ঈদের ছুটিতে পার্কে-ময়দানে

আসাদুজ্জামান
 | প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০১৭, ১২:৪৪

কোলাহলময় শহর টাকা ঈদের ছুটিতে থাকবে অনেকটাই ফাঁকা। ঈদের ছুটিতে তাই শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে ভিন্নভাবে। বিশেষ করে খোলা হাওয়া আর সবুজ বৃক্ষের পত্রমিতালি সহজেই পারবেন নগরের পার্কে-ময়দানে। ঈদের ছুটিতে বন্ধু-বান্ধব আর আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে। চাইলে এসব পার্কে ঈদের ছুটিতে স্বল্প পরিসরে পিকনিকেরও আয়োজন করতে পারেন।

বোটানিক্যাল গার্ডেন

হাজারো প্রজাতির গাছ আর সবুজের মিতালি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকার মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। ঈদের দিন থেকেই খোলা থাকবে উদ্যানটি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারেন।

উদ্যানে প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা। ছোটদের ২ টাকা। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৩ টাকা।

রমনা পার্ক

ঘন ঘাস, লতাগুল্ম, ছোট ও মাঝারি গাছ, মৌসুমি ফুলে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী পার্ক রমনা। এখানে অতি দুর্লভ প্রজাতির বৃক্ষ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে অচেনা পাখির কলকাকলিতে প্রশান্তি খুঁজে পাওয়ার সুযোগ। এই পার্কে ঈদের ছুটিতে চুটিয়ে আড্ডা দিতে পারেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

রমনা পার্ক লাগোয়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। তাই এখানেও সবুজের দেখা মেলে। এটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এখানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এখানে এখন তৈরি করা হয়েছে পাতাল মুক্তিযু্দ্ধ জাদুঘর, শিখা অর্নিবান, গ্লাস টাওয়ার। এছাড়াও এই পার্কে গেলে দেখা মিলবে মিনি গলফ কোর্সের। এখানে বর্ষার ফুল হিজল, তমাল কিংবা জারুলেরও দেখা পাওয়া যাবে।

ওসমানী উদ্যান

রাজধানীর আরেকটি ঐতিহাসিক উদ্যান এটি। প্রায় ২৩.৩৭ একর জুড়ে বিস্তৃত ময়দানটি।

ঢাকার গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (নগর ভবন) বিপরীত পাশে এবং সচিবালয়ের পেছনে এটি অবস্থিত। উদ্যানটির সাথেই রয়েছে গোলাপ শাহ মসজিদ, এর পাশেই রয়েছে গোলাপ শাহ এর মাজার, রমনা ভবন, জিপিও, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর প্রধান অফিস এবং ঢাকা ষ্টেডিয়াম।

প্রাতঃভ্রমণকারীদের তথা দর্শনার্থীদের জন্য এটি খোলা থাকে প্রতিদিন। সকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে এটি।

বলধা গার্ডেন

ঢাকার ওয়ারী এলাকায় এই উদ্যানে রয়েছে প্রচুর দুর্লভ গাছপালা। সাবেক ঢাকা জেলা, বর্তমান গাজীপুর জেলার বলধার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী ১৯০৯ সালে এই উদ্যানটি চালু করেন। তিনি দুটি উদ্যান তৈরি করেন। প্রথম উদ্যানটির নাম রাখেন সাইকি। পরবর্তীতে তৈরি হয় দ্বিতীয় উদ্যান সিবলী।

জমিদার নারায়ণ চন্দ্র চৌধুরী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নানা রকম ফুলগাছ ও অন্যান্য উদ্ভিদ এনে রোপণ করেছেন নিজের তৈরি এ গার্ডেনে। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত এই উদ্যান খোলা থাকে। বলধা গার্ডেনের টিকিট বর্তমানে জনপ্রতি ৩০ টাকা।

এ গার্ডেনের ‘সাইকি’অংশে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। এর প্রধান আকর্ষণ হলো লাল, নীল, সাদা, হলুদ জাতের শাপলায় ভরা অনেকগুলো শাপলা হাউস, বিরল প্রজাতির দেশি-বিদেশি ক্যাকটাস, অর্কিড এনয়োরিয়াম, বিচিত্র বকুল, আমাজান লিলি ও কৃত্রিম সুরঙ্গসহ একটি ছায়াতরু ঘর।

আর সিবলি অংশের প্রধান আকর্ষণ শংখনদ পুকুর ক্যামেলিয়া, স্বর্ণ অশোক, আফ্রিকান টিউলিপ। আরো আছে সূর্যঘড়ি জয় হাউস। এক সময় এখানে শুধু গোলাপই ছিল ২০০ জাতের। ক্যাকটাসের একটি আলাদা সংগ্রহ ছিল। গোলাপ বা ক্যাকটাসের সংগ্রহ এখন আর আগের মত নেই। তবে অল্প সংখ্যক সংগ্রহ এখনো আছে। এছাড়া আছে কৃষ্ণবট, ক্যামেলিয়া, আমাজান, লিলি প্রভৃতি। দুর্লভ উদ্ভিদ বলতে ব্রনস ফেসসিয়া রয়েছে।

এটা দেখতে হলে গার্ডেনের গেট দিয়ে ঢুকে একটু সামনে গিয়ে ডান দিকে যেতে হবে। দুর্লভ উদ্ভিদের পাশাপাশি কিছু দেশীয় উদ্ভিদ যেমন কামরাঙা, বিচিত্র রাবার, টগর, হরিতকি, বহেড়া, ডেউয়া, বুদ নারিকেল, বোতলপাম, মিষ্টি তেঁতুল, জামরুল, সফেদা, খেজুর, সুপারি রয়েছে।

হাতিরঝিল

যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তিকর নাগরিক জীবন থেকে স্বস্তি মেলে হাতিরঝিলে গেলে। রাজধানীবাসীর কাছে হাতিরঝিল হয়ে উঠেছে মনোরম এক বিনোদন কেন্দ্র। দিনে কিংবা রাতে যে কেউই ঘুরে আসতে পারেন হাতিরঝিলে। রাতে গেলে দেখতে পাবেন আলোর ধারা। সঙ্গে ফোয়ারা। আর দিনে পাবেন সুবজ শ্যামলিমার দেখা।

ধানমন্ডি লেক

নিখাদ বিনোদন পেতে ঘুরে আসতে পারেন ধানমন্ডি লেক থেকে। সবুজ গাছগাছালি, টলটলে সবুজ পানি আর গোটাকয়েক সেতু, সময়টা কাটবে ফুরফুরে। প্রতিদিনই বিনোদনের এই স্থানটি খোলা থাকে।

আয়তনের দিক থেকে লেকটি বিশালাকৃতির হওয়ায় এবং নির্দিষ্ট কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে। এটি বিভিন্ন নামানুসারে বিভক্ত হয়েছে।

চন্দ্রিমা উদ্যান

সংসদ ভবনের সৌন্দর্য আর সবুজের গল্প। দুইয়ে মিলেমিশে আছে চন্দ্রিমা উদ্যানে। এখানে আছে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধি। একে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে সমাধি কমপ্লেক্স। এখানে আছে স্বচ্ছ পানির লেক আর তাকে আলিঙ্গন করা সবুজ বৃক্ষরাজি। আছে কারুকাজ খচিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ও লেকের ওপর বাঁকা চাঁদ আকৃতির সুন্দর ব্রিজ।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :