ধর্ষণচেষ্টার শাস্তি কান ধরে উঠবস!

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
| আপডেট : ০২ জুলাই ২০১৭, ২২:৪০ | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০১৭, ২০:৫৫

ধর্ষণের চেষ্টার দায়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এক যুবককে পাঁচবার কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসহাক এই রায় দিয়েছেন। আর এই লঘু দণ্ডপ্রাপ্ত যুবক খোদ উপজেলা চেয়ারম্যানের দুঃসম্পর্কের নাতি বলে জানা গেছে।

২২ জুন বিকালে গোদাগাড়ী পৌরসভার শিবসাগর মহল্লায় এই ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় মহিষালবাড়ি বাজার সংলগ্ন নওশাদ আলীর বাড়ির উঠোনে গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। পরে সালিশি বৈঠকের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসহাক এ রায় দেন। ওই সালিশে পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুসহ আরও অনেকেই ছিলেন।

স্থানীয়রা জানায়, ২২ জুন বিকালে শিবসাগর মহল্লার মো. বাবলুর ছেলে রায়হান হোসেন ওরফে নবাব প্রতিবেশী এক স্বামী পরিত্যক্তার বাড়িতে ঢুকে তাকে (১৯) ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ওই সময় ওই যুবতি বাড়ি থেকে পালিয়ে বাইরে গিয়ে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত যুবক পালিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানায়, এ ঘটনায় থানায় মামলা করার উদ্যোগ নেন ওই যুবতির বাবা। কিন্তু নবাবের পক্ষ নিয়ে রনি নামে এলাকার এক মাদকবিক্রেতা ওই যুবতির মায়ের গলাকেটে নেয়ার হুমকি দেয়। এতে পরিবারটি আর থানায় যাওয়ার সাহস পায়নি। বাধ্য হয়ে তারা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেন।

পরে গত ২৫ জুন রাতে এলাকার রফিক মাস্টারের বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। এ সময় গোদাগাড়ী পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বেলাল হোসেনসহ এলাকাবাসী অভিযুক্ত নবাবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নবাবের সহযোগী রনি ও তার লোকজন বৈঠক ভূণ্ডল করে দেয়।

পরে এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় আবার সালিশি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে ওই যুবতি হাজির হয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনার বিবরণ দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরাও এ ঘটনার সাক্ষী দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান নবাবকে ২০ বার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন। এ সময় ওই যুবক কান ধরে উঠবস শুরু করে। এরপর পাঁচবার কান ধরে উঠবস হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

ওই যুবতির পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবক সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যানের নাতি। তাই তাকে এমন লঘু দণ্ড দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে তারা হতাশ। বিচারে কোনো শাস্তি না হওয়ায় নবাবের পরিবারের লোকজন এখন তামাশা করছেন বলেও অভিযোগ তাদের।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসহাক বলেন, ‘ঘটনাটি ধর্ষণের চেষ্টার মতো কিছু না।’ তাহলে কেন পাঁচবার কান ধরে উঠবস করানো হলো, জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন অফিসে আছি। কথা বলতে পারব না।’ এরপরই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিপজুর আলম মুন্সি বলেন, ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি তাকে কেউ জানায়নি। সালিশ ডাকা হয়েছে, তাও জানানো হয়নি। অথচ এসব ঘটনা গ্রাম্য সালিশে বিচার করার ক্ষমতা কারও নেই। ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় গিয়ে মামলা করলেই তা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২জুলাই/আরআর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার, বিপুল কনটেন্ট জব্দ

এফডিসিতে সাংবাদিকদের উপর হামলা: ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি

স্ত্রীসহ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ডিবিতে যা বলেছেন কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান

শেরপুরের ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

খেলনার প্যাকেটে আমেরিকা থেকে এসেছে কোটি টাকার গাঁজার চকলেট-কেক

সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৮

সনদ জালিয়াতি: কারিগরি বোর্ডের ওএসডি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে ডিবি

বুথ ভেঙে নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা, বেরিয়ে এল রহস্য

জাল সার্টিফিকেট: প্রয়োজনে কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ডিবি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :