বগুড়ায় পানিবন্দি আড়াই হাজার পরিবার, মেলেনি ত্রাণ
উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর, কামালপুর ও কর্ণিবাড়ি ইউনিয়নের আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় দুই উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোর লোকালায়ে পানি প্রবেশ করছে। ঘরে পানি প্রবেশের কারণে দুর্গত পরিবারগুলো বাঁধের উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে দুর্গত এলাকায় সরকারি ভাবে কোথাও ত্রাণ সামগ্রী এখন পর্যন্ত বিতরণ হয়নি। বানভাসি মানুষ তাদের দুর্ভোগের কথা জানান।
কথা হয় কুতুবপুরের আমীর আলীর সাথে। তিনি জানান, প্রতিবছর বন্যার সময় তাদের বাড়ি ভাঙতে হয়। ঘরের আসবাবপত্র, টিনের চাল এসব টানাটানি করে জীবন শেষ হয়ে গেল।
উঁচু বাঁধ এসব বন্যার্তদের একমাত্র আশ্রয়স্থল হওয়ার কারণে বর্তমানে সেখানেও ঘর তোলার জায়গা নেই। অসহ মানুষগুলো এখন ঠাসাঠাসি করে তাঁবুর নিচে আশ্রয় নিয়ে আছে।
এদিকে লোকালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করার কারণে বিশুদ্ধ পানি, খাবার এবং তীব্র জ্বালনি সংকটে পড়েছে বন্যার্তরা। ইতোমধ্যেই বগুড়া জেলা প্রশাসক নূরে আলম সিদ্দিকী বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আগামী সপ্তাহের শুরুতে দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কথা তিনি জানান।
সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রনি জানান, বন্যার পানির অনেক পাট ক্ষেত, আউশ ধান, বর্ষালী ধানের বীজতলায় প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যহত আছে। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার গোপাল চন্দ্র জানান, জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেনি। ক্লাস স্বাভাবিক ভাবে চলছে। তবে সারিয়াকান্দি উপজেলার আওচারপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি প্রবেশ করলেও পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে চলছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দির ইএনও মনিরুজ্জামান জানান, পানি বিপদসীমার পাঁচ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে সারিয়াকান্দির কুতুবপুর ও কামালপুরের বাঁধের পূর্বাংশে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও কর্ণিবাড়ি ও বোহাইলের কিছু অংশে পানি প্রবেশ করায় এতে প্রায় ২৫শ পরিবারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসক নূরে আলম সিদ্দিকী ঢাকাটাইমসকে বলেন, যেকোনো দূর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের সক্ষমতা রয়েছে। এ উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। চিন্তার কারণ নেই। আমাদের সবার প্রচেষ্টায় এবারের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হবে। এজন্য আমরা জন্য সবসময় প্রস্তত আছি।
(ঢাকাটাইমস/০৭জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)