‘গাড়িতেই সব শেষ কইরা ফেলাইলে পরিবাররে কী দিমু’

আবদুল আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুন ২০১৭, ২১:৫৮

‘নাড়ির টানে বাড়ির পানে’ ছুটছে মানুষ বানের মতো। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে তত বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ট্রেন-লঞ্চের পাশাপাশি বাসেও রাজধানী ছাড়ছেন যাত্রীরা। রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে এসব যাত্রী যাচ্ছেন বিভিন্ন জেলায়।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে বাসের অগ্রিম টিকিট যারা সংগ্রহ করেছিলেন তাদের তুলনায় উপস্থিত টিকিট কেটে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা বেশি। এক্ষেত্রে লোকাল সাবগুলোতেও যাত্রীরা যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এবার বাসে চাপ কম। যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট সংগ্রহে তেমন সাড়া দেননি। বাসযাত্রীদের বেশির ভাগ আগে টিকিট করেননি; উপস্থিত সময়ে টিকিট করে ছুটছেন নাড়ির টানে। এছাড়া স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষদের কাছে বিলাসবহুল বাসের চেয়ে লোকাল বাসই বেশি পছন্দের। কোনোরকম বাড়িতে পৌঁছাতে পারলেই তারা খুশি।

শুক্রবার সকাল থেকে গাবতলীতে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম দেখা যায়। এদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অল্পসংখ্যক কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। কোহিনূর পরিবহন, সেঞ্চুরি ট্রাভেলসসহ বেশকিছু কাউন্টার বন্ধ দেখা যায়। এরকম একটি কাউন্টারের কর্মীর সাথে কথা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সকাল থেইকা যাত্রীর চাপ কম, দুই একজনের লাইগা ৪০ সিটের একটা গাড়ি ছাড়লে অনেক লস হয়।’

সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মেহেদি হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আজকে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম। আগে যারা অগ্রিম টিকিট নিয়েছিলেন তারাই আসছেন। তবে সিট খালি থাকলে নতুন যাত্রী এলে তাদেরও টিকেট দেয়া হয়।’

শ্যামলী, গোল্ডেন লাইন, ইগল পরিবহনসহ একাধিক পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার শুক্রবারে গাবতলীতে যাত্রীদের চাপ কম থাকার কথা জানান।

আজ দিনে যাত্রী কম থাকার কারণ জানতে চাইলে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার ইউসুফ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আগে যাত্রীদের তুলনায় গাড়ি অনেক কম আছিল। তাই বৃহস্পতিবার হইলেই ঈদের মতো যাত্রী থাকতো। কিন্তু এহন, কাউন্টার কন বা লোকাল কন, বিভিন্ন কোম্পানির দূরপাল্লার গাড়ি অনেক। লঞ্চ আছে, ট্রেন আছে, ঐগুলা দিয়া গেলেও তো কত যাত্রী কমে। তাই আমরা আজকে অগ্রিম টিকেটের যাত্রীগোই বিদায় দিচ্ছি। খুব দরকার না হলে নতুন টিকেটের গাড়ি নামাইতাসি না।’

গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে গাড়ি সময়মতো ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে যাত্রীদের থেকে তেমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে কাউন্টার গাড়িগুলোতে দেড় থেকে দুইশ টাকা করে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও কাউন্টার মাস্টাররা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত ভাড়ার বেশি নিচ্ছেন না।

ঈগল পরিবহনের টিকিট কিনেছেন মনিরুজ্জামন ও হাফেজ আমীর হামজা। মনিরুজ্জামানস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘টিকিট পেতে কোনো সমস্যা না হলেও আগে যে টিকিট ৩৫০ টাকা দিয়ে কিনসিলাম ঐটা এহন ৫০০ টাকা দিলাম।’

তবে গাবতলীতে কাউন্টার গাড়ির চেয়ে লোকাল বাসে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। রং মিস্ত্রির কাজ করেন সাইফুর রহমান। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কাউন্টার গাড়িতে মেলা টেহা রাহে। কয় টেকা আর কামাই, গাড়িতেই সব শেষ কইরা ফেলাইলে পরিবাররে কী দিমু। সময় লাগুল, কম টেকায়ই যামু।’

গার্মেন্টস কর্মী শিমুল বলেন, ‘আমাগো ইনকাম তো জানেনই। খরচ করার এতো টাকা কই আমগো। একশো টাকা বাঁচলে ঐটাই লাভ।’

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এএকে/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :