জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও তিন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলার মোট ১০ ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। অনেক এলকায় গত তিনদিনেও ত্রাণ যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদ সীমার ৩৩ সিন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
পানি বাড়ার সাথে সাথে ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলার অন্তত ৮টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের অনেক রাস্তা। থৈ থৈ পানিতে গৃহপালিত গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ।
গত কয়েক দিনের বন্যায় ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া, চিনাডুলী, বেলগাছা, পাথর্শী ও কুলকান্দি এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ি ও চিকাজানী, মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ও মাদারগহ্জ উপজেলার বালিজুরী ও জোড়খালী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ট্রায় ৪০ গ্রামের বিস্তৃর্ণ এলাকার প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট।
বন্যার পানি প্রবেশ করায় ইসলামপুর উপজেলার ২০টি, দেওয়ানগঞ্জে ১টি, মেলান্দহে ১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মুখলেছুর রহমান জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আরও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনার শাখা নদী মেলান্দহের সাদিপাটিতে মাদারদহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের ভাঙনে অন্তত ১০টি পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তবে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, মাদারদহ ছাড়া যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদে এখন পর্যন্ত কোনো ভাঙ্গ দেখা দেয়নি।
গত তিনদিন যাবৎ ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জে বন্যা শুরু হলেও সরকারিভাবে বানভাসি মানুষের মাঝে এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ ও ইউপি চেয়ারম্যানরা।
তবে জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপলোর বন্যাত্তোদের ২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জামালপুরের সংরক্ষিত আসনে এমপি মাহজাবিন খালেদ বেবী ইসলামপুরে বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেন এবং ব্যক্তিগত ভাবে বন্যার্তদের মাঝে নগদ টাকা বিতরণ করেন।
(ঢাকাটাইমস/০৮জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)