টিভির খবরে ‘জঙ্গি’ সোহেলকে শনাক্ত করেন মা

খাইরুল ইসলাম বাসিদ, কুষ্টিয়া থেকে ফিরে
 | প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০১৭, ১৭:৪২

গুলশান হামলার গ্রেনেড সরবরাহকারী হিসেবে চিহ্নিত জেএমবির ভারত শাখার প্রধান ও উত্তরাঞ্চলীয় জেএমবি কমান্ডার কুষ্টিয়ার চর সাদিপুর কাবলিপাড়া গ্রামের হাসানই নব্য জেএমবি নেতা সোহেল মাহফুজ। স্বজনদের দাবি, ২০০৫ সালের পর তিনি মাত্র একবার বাড়ি আসেন ২০০৭ সালে। তার আরেক ভাই হাফিজুল ওরফে সাকিবও জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত অভিযোগে কারাগারে রয়েছেন। টেলিভিশনে খবর দেখেই মনোয়ারা বেগম জানতে পারেন, গ্রেপ্তার জঙ্গি নেতা সোহেল মাহফুজই তাদের নিখোঁজ সন্তান হাসান।

জেএমবি নেতা সোহেল মাহফুজের মা মনোয়ারা বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, দশ ভাইবোনের মধ্যে বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান মাহফুজ। পাবনা জেলা স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন তিনি। এর পরপরই তার আচার-আচরণে অসঙ্গতি দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। মাঝে-মধ্যে থাকতেন নিখোঁজ। খোঁজ নিতে আসতো পুলিশ।

২০০৫ সাল থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেন এই জঙ্গি নেতা। সবশেষ ২০০৭ সালে বাড়ি আসেন তিনি। এসময় তার কাটা হাত নিয়ে, স্বজনের প্রশ্নের জবাবে জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় কাটা গেছে।

জানা গেছে, দুটি বিয়ে করেন মাহফুজ। একটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে, অন্যটি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে। ভারতে পালিয়ে থাকার সময় দুই স্ত্রীই তার সঙ্গে ছিলেন। তার আরেক ভাই হাফিজুল ওরফে সাকিবও জেএমবি তৎপরতায় জড়িত অভিযোগে আটক আছেন কারাগারে।

সোহেল মাহফুজের বয়স প্রায় ৩৫। তিনি নসরুল্লাহ, শাহাদাত, রিমন ও হাতকাটা সেহেলে নামে জেএমবি সদস্যদের কাছে পরিচিত।

জেএমবি নেতা সোহেল মাহফুজের বোন রহিমা খাতুন বলেন, তার ভাই কাবলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করে পাবনা জেলা স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর স্কুলে যাননি। এরপর বাড়িতেই থাকতেন।

রহিমা আরও জানান, প্রায়ই সোহেল বাড়িতে থাকতেন না। বাড়ি এলে পুলিশ তাকে খুঁজত। গত প্রায় সাত থেকে আট বছর ধরে আর পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানান তিনি।

প্রতিবেশীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সোহেলের কোনো খোঁজ নেই। হঠাৎ টেলিভিশনে তার গ্রেপ্তারের খবর দেখে তারা জানতে পারেন সোহেল মাহফুজ জেএমবি নেতা। এতে তারা হতবাক। তবে গ্রামবাসী বলেন, এমন জঙ্গি যে তাদের গ্রামে জন্ম হয়েছে এতে তারা লজ্জিত।

প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের পুষ্কনী এলাকার একটি আমবাগানের টংঘরে বৈঠকে বসেছে নব্য জেএমবির সদস্যরা; এমন খবরে শুক্রবার গভীর রাতে অভিযানে যায় পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় উত্তরাঞ্চলীয় জেএমবি কমান্ডার, সংগঠনে জয় নামে পরিচিত সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজসহ চার জেএমবি নেতাকে।

গুলশান হামলার গ্রেনেড সরবরাহকারী হিসেবে চিহ্নিত সোহেল মাহফুজ জেএমবির ভারত শাখার প্রধান ছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। বর্ধমানের খাগড়াগড় মামলায় অভিযুক্ত তিনি। তাকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে ভারতের পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রেপ্তারের পর শনিবার দুপুরে তাকে আনা হয় ঢাকায়। এর পরপরই, ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান।

(ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :