‘পশ্চিমবঙ্গকে আরেকটা গুজরাট বানান’
পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট, বাদুরিয়া এলাকায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার আগুন নিভিয়ে যখন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই আগুনে ঘি ঢালার চেষ্টা করছেন তেলেঙ্গানা রাজ্যের এক বিধায়ক। তিনি পশ্চিমবঙ্গকে আরেকটি ‘গুজরাট’ বানানোর জন্য উসকানি দিয়েছেন।
টুইটারে দেয়া একটি ভিডিও ক্লিপে হায়দ্রবাদের বিজেপি বিধায়ক রাজা সিং বলেছেন, ‘বাংলায় (পশ্চিমবঙ্গ) হিন্দুরা আজ একেবারেই নিরাপদ নন। সাম্প্রদায়িক হিংসায় যারা জড়িয়ে রয়েছেন, তাদের উচিত শিক্ষা দেয়া উচিত বাংলার হিন্দুদের। ২০০২ সালে গুজরাটে হিন্দুরা যে শিক্ষাটা দিয়েছিলেন। না হলে খুব শিগগিরই পশ্চিমবঙ্গ আর একটা বাংলাদেশ হয়ে যাবে।’
এই কাজে বাংলার হিন্দুদের সাহায্য করতে ‘বেঙ্গল টাইগার্স’-এর নাম উল্লেখ করেই থেমে থাকেননি হায়দ্রবাদের বিজেপি বিধায়ক। সেইসঙ্গে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটিকে তার ‘মূল্যবান পরামর্শ’ও দিয়েছেন।
হায়দ্রবাদের বিজেপি বিধায়কের পরামর্শ, ‘ঘুম ভেঙে জেগে উঠুক বেঙ্গল টাইগার্স। বাঁচার লড়াইয়ে নামার জন্য হিন্দুদের সংগঠিত করুক।’
রাজা সিং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি। বরং যারা সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদেরই সাহায্য করছে, করে চলেছে।
রাজা সিং বলেন, ‘রাজ্য সরকার(পশ্চিমবঙ্গ) ওদের (সাম্প্রদায়িকদের) সাহায্য করছে। যারা ধর্মনিরপেক্ষ তাদের কাছে আমার আবেদন, আপনারা যদি বাংলার হিন্দুদের নিরাপদে রাখতে চান, তারা সুরক্ষিত থাকুন, এটা দেখতে চান, তা হলে আপনারা আরও সচেতন হয়ে উঠুন। আপনারা যদি বাংলায় হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে না পারেন, তা হলে আজ কাশ্মিরে যা হচ্ছে, হিন্দুদের একই দশা হবে পশ্চিমবঙ্গেও। কাশ্মিরি পণ্ডিতদের মতোই বাংলার হিন্দুরাও এক দিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন।’
গতকাল শনিবার রাজ্যের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করে তোলার সরকারি প্রয়াসও চলছে। ওই ঘটনার রাশ টেনে ধরার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অসহযোগিতা’রও অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উসকানিমূলক মন্তব্যের ব্যাপারে হায়দ্রবাদের বিজেপি বিধায়ক রাজা সিং-এর ‘রেকর্ড’ বেশ ভালো! গত এপ্রিলেই রাজা বলেছিলেন, ‘রাম মন্দির নির্মাণে যারা বাধা দেবেন, তাদের মাথা কেটে দেয়া হবে।’
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
(ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/এসআই)