবে না।

আল-আমিন নামে এক ক্রেতা বলেন, মায়ের জন্য জামদানি শাড়ি কিনতে এসেছি। জামদানি বাঙালির ঐতিয্যের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত। আমাদের সবার উচিত বিদেশি কাপড় বর্জন করে দেশীয় কাপড় ব্যবহার করা। জামদানি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবার এগিয়ে আসা উচিত।

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :