দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি, দুর্ভোগ

এম.মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী থেকে
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০১৭, ২৩:৫০
ছবি: এম.মনিরুজ্জামান

ঈদের ছুটি শেষ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে এবার কর্মস্থলে ফেরার পালা। আর তাইতো ভিড় জমেছে ঢাকামুখী বিভিন্ন পরিবহন স্টেশন ও নৌঘাট গুলোতে।

ব্যতিক্রম নয় দেশের অন্যতম ব্যস্ত নৌ ঘাট দৌলতদিয়া। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা তিনদিন ধরে কর্মস্থল ফেরত মানুষের প্রচণ্ড চাপ সইছে এ ঘাট। রবিবার বিকেল পর্যন্ত যানবাহনের সারি মহাসড়কের অন্তত ৫ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার থেকে বাস, ট্রেন বোঝাই করে মানুষ নদী পার হতে ছুটে আসে দৌলতদিয়া ঘাটে। কোথাও যেন তিল ধারণের এতটুকু জায়গা খালি নেই। নদীপার হতে সবাই ছুটছেন লঞ্চ ও ফেরিঘাটের দিকে। এতে করে টানা তৃতীয় দিনের মত কর্মমুখো মানুষ বয়ে আনা বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ শত শত বিভিন্ন গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাটে এসে নদীপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বাড়তে থাকে গাড়ির চাপ। রবিবার বিলেক নাগাদ ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকায় গাড়ির দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়।

এসময় বিভিন্ন পরিবহন থেকে বাসযাত্রীদের মহাসড়কের ওপরে নামিয়ে দেয়ায় যাত্রীরা দীর্ঘ পথ পয়ে হেঁটে লঞ্চঘাটে পৌঁছান। এর সাথে বৃষ্টি ও ভ্যপসা গরমে যাত্রীদের নাভীশ্বাস উঠেছে।

এছাড়াও সিরিয়ালে আটকে থাকা বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীরা তাদের গাড়ি থেকে নেমেই নির্দিষ্ট যানবাহন হারিয়ে ফেলে চরম বিরম্বনার শিকার হচ্ছেন। বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও শ্রমিকরা জানান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়ালে আটকে থাকায় এসময় বিভিন্ন পরিবহন বাসের সাধারণ যাত্রীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহান নারী ও শিশু যাত্রীরা।

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা লালন পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষামান সুপারভাইজার আমানুল্লা জানান, তাদের কোম্পানির শনিবারের নাইট কোচগুলো রবিবার দুপুর নাগাদ ফেরির নাগাল পেয়েছে। এ সকল পরিবহনের যাত্রীরা সারা রাত মহাসড়কে থেকে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। তবে তিনি অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ট্রাফিক ব্যবস্থা ভালো বলে জানান।

কিন্তু বিআইডব্লিউটিসি ঘাটে ১৮টি ফেরি নিয়োজিত থাকার কথা বললেও কার্যত মাত্র ১২টি ফেরি চলাচল করছে। বাকি ফেরিগুলো ফুল লোড নিতে পারে না। তাও চলার পথে প্রায়ই ইঞ্জিন বিকল হয়ে ঘাটেই বসে থাকে। কখনও মাঝ নদীতেই বিকল হয়ে পড়ছে। এতে ফেরি সংকটের কারণে পারাপারে এ বিরম্বনা হচ্ছে।

এদিকে এ রুটে ২৫টি ছোট-বড় লঞ্চ সর্বক্ষণ যাত্রী পারাপার করছে। তবে বৃষ্টির সময় লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ থাকছে। ফলে লঞ্চেও ভিড় প্রচুর। লঞ্চের ভিড় এড়াতে অনেকে ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল পদ্মা-যমুনা পাড়ি দিচ্ছেন।

ঘাটসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিবছর ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন পারাপার হয়। ঈদের পর গত শুক্রবার দুপুর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরফেরা মানুষের বয়ে আনা গাড়ির চাপ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এ ঘাটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক মো. সফিকুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি বহরে ১৮টি ফেরি সার্বক্ষনিক চলাচল করছে। সিরিয়ালে আটকে থাকা যানবাহনগুলো দ্রুত নদী পারের জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আরো ১/২দিন যানবাহনের এই চাপ থাকবে। সোমবার দুপুর নাগাদ দৌলতদিয়া পরিস্থিতি স্বাভানিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :