সিনেমার রাজনীতি নিয়ে অনিমেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ জুন ২০১৭, ১৯:১২ | প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০১৭, ১৮:৫৩

বেশ অনেকদিন ধরেই যৌথ প্রজোযনার ছবি নিয়ে বাংলাদেশের সিনে পাড়ায় চলছে অস্থিরতা। চলচ্চিত্র পাড়ার ১৪টি সংগঠন ঐক্যজোট গঠন করে বস টু ও নবাব ছবির মুক্তি ঠেকাতে মাঠে নামে- নীতিমালা মানা হয়নি অভিযোগে। এর ধারাবাহিকতায় শাকিব খানকে এবং জাজ মাল্টি মিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজকে আজীবনের জন্য এফডিসিতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে ঐক্যজোট। ঘোষণা না দিলেও তাদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে যাচ্ছেন যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করা আরেফিন শুভ, মাহিয়া মাহী, বিদ্যা সিনহা মিমসহ একঝাঁক তারকা। এমন বেশ কয়েকজনকে নিষিদ্ধ করেই মূলত বিতর্কিত হয়ে পড়ে তারা। যদিও ঐক্যজোটের দাবি, সিনেমার উন্নতির জন্যই তাদের এ আন্দোলন। কিন্তু তা হতে পারতো যৌথ আলোচনার মাধ্যমে। তা না হয়ে হচ্ছে ভয়ভীতি দেখিয়ে।

এরপর থেকেই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে চলছে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য। নির্বাচনের দিন শাকিবের ওপর হামলাও সেই অস্থিরতারই অংশ। কথা ছিল ভালো ছবি দিয়ে অন্য ছবির জবাব দিব আমরা। কিন্তু তা না হয়ে হচ্ছে পেছন থেকে টানাটানি। এছাড়াও জাজ মাল্টিমিডিয়াও তাদের যৌথ প্রযোজনার ছবিতে কোনো নিয়মনীতি মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। মূলত এসব নিয়েও ক্ষেপে উঠেছে বর্তমান চলচ্চিত্রের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবার।

এ নিয়ে তারা সেন্সরবোর্ডের সামনে আন্দোলন করে। এছাড়া হল মালিক সমিতির সভাপতি ও মধুমিতা সিনেমা হল মালিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে বর্তমানে তুমুল অস্থিরতার মুখে রয়েছে বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। বিভিন্ন সিনেমার পরিচালকরা বাইরে থেকে দৃষ্টি দিয়ে রেখেছেন এসবের ওপর, দেখছেন ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান হালহকিকত।

সেসসব নিয়েই এবার মুখ খুললেন দেশের আরেক প্রথিতযশা নির্মাতা অনিমেষ আইচ। বর্তমান অস্থিরতা নিয়ে তিনি তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। দুয়েকদিন আগে আরেক নির্মাতা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকীও এক স্ট্যাটাসে এসবের নিন্দা করেছিলেন। সম্প্রতি মুক্তি পাচ্ছে অনিমেষের নতুন চলচ্চিত্র ভয়ংকর সুন্দর। নিচে তার স্ট্যাটাসটি হুবহু দেয়া হলো।

সিনেমার রাজনীতি অথবা রাজনৈতিক সিনেমা”

দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ যাবত দেখে যাচ্ছি সিনেমার রাজনৈতিক সমীকরণ, বোঝার চেষ্টা করছি অথবা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছি। মন্তব্য করা থেকে কেনো বিরত সে বিষয়ে সামান্য ব্যখ্যা করা প্রয়োজন। আমি এবং আমার মতো অনেকেই (সম্ভবত) চুপ করে আছেন, কেননা কিছু বললেই হয়তো আপনারা বলবেন চলচ্চিত্র বিষয়ে বলবার তুই কে? তোরা তো দুইটা একটা সিনেমা বানাইছোস। তোরা মিডিয়ার (যাহারা ছোট পর্দার জন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন) লোক, পুরস্কারের জন্য সিনেমা বানাস।

আপনাদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই শেষ কয়েক বছরের মধ্যে সর্বাধিক ব্যবসা সফল সিনেমার পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরি এবং গিয়াস উদ্দিন সেলিম কিন্তু এই নাটক-ফাটকেরই লোক, এবং এটা কিন্তু তাদের প্রথম সিনেমা।

আবার সেই সংগে প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, মোরশেদুল ইসলাম, মোস্তফা সারওয়ার ফারুকীর (আরো অনেকেই) ডানায় ভর করেই কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমা বিশ্ব সিনেমার জগতে অস্পষ্ট ছায়া ফেলবার চেষ্টা করে চলেছেন অনবরত।

কোন প্রকার ভেদ নিয়ে গর্ব করার হীন চেষ্টায় আমি কোনক্রমেই লিপ্ত হতে চাই না, আমি সামান্য একজন চলচ্চিত্র কর্মী; আমি চাই বাংলা সিনেমার উন্নয়ন হোক।

নিষিদ্ধ করে নয়। ভালোবেসে বুকে টেনে; ভুল থাকলে ধরিয়ে দিয়ে একযোগে সবাই মিলে কাজ করি চলেন।

সিনেমা শিল্পীর কাজ নতুন ভাবনার সিনেমা নির্মান, রাজনীতি নয়।

(কমার্শিয়াল কিংবা আর্ট হাউস সিনেমা বলে কিছু নাই, সব সিনেমাই সিনেমা; শুধুমাত্র দৃষ্টি ভংগী বিষয়ক বিহবলতা) -- অনিমেষ আইচ, ধানমন্ডি , ঢাকা।”

ঢাকাটাইমস/২৫জুন/এমইউ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :