দিনেও বেতাল গয়েশ্বর: হাছান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দিনের বেলাও বেতাল থাকেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ রাতের বেলায় মাঝে মধ্যে বেতাল থাকে। কিন্তু দিনের বেলাও যে কিছু মানুষ বেতাল থাকেন তাদের মধ্যে গয়েশ্বর বাবু একজন।’

শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘তিনি (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) গত কয়েকদিন ধরে আমাদের সিনিয়র নেতাদের সম্পর্কে যা বলছেন। তাতে মনে হচ্ছে রমজানে তাঁর বেতালের মাত্রাটা বেড়েছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মওদুদ আহমেদ সম্পর্কে হাছান বলেন, ‘মওদুদ আহমেদ ডিগবাজির রাজনীতির যে সক্ষমতা দেখিয়েছেন তা কম রাজনীতিবিদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। শুধু ডিগবাজি নয় জালিয়াতির ক্ষেত্রে তিনি যা দেখিয়েছেন তা বিরল। বাড়িটি নিয়ে যে জটিলতা সেটি নিয়ে তিনি নিম্ন আদালতে হেরেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হেরেছেন। সব জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর তিনি আবার রিভিউ পিটিশন দিয়েছিলেন, সেখানেও তিনি হেরেছেন।’

হাছান মাহমুদ বলেন,‘মওদুদের জালিয়াতি কোন পর্যায়ে দেখুন বাড়িটির মালিক অষ্ট্রিয়ার নাগরিক ইঞ্জে ফ্লাটজ ১৯৮৫ সালের মার্চ মাসের ৩০ তারিখ মারা যান। আর তার পক্ষে মওদুদ আহমেদের ভাইকে আম মোক্তার নামায় লিখে দিয়েছে ১৯৮৫ সালের আগস্ট মাসের ১০ তারিখ। মহিলার মৃত্যুর ৭ মাস পরে কীভাবে তিনি অনুমতি দেন? এই কাজটি মওদুদ করেছেন।’

‘শুধু এই জালিয়াতি নয়, মহিলার ডেথ সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রেও জালিয়াতি করা হয়েছে। এই সব কিছু আদালতের বিচারে ধরা খেয়ে গেছেন বলেই উৎখাত হয়েছেন। আমরা ভেবেছিলাম এসবের পরে তার (মওদুদ) বক্তব্যে কিছুটা পরিবর্তন আসবে কিন্তু আসেনি’-বলেন হাছান।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘গতকাল তিনি(মওদুদ) একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাঙ্গুনিয়ার ঘটনায় যে সিনজি চালক মামলা করেছে সে নাকি আওয়ামী লীগের কর্মী। তাকে নাকি আমরা সিএনজি চালক বানিয়েছি। কিন্তু চালক মোহাম্মদ মুহসীন আওয়ামী লীগের নেতা কিংবা কর্মী নন।’

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির গাড়িবহরে হামলার জন্য ওই এলাকার সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদকে দায়ী করেছেন বিএনপির কোনো কোনো নেতা। এর জবাবে হাছান বলেন, সেদিন যখন ঘটনা ঘটে তখন আমি ঢাকায়। সকাল সাড়ে ১০ টার ফ্লাইটে আমি চট্টগ্রাম গিয়ে পৌঁছি সোয়া একটায়। এয়ারপোর্ট থেকে রাঙ্গুনিয়ায় যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘন্টা। রাঙ্গুনিয়ায় যেতে সাড়ে তিনটা বেজে যায়। আসলে বর্তমানে বিএনপির কাছে কোনো ইস্যু নাই। তাই তারাই এটা করেছে কি না প্রশ্ন জাগে।’

হাছান বলেন, ‘পুলিশকে তারা (বিএনপি) ইনফরম করেছিল তারা রাঙ্গামাটি যাবেন। সে অনুযায়ী পুলিশ রাঙ্গামাটি রোডে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে রাখে। আমি নিযে রাঙ্গুনিয়া থানাকে বলেছি তাদের যেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা যে রোড পরিবর্তন করেছে সেটা তারা পুলিশকে জানায়নি। রাঙ্গামাটি রোড থেকে কাপ্তাই রোডে আসতে স্বাভাবিকভাবে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। পুলিশ দ্রুত গতিতে এসে তাদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু তারা তা নেয়নি। তারা চট্টগ্রাম শহরে এসে সংবাদ সম্মেলন করে।’

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘পাহাড়ি মানুষেরা পাহাড় ধসে যখন বিপর্যস্ত হয়। তখন তাদের (বিএনপি) বলেছিলাম ঢাকায় বসে সংবাদ সম্মেলনে করে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ না করে সেখানে যান মানুষকে সহায়তা করুন। কিন্তু তারা যায়নি। তারা ঘটনা এক সপ্তাহের পরে যায়, কিন্তু কোনো প্রকার ত্রাণ না নিয়ে। অর্থাৎ গাড়িতে কোন ত্রাণ ছিল না।এখানেই রহস্য।’

‘যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা নিন্দনীয় কাজটি করেছে। আমরা এসবের নিন্দা জানাই। কিন্তু ঘটনা নিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে কি না সে রহস্য থেকেই গেল’-বলেন হাছান মাহমুদ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

ঢাকাটাইমস/২৪জুন/টিএ/ডব্লিউবি