চাল সংগ্রহে লক্ষ্যপূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা

খাইরুল ইসলাম বাসিদ, পাবনা
 | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০১৭, ০৮:২৩

সরকার ধান-চালের যে দর নির্ধারণ করেছে, বাজারদর এবার তার চেয়ে বেশি। এ কারণে চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এ কারণে চলতি বছর সরকারিভাবে ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে সরকার। এর লক্ষ্য দুটি। এক. কৃষককে ন্যায্য দাম দেয়া, দুই, আপৎকালীন সময়ের জন্য মজুদ।

চলতি বছর বাজার থেকে ১৫ লাখ টন ধান ও চাল কেনার লক্ষ্য ঠিক করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চাল কেনার কথা রয়েছে আট লাখ টন। এবার প্রতি কেজি চাল ৩৪ টাকা এবং ধান ২৪ টাকা দরে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মে মাসের ২ তারিখ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই খাদ্য সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বেশ কিছু জেলায় এখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চাল সংগ্রহ করা যায়নি।

পাবনায় এ বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৮১২ টন। অথচ এখন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২০ টন। সরকারের কাছে চাল বিক্রিতে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না মিল মালিকরা। তারা বলছেন, বাজারের দামের সাথে সরকারের দামের সঙ্গতি নেই। তবে সরকার ভর্তুকি দেবে এমন আশায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন কেউ কেউ।

উত্তরের জেলা পাবনায় চালকল মালিক রয়েছেন নয়শোর বেশি। এর মধ্যে সরকারের কাছে চাল বিক্রির জন্য চুক্তি করেছেন মাত্র ৯২ জন।

মিল মালিক ইদ্দস আলী বলেন, ‘সরকার চালের যে দাম নির্ধারণ করেছেন এটা ঠিক হয়নি। কারণ সরকার ধানের মূল্য দিয়েছে ২৪ টাকা চাউলের মূল্য দিয়েছেন ৩৪ টাকা।’ তিনি বলেন, ‘ধানের দাম ২৪ টাকা হলে চালের দাম হতে হবে কমপক্ষে ৩৬ টাকা। কিন্তু বাজারে দাম আরও বেশি।’

মিল মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজারে ধান এবার ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে বেচাকেনা হচ্ছে। এতে করে কেজি প্রতি চাল করতে ব্যায় হবে ৪২ টাকা। ফলে সরকারি মূল্যে চুক্তি করলে ব্যাপক ক্ষতি হবে। চুক্তির বাইরে থাকা মিলারদের দাবি, যারা চুক্তি করেছেন তাদের আগেই চাল মজুত রয়েছে সেই কারণেই কিছু মিল মালিক চাল দিচ্ছেন। তবে তারা জানান, চুক্তি করার ফলে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

পাবনা জেলা খাদ্য খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের স্বীকার করে বলেন, ‘বাজারদর বেশি হওয়ায় বেশিরভাগ মিলার চুক্তি করেননি। তবে এখনো প্রায় দুই মাস সময় থাকায় মিল মালিকরা চুক্তি করলে চাল সংগ্রহের পরিমাণ বাড়বে।’

এটা কেবল পাবনার চিত্র নয়, দেশের প্রায় সব কটি জেলাতেই ধান চাল সংগ্রহ অভিযানের এই চিত্র বলে জানিয়েছেন ঢাকাটাইমসের প্রতিনিধিরা। আর নির্ধারিত সময়ে সরকার নির্ধারিত দামে চাল সংগ্রহ করা যাবে বলেও মনে করছেন না খাদ্য কর্মকর্তারা।

বিষয়টি জানে খাদ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল সংগ্রহ করতে না পারলেও সমস্যা হবে না। কারণ সরকার নিজেই চার লাখ টন চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর পাশাপাশি শুল্ক কমানোয় ব্যবসায়ীরাও চাল আমদানি করছেন। এতে দাম কমে আসলে চালকল মালিকরা সরকারকে চাল দেবে।

ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :