ভয় উপেক্ষা করে শোলাকিয়ার জামাতে লাখো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুন ২০১৭, ১৩:৪২ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০১৭, ১০:২২

এক বছর আগে জঙ্গি হামলা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্বিঘ্নে। ভয় উপেক্ষা করে অংশ নিয়েছে লাখো মানুষ। তারা এসেছেন দূর দূরান্ত থেকে। দল বেঁধে ময়দানে হাজির হয়ে তারা সকল ধরনের উগ্রবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। ইসলামে শান্তি ও সাম্যের দর্শন যে এখনো অটুট সেটি প্রমাণ করেছে জনগণ।

সোমবার কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে বিশাল ঈদগাহ ময়দানে সকাল ১০টায় শুরু হয় জামাত। ইমামতি করেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

ভোর থেকেই কিশোরগঞ্জ শহর ও আশেপাশের গ্রাম ও উপজেলা থেকে হাজারো মানুষের স্রোত ছিল শোলাকিয়ামুখি। দুটি বিশেষ ট্রেনে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে আসে হাজারো জনগণ। দূরের জেলা থেকে মুসল্লিরা নামাজে অংশ নিতে আসেন কয়েক দিন আগেই।

রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।

নামাজ শেষে মোনাজাতে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষায় মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়। একইসঙ্গে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-কল্যাণ কামনা করা হয়।

নিরাপত্তায় কড়াকড়ি

এক বছর আগের জঙ্গি হামলার কারণে এবার শোলাকিয়ায় ময়দানকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছুটি বাতিল করা হয়েছে জেলার সব পুলিশ সদস্যের।

ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য মোট ২১টি ফটকের মধ্যে ছয়টি প্রবেশপথ উন্মুক্ত রাখা হয়। এসব প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঢোকেন। তিন দফা মেটাল ডিটেক্টরে সবার দেহ তল্লাশি করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু জায়নামাজ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহর এবং আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারি। বিজিবি, র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, আরআরএফসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দেড় হাজারেরও বেশি সদস্য দিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে।

গত বছরের ৭ জুলাই শোলাকিয়ার জামাতের প্রবেশপথ আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের এলাকায় পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হঠাৎ হামলা হয়। দুই জঙ্গিরা গ্রেনেড ছুঁড়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আনসারুল ও জহিরুল নামে দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। এ সময় পুলিশের পাল্টা গুলিতে প্রাণ হারান হামলাকারী আবির রহমান।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পিস্তলসহ পুলিশের হাতে আটক হন আরেক জঙ্গি শফিউল ইসলাম। চিকিৎসা শেষে তাকে কিশোরগঞ্জে আনার পথে ময়মনসিংহের নান্দাইলে জঙ্গিরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে গোলাগুলিতে শফিউল ইসলাম ও তার সহযোগীর মৃত্যুর কথা জানিয়েছে পুলিশ।

জঙ্গি-পুলিশ গোলাগুলির সময় নিজ ঘরে গুলিবিদ্ধ হযে মারা যান গৃহবধু ঝরনা রাণী ভৌমিক। তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে এখনও রয়ে গেছে শোকের রেশ।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :