আমার জীবনে চাহিদা বলে কিছু নেই-১

শিমূল ইউসুফ
 | প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০১৭, ০৮:৪৭

শিমূল ইউসুফ। অভিনয় জগতে অসামান্য দ্যুতি ছড়ানো এক নাম। বাংলা নাটকের প্রবাদ পুরুষ সেলিম আল দীন তাকে বলেছিলেন ‘একালের মঞ্চকুসুম’। ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়ের সঙ্গে এক দীর্ঘ আলাপচারিতায় তার বেড়ে ওঠা, স্বাধীনতার সংগ্রাম ও সমসাময়িক সাংস্কৃতিক আবহ, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পারিবারিক নানা সংকট, নিজের ও স্বামী নাসির উদ্দিন ইউসুফের কর্ম, একাত্তর থেকে এ যাবৎকালের মঞ্চ ও চলচ্চিত্রের নানা বিষয় মেলে ধরেছেন। আলাপচারিতায় ছিলেন প্রধান প্রতিবেদক হাবিবুল্লাহ ফাহাদ।

তার আগে চলুন দেখে নিই শিমূল ইউসুফ অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক এবং তার কাজের স্বীকৃতিগুলো:

‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’, ‘কসাই’, ‘চর কাঁকড়া’, ‘শকুন্তলা’, ‘ফণীমনসা’, ‘কীর্তনখোলা’, ‘কেরামতমঙ্গল’, ‘হাতহদাই’, ‘চাকা’, ‘একাত্তরের পালা’, ‘যৈবতী কন্যার মন’, ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’, ‘বনপাংশুল’, ‘প্রাচ্য’, ‘বিনোদিনী’।

টেলিভিশন নাটকের মধ্যে রয়েছে- ‘ঘরোয়া’, ‘পোস্টমাস্টার’, ‘গ্রন্থিকগণ কহে’ ও ‘নির্বাসন’। তিনি ১৬টি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা ও কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। যেগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত।

তিনি কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অসংখ্য পুরস্কারের ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের শিশুশিল্পী হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদক, লোকনাট্যদল পদক, বাচসাস পদক, মোহাম্মদ জাকারিয়া পদক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার পদক, কালচারাল রিপোর্টার্স ইউনিটি পদক ও কচিকাঁচা মেলার আজীবন সম্মাননা।

১১/১ খ, পুরানা পল্টন লাইন। বাড়িটিতে ঢোকার পথে কপালে হালকা করে ছুঁয়ে দিল কী একটা। চোখ তুলে তাকাতেই কচি বাঁশপাতা বাতাসে দুলে যেন বলল, ‘স্বাগতম’।

কলাপসিবল গেটটি খুলে দিয়ে এক তরুণ বললেন, ‘ভেতরে আসুন।’

বললাম, ‘তিনি বাসায় আছেন?’

‘হ্যাঁ, এদিকটা দিয়ে ওপরে চলে যান।’

সিঁড়ি বেয়ে চাইলেও দ্রুত উঠে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেয়ালে দেয়ালে লটকে থাকা পেইন্টিং, বাড়ির মানুষগুলোর বাঁধানো ছবিতে বারবার চোখ আটকে যাচ্ছিল। দেখতে দেখতে উঠে এলাম তেতলার ঘরটায়। দক্ষিণে একটা বড় জানালা। তার পাশে রাখা বেতের সোফার ছায়া পড়েছে কাচের টি-টেবিলটায়। মেরুন কভারে ঢাকা গদিতে বসতেই বিস্ময় ছড়ালো চোখে। পুরো ঘরটাই যেন একটা ছোটখাটো গ্যালারি! উত্তরের দেয়ালে ঝোলানো বৃত্তটার কাছাকাছি না গেলে বোঝা যায় না এর নিখুঁত কারুকাজ। পিতলের গড়া অ্যান্টিকটিতে ফুল, লতাপাতার নকশাগুলো অসামান্য শিল্পের কথা বলছে।

পুবের দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা বিরাট পোর্ট্রেটটা যার, আমরা এসেছি তার কাছে। অপরূপ নয়নে তাকিয়ে আছেন। মুখে স্ফীত হাসি। চকিত চোখে দেখে নিলাম আশপাশের বাকি পেইন্টিংগুলো। কালো মোটা ফ্রেমের চশমা পরা মানুষটি শান্ত চোখে তাকিয়ে আছেন। শহীদ আলতাফ মাহমুদ। যার দূরদর্শী চোখে দানা বেঁধেছিল স্বাধীন বাংলার সোনালি ভোর। সত্যিই ভোর এসেছিল। তিনি দেখে যেতে পারেননি। যারা ভোর এনেছিলেন তিনি তাদেরই একজন হয়ে রয়ে গেলেন অজানা ভুবনে।

কাজী নজরুল ইসলাম বাঁকা চোখে কিছু একটা দেখছেন। হয়তো মেঝের স্বচ্ছতায় আঁটকে গেছে কবির চোখ। নাট্যকার সেলিম আল দীনের রাজসিক মুখাবয়ব কাচের ফ্রেম থেকে উঁকি দিচ্ছে। তার চারপাশের সাদা ক্যানভাস ভরে গেছে বেদনার অটোগ্রাফে। পুবের দেয়ালে হেলান দিয়ে থাকা লম্বাটে মুখোশের মানব-মানবী ডেবে বলল, ‘এদিকটায় এসো। দেখে যাও পিতলের গৌতম বুদ্ধ, শ্বেতপাথরের ক্ষেপা ষাঁড়, আবক্ষ খুদে ভাস্কর্য, কাচের ঝিনুুকে মুক্তো, ডানা মেলা হাঁস, কাঠের হাতি আরও কত কী।’ বাঁশের তৈরি মেঝে ছোঁয়া গদিগুলো অপেক্ষায় মুখোমুখি বসার। তার সামনেই বিছানো শীতল পাটি পা ফেললে একটা হিম আবেশ ভেতরটা ছুঁয়ে দেয় না চাইতেই। পশ্চিমে টেবিল-ল্যাম্পটার পাশে হাঁ করা ব্যাঙটির পাশে চুপটি বসে আছে মাটির লক্ষ্মীপেঁচা।

‘তোমরা এসে গেছো?’ পেছনে তাকিয়ে দেখি দাঁড়িয়ে তিনি। যার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। শিমূল ইউসুফ। অভিনয় জগতে অসামান্য দ্যুতি ছড়ানো এক নাম। নাম যখন বিশেষণ হয়ে যায় তখন শুরুতে কী-বা বলার থাকে! তবে বাংলা নাটকের প্রবাদ পুরুষ সেলিম আল দীন তাকে বলেছিলেন, ‘একালের মঞ্চকুসুম’। বটে।

জবাব দিলাম, ‘জি।’

‘বসো।’

‘ধন্যবাদ।’

বেশ গোছানো সাজ পোশাক। দুহাতে দুটো দুটো চারটি রক্তরাঙা চুরির মাঝ থেকে ফুটে আছে রুপোর বালা। হাত নেড়ে কথা বললে টুং টাং শব্দ মৃদু ছন্দ তোলে। বললেন, ‘কী জানতে চাও বলো। শুরু করি।’ ‘শুরু দিয়েই শুরু হোক’

আমার জন্ম ১৯৫৭ সালের ২১ মার্চ। ঢাকায়। থাকতাম কমলাপুর। যেখানে রেলস্টেশন হয়েছে ওখানে আমাদের বাসা ছিল। তারপর তো সরকার জমি অধিগ্রহণ করল। আমরা সেখানে থেকে চলে এলাম। বাবার কথা মনে আছে?

বাবার স্মৃতি খুব ঝাপসা। কারণ বাবা মারা গেছেন ১৯৬১ সালে। আমার তখন চার বছর। বড় ভাই-বোন আছে। সবাই আমার বড়। আমি বাসায় সবার ছোট। ও হ্যাঁ, আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। মা-ই আমাদের ছোটবেলা থেকে গাইড করেছে। বাবা খুব উদারপন্থী ছিলেন। আপনার বাবা গান করতেন শুনেছি...

গান করতেন না সেভাবে। গান খুব পছন্দ করতেন। তিনি গাইতেন নিজের জন্য। তিনি সকালবেলা নামাজ পড়ে সেইভাবে মোনাজাত করতেন না। তিনি গাইতেন, ‘নির্মল কর, মঙ্গল কর’ অথবা ‘আমার মাথা নত করে দাও তোমার চরণ তলে। ওই আসন তলে মাটির ও পরে...।’ এই গানগুলো উনি করতেন। ঘুমের মধ্যে তার গানের কিছু কণ্ঠস্বর ভাসে। তিনি ওইভাবে গান-বাজনা করেননি কখনো।

আর মা, তিনি কেমন ছিলেন?

আমার মায়ের খুব ভালো কণ্ঠস্বর ছিল। আমি শুনেছি তিনি সুর করে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। খুব ভালো লাগতো শুনতে। বাবাও খুব শুদ্ধ করে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। তো সেইভাবে মা ও বাবা দুজনের ভেতরে সুর ছিল। আর আমাদের সব ভাই-বোনের মধ্যেই মনে হয় সুরটা রক্তের সঙ্গে মিশে আছে। অনেকটা বংশগত।

তার মানে আপনারা সবাই গাইতেন?

হ্যাঁ, সব ভাই-বোনই গান করতাম। সবাই কোনো না কোনোভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। মা সব সময় বলতেন যদি তুমি সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় না হও, তাহলে তুমি বুঝতেই পারবে না পৃথিবীটা কত সুন্দর! যে কারণে বাবা মারা যাওয়ার পরে মা ও বড় ভাইয়েরা ঠিক সেভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তারা নিজেরাও এসবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

১৯৬১ সালে আপনার বাবা যখন মারা গেলেন তখনকার কথা কি মনে আছে? আপনারা কোথায় থাকতেন তখন?

আমরা কমলাপুরের বাড়িতেই ছিলাম। আমার খুব একটা মনে নেই। বাবার কোলে ঘুমাচ্ছিলাম সন্ধ্যায়। আমাদের পরিবারের একটা ভালো অভ্যাস ছিল। সবাই একসঙ্গে খেতাম। পরে শুনলাম, বাবা রাতের খাবার খাওয়ার সময় স্ট্রোক করেছিলেন। সেখানেই মারা গেছেন। আমার যখন চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙে, তখন মধ্যরাত প্রায়। তখন তো ওইভাবে বুঝিনি। ছোট ছিলাম। বাবা শুয়ে আছেন। আর পাড়া-প্রতিবেশী বাসায়। আমি আবার ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। সকালবেলা উঠে দেখি বাবাকে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। এটুকুই মনে আছে। খাটিয়ায় করে বাবাকে কবরের কাছে নামানো হলো।

আপনার বাবা পেশায় কী ছিলেন?

বাবা ব্যবসা করতেন। আমাদের একটা ওষুধের ফার্মেসি ছিল। সেটা চালাতেন। পরের দিকে বাবা সব ছেড়ে দেন। তিনি সুফিবাদে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন তত দিনে। আধ্যাত্মিক ভাবধারায় চলে গিয়েছিলেন। কট্টর কখনো ছিলেন না। তিনি নিজের মতো করে ধর্মকর্ম করতেন।

আপনি বলছিলেন, বাবার সুরেলা কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত এবং আপনাদের সাংস্কৃতিক পরিম-লের কথা। এ দুটোর মধ্যে সমন্বয় কেমন ছিল?

তখনকার পরিবারগুলো এমনই ছিল। আমি কমলাপুরের কথা বেশি করে বলতে পারি। সেখানে আমরা যেভাবে বেড়ে উঠেছিলাম। সেখানে কিন্তু প্রতিটা পরিবারের কেউ না কেউ গান করতেন, নাচ করতেন। মানে সবাই সাংস্কৃতিক পরিবেশের সঙ্গে একেবারেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল। কাজেই ওই পরিবেশে কেউ বেড়ে উঠলে তারা কিছু না কিছু করবেই। আমার তখনকার দিনে যারা বন্ধু ছিলেন তারা প্রত্যেকেই কমবেশি সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ছিল। কাজেই আমরাও যে একেবারে হঠাৎ করে একটা পরিবার শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি, তা নয়। পরিবেশটাই তাই ছিল। তখন আমাদের মাঝে সব থেকে ইন্টারেস্টিং ছিল, তখন তো আমরা হিন্দু-মুসলমান চিনতাম না। সেভাবে তখনও বুঝিওনি। মানুষ হিসেবেই বুঝেছি। আর মা সব সময় বলতেন জীবনে বড় মানুষ হও। অনেক কিছু হতে হবে না। মানুষ হবে। মানুষের মতো মানুষ হবে। সেটাই সব সময় মাথায় থাকত। ওই হিন্দু-মুসলমান বুঝতাম না। আমাদের বাসায় ঈদ হচ্ছে, সবাই এসে খাচ্ছে। আবার কারো বাসায় পুজো হচ্ছে, সেখানে আমরা সবাই গিয়ে আনন্দ করছি। এটাই সংস্কৃতি ছিল। সংস্কৃতির দিক থেকে খুব উন্নত ছিল কমলাপুর এলাকাটা। বিশেষ করে কমলাপুরের ঠাকুরপাড়া।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আপনার শুরুটা কেমন ছিল?

‘কচিকাঁচার মেলা’ দিয়ে আমার শুরু। বেগম সুফিয়া কামালের সঙ্গে সেই মেলার ক্যাম্পে যাওয়া। মায়ের কোনো বোন ছিল না। খালাকেই (সুফিয়া কামাল) তিনি বোন জানতেন। খালাও মাকে বোন জানতেন। খালার বুকেই মানুষ বলা যায়। খুব ছোট ছিলাম তো। বুকে করে নিয়ে শুয়ে থাকতেন। ঘুমাতেন। গোসল করিয়ে দিতেন, খাইয়ে দিতেন। সবই খালা করতেন।

বুলু আপা (সুলতানা কামাল), টুলু আপা (সাঈদা কামাল), আমার বড় তিন ভাই-বোনও কচিকাঁচার মেলা করত। আমরা সবাই একসঙ্গে যেতাম। ওইখানে বড় বড় মানুষদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। সেই জয়নুল আবেদিন স্যার থেকে শুরু করে একদম শাহাদত চৌধুরী সবাই তখন কচিকাঁচার মেলা করতেন। রফিকুজ্জামান দাদাভাই, নাসির দাদু, নূরজাহান বেগমÑতাদের সঙ্গে ওঠাবসা। কবি জসীমউদ্্দীন, পটুয়া কামরুল হাসান- কতজনের নাম বলব? নাম বলে শেষ করা যাবে না। এত বড় বড় মানুষের সঙ্গে পরিচয়। তাদের সঙ্গে ওঠাবসা।

বলতে গেলে কালের সেরাদের সঙ্গে আপনার শৈশব থেকেই চেনা-পরিচয়...

হ্যাঁ, আমার অতীত খুব সমৃদ্ধ। তার পরে তো ১৯৬৩ সালে শহীদ আলতাফ মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। আমাদের পুরো পরিবারে একটা সাংস্কৃতিক পরিবেশ ছিল। খুব সুন্দর একটা পরিবেশ। আলতাফ ভাই আমাদের বাসায় আসতেন। আমরা কচিকাঁচার মেলার জন্য একবার বরিশালে গিয়েছিলাম, সেখানে আলতাফ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। তিনি গান গাইলেন। আমাদের পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হলো। আমার বড় বোনের সঙ্গে বিয়ে হলো। তিনি তখন গান শেখানো শুরু করলেন।

শহীদ আলতাফ মাহমুদ সম্পর্কে আরও কিছু শুনতে চাচ্ছিলাম। প্রথম যেদিন আপনাদের বাড়িতে গেলেন। ওই দিনের কোনো ঘটনা। ৬৩ সালে ভাইয়াকে আমাদের বাড়িতে প্রথম নিয়ে আসেন চুন্নু মামা। ফুলহাতা শার্ট কালো প্যান্ট পরা ভাইয়ার সঙ্গে মাকে পরিচয় করিয়ে দেন চুন্নু মামা এভাবে ‘ইনি আলতাফ মাহমুদ খুব ভালো গান করেন। তানহা ছবির সংগীত পরিচালক।’ আমার মা ভীষণ খুশি; কারণ গান গাইতে পারেন আলতাফ মাহমুদ। অতিথি আপ্যায়নের পরই মা তাকে একটি গান শোনাতে বলেন। ভাই লীনু বিল্লাহ ভালো তবলা বাজাত।

হারমোনিয়াম নিয়ে বসলেন ভাইয়া। লীনু তবলা নিয়ে আর আমরা সবাই শ্রোতা। ভাইয়া গাইলেন তার নিজেরই রচিত ও সুরারোপিত একটি গান ‘পদ্মাবতী নিত্য যেত জল ভরতে ঘাটে’। তারপর একের পর এক গান। কখনো নজরুল কখনো রবীন্দ্রসংগীত কখনো ডিএল রায়। প্রথম দিনই গান গেয়ে আমার মায়ের মন জয় করে নিয়ে ছিলেন ভাইয়া। কিন্তু তারও আগে তিনি যে আমার বড় বোনের মন জয় করে ফেলেছেন, তা বাসার কেউ জানত না।

তারপর বিয়েটা কীভাবে হলো?

ভাইয়ার সঙ্গে পিয়ামণির (ঝিনু আপার) বয়সের বিস্তর ব্যবধান ছিল। তাই নিয়ে মা ও বড় ভাইদের একটু আপত্তি ছিল বিয়েতে। সুফিয়া কামাল খালা ঘটক হয়ে মাকে সম্মত করান এ বিয়েতে। আমার মনে হয় ওই সময় আমাদের পরিবারে যে সাংস্কৃতিক পরিম-ল ছিল ভাইয়া তাকেও ভালোবেসেছিলেন। ভালোবেসেছিলেন আমার মায়ের ভালোবাসাকে।

১৯৬৬ সালের ১৬ অক্টোবর পিয়ামণি (ঝিনু আপা) আর ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গেল। নতুন বউ নিয়ে উঠলেন আবদুল লতিফ ভাইয়ের বাসায়। তখন সংগীত পরিচালনার জন্য ভাইয়াকে প্রায়ই রাতের শিফটে কাজ করতে হতো। পিয়া (ঝিনু আপা) রাতে একা থাকতে ভয় পেত। সে কারণে ঠিক করা হলো মোটামুটিভাবে সবাই থাকা যায় এ রকম বাসা ভাড়া নেওয়া হবে। যাতে সবাই একসঙ্গে থাকতে পারি। যেমন কথা তেমনি কাজ। হুলস্থুল করে ভাইয়া বাসা ভাড়া করে ফেলল। সেই থেকে শুরু, খুব কাছে থেকে ঘরের আলতাফ মাহমুদকে দেখা ও জানা। (চলবে)

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :